জয়তু ফ্রান্স!
আমার অতি ভক্ত ভাগ্নে খবর দিলো বিশ্বকাপের আবহে আর সব দলের সমর্থনে ফোরামে প্রাণের জোয়ার বইলেও ফ্রান্স সমর্থনের ভাগে চলছে চরম ভাটা। জাগতিক মোটামুটি আর সব বিষয়ে ভাগ্নে আমাকে পীরের মত মান্য করলেও, ফ্রান্স সমর্থনের প্রশ্নে আমার দরবারে ওই মুরিদের কোন আনাগোনা নেই। তাই আমার হয়ে ফ্রান্সের পক্ষে ফোরামে কিছু হম্বিতম্বি করার উপদেশ বৃথা হবে ভেবে নিজেই নিজের ঢোল কাঁধে তুলে নিলাম।
নির্বাচনে দাঁড়াবার জন্যে জামানতের টাকাও হাতে নেই এমন এক চালচুলোহীন প্রার্থী একবার আমার দুয়ারে সাহায্যের জন্য এলে জানতে চেয়েছিলাম, জামানতের টাকা জমা দেয়ার সামর্থ্য যার নেই, সে আবার বাকি সব নির্বাচনী অভিযানের খরচ চালাবে কিভাবে। উত্তরে জেনেছিলাম একবার জামানতের টাকা জমা দিয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে যেতে পারলেই নাকি বাকি টাকা জোগান দেয়ার লোকের অভাব হয়না। শুধু কোন রকমে পথে ঘাটে হাত পেতে জামানতের পর্ব পার হতে পারলেই শুরু হয়ে যায় আসল টাকার খেলা। ফ্রান্স দলের অবস্থাও কিন্তু ওই চালচুলোহীন প্রার্থীর মতো। একবার জামানত বাঁচিয়ে বাছাইপর্ব আর প্রথম পর্ব পেরোতে পারলেই খেল খতম- এক টানে সেমিফাইনাল। জিদান-যুগের অবসানের পর বিশ্বকাপে জামানত মার যাওয়ার আশঙ্কা অবশ্য অতি প্রবল। তবে হাতে হাত রেখে বাছাই-পর্ব পেরিয়ে আসা যখন গেছে, এখন কোন রকমে জামানত বাঁচিয়ে প্রথম পর্ব পার করে দেয়ার ব্যাপারেও ইনশাল্লাহ আমি আশাবাদী। তারপরেই পাশা খেলা শুরু রে শ্যাম!
দেশব্যাপী বহু জায়গায় সময়ে-অসময়ে বহুবার পাবলিক টয়লেট ব্যবহারের সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে আমি লক্ষ্য করেছি দিনের আর বাকি সব সময়ই ব্যাপক জনসমারোহ থাকলেও দুপুরের শেষভাগে এসে পাবলিক টয়লেট প্রাঙ্গনে বিরাজ করে এক সুনসান শোকাবহ নিরবতা। সে কারনে দেশে পাবলিক টয়লেটে সময় কাটানোর ক্ষেত্রে দুপুরের শেষভাগই আমার সবচেয়ে ফেভারিট! এই প্রসঙ্গ টানার কারন হলো বিশ্বকাপ দেখার সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতায় আমি এও লক্ষ্য করেছি টুর্নামেন্ট থেকে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার বিদায়ের পর সারা দেশই যেন হয়ে যায় অনেকটা সেই রকম শেষ দুপুর! ছাঁদে-বারান্দায়, পাড়ায়-মহল্লায় রঙ্গিলা পতাকা, হৈ হৈ রৈ রৈ সব কিছু থমকে গিয়ে চারিদিক হয়ে পড়ে সুনসান। শোকাবহ। চুপচাপ। বিরাজ করে এক করুণ নিস্তব্ধতা। পথে ঘাটে ব্যর্থ প্রেমিকের মতো ভগ্ন হৃদয়ে ঘুরে বেড়ায় শত শত বেজার মুখ। জগত জুড়ে যেন নিঃশব্দে বেজে চলে মান্না দের ছ্যাকা খাওয়া গানের সুর। আহা! মান্না দে। আহা! কি সেই নৈঃশব্দ! সারা দেশ যেন শেষ দুপুরের পাবলিক টয়লেট।
থিয়েরি অনরি ভাইয়ের হাত এবং রিবেরীর পায়ের উপর ভরসা করে জামানত বাঁচিয়ে যদি আমারা প্রথম পর্ব কোন রকমে পেরিয়ে যাই, তবে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা সমর্থক ভাইজানেরা সব সাবধান! তৈরী হয়ে যান। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা-ইতালী-জার্মানী-স্পেন-মেস্পেন সব উড়াইয়া ফেলবো। দেশ হয়ে যাবে শেষ দুপুরের পাবলিক টয়লেট। বিক্রি বেড়ে যাবে মান্নাদে!
__________________
JONONI JONMOVUMISHCHO SWARGADOPI GORIOSI
জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী
Last edited by babubangla; June 12, 2010 at 09:41 PM..
|