SMHasan
February 27, 2011, 02:51 AM
[বাংলা]
প্রিয় সবাই,
আমি জানি যে আয়ারল্যান্ড ম্যাচ এর উত্তেজনা অনেকখানি কমে এসেছে, কিন্তু তারপর ও আমি যে কিছু না লিখে পারছিনা!লিখব লিখব ভাবছিলাম কিন্তু অনেক কারণেই লেখা হয়ে উঠেনি আমার।আয়ারল্যান্ড ম্যাচ এর আগের রাত্রে টিকেট পাবো ভেবেছিলাম (সৌজন্য টিকেট), কিন্তু হাতে পেলাম ম্যাচের ঘন্টাখানেক আগে, আর তারপর যা প্রত্যাক্ষ করলাম তা তো ইতিহাস!
এমনিতে আয়ারল্যান্ডকে হারানো খুব বড় আনন্দের উপলক্ষ হওয়ার কথা নয়, কিন্তু খাদের কিনারা থেকে উঠে এসে যেভাবে আমরা ম্যাচটা জিতেছি- সেটাই বড় পাওয়া।সম্ভাব্য মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে গেলে যেরকম আনন্দ হয়, ওই হারা ম্যাচ যেতার পর আমাদেরও সেরকম আনন্দ হচ্ছিল। ২০০ রান করার পর ওই উইকেটে ম্যাচ জেতার স্বপ্ন দেখা অসম্ভব ছিল, কিন্তু আমরা যে বাংলাদেশি! আমাদের রক্তের প্রতিটা বিন্দুতেই যে আছে সংগ্রামের এক অনন্য ইতিহাস!
খুব আশা ছিল ২৬ হাজার মানুষের সাথে এক সুরে গলা মিলিয়ে গাইব 'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি', কিন্তু পারিনি কারণ আমি মাঠে যেতে দেরি করে ফেলেছিলাম, তারপরও আমরা বাইরে থেকেই সুর মিলিয়ে গাইছিলাম......
হোম অফ ক্রিকেট-এ আমরা প্রথমে ভাল করলেও ব্যাটিং মড়ক থেকে রেহাই পাইনি সেদিনও, আর যার ফল হলো আমাদের ২০৫ রানের মামুলি সংগ্রহ। যখন ব্যাটিং এ বিপর্যয় চলছিল তখন যে কি কষ্ট লাগছিল তা বলে বোঝানো যাবেনা ভাই! মনে হচ্ছিল এত দিনের এত স্বপ্ন, আশা, আকাংক্ষা- সব মনে হয় মিথ্যে হতে চলেছে! অবশেষে আয়ারল্যান্ডের কাছে আবারো মাথা নত করতে হচ্ছে।
নাহ...সেরকম কোনো কিছু হয়নি। আয়ারল্যান্ডের কয়েকটি উইকেট পতনের পরেই ২৫ হাজার দর্শক জেগে উঠেছিল, অবশ্য তারা গর্জন করছিল পুরো ম্যাচজুড়েই। ওইদিন যে কি অবিশ্বাস্য রকমের গর্জন করছিলাম আমরা তা বোঝানো যাবেনা। আমি অনেক খেলা দেখেছি, দর্শকদের জাগিয়ে তোলার জন্য অনেক কিছু করেছি অনেক দিন, পুরো স্ট্যান্ড নেতৃত্ব দেয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু শুক্রবারের সাথে কোনো কিছুর তুলনা হয়না। ওইদিন আয়ারল্যান্ডের ষষ্ঠ উইকেট পড়ার পর থেকে যেভাবে আমরা সবাই মিলে 'উইকেট' 'উইকেট' বলে কোরাস তুলছিলাম, সেরকম কোরাস আমাদের দেশে আর হয়েছে কি না তাতে সুন্দেহ আছে। ভেবে দেখুন যখন ২৬ হাজার দর্শক একসাথে 'উইকেট' 'উইকেট' বলছিল তখন কি উজ্জীবিত-ই না হচ্ছিল আমাদের ছেলেরা, কি অদ্ভূত পরিবেশই না ছিল সেখানে! শেষ দিকে আমরা 'জিতব জিতব' বলে কোরাস দিচ্ছিলাম আর আসলেই আমরা জিতে গিয়েছিলাম।আমার মনে হয় আমরা দর্শকরাই আমদের দেশকে জিতিয়ে দিয়েছি সেদিন। যখন মনে হচ্ছিল যে আমরা হেরে যাচ্ছি তখন ই আমরা নিজেদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই কোরাস দিচ্ছিলাম 'জিতব' 'জিতব' বলে। মৃত্যুপথযাত্রী অসহায় মানুষ যখন চেঁচিয়ে উঠে 'না' বলে, আমদের কোরাসগুলো কিন্তু অনেকটা সেরকম ছিল। অনেকটা রাজনৈতিক মিছিলের মত!একেবারে হাত উচিয়ে...মুষ্টিবদ্ধ করে সমস্বরে বলছিলাম 'জিতব জিতব' - মনের অজান্তেই, যদিও মনে হচ্ছিল আমরা হেরে যাচ্ছি!
আসলে আমাদের বুকপাঁজরে অনেক বিষবাষ্প জমা হয়েছিল এই দলের কাছে পূর্বে পরাজয়ের কারণে, আর সেদিনের জয়ের ফলে এখন আমরা আমরা অনেকটা নির্ভার, আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছি। বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা কিন্তু জয়ের পরে আমি আমার বুকে হাত দিয়ে বলেছিলাম- 'Relieved'.
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাকিব তো বলেই ফেললেন এরকম সমর্থন এর আগে বাংলাদেশ দল কখন-ই পায়নি। এবার যেন পুরো বাংলাদেশ দলের পেছনে আছে। ম্যাচ শেষে দর্শক সমর্থনের জবাব দিতে সাকিবসহ কয়েকজন তো ল্যাপ অফ অনার দিলেন।এরকম আবেগময় সময় খুব কম ই এসেছে আমাদের ক্রিকেটে।
আমার দায়িত্ব আমি পালন করার চেষ্টা করছি, তাই আসুন আমরা সবাই মিলে নিজের দেশের পতাকা ওড়াই, নিজের দলকে সমর্থন দেই।
জানিনা কি হবে এই বিশ্বকাপে, কিন্তু আমার কেন জানি মনে হচ্ছে বিশেষ কোনো একটা কিছু ঘটবে এবার। আমি কিন্তু গৌরবের গন্ধ পাচ্ছি!আপনারা কি পাচ্ছেন?
ইতি,
হাসান
পুনশ্চঃ আমার গলা বসে গেছে, অফিসে এসেছি কিন্তু কোনো কথা বলতে পারছিনা! আগামী ম্যাচ এর টিকেট পেলেও দেখা হবে বলে মনে হচ্ছেনা।
[/বাংলা]
Download the audio clip of the Roar form here (http://www.enterupload.com/8q110vgp3zai/Roar_at_SBNS.wav.html) . Maximize your volume and listen to the clip, you will be amazed!
প্রিয় সবাই,
আমি জানি যে আয়ারল্যান্ড ম্যাচ এর উত্তেজনা অনেকখানি কমে এসেছে, কিন্তু তারপর ও আমি যে কিছু না লিখে পারছিনা!লিখব লিখব ভাবছিলাম কিন্তু অনেক কারণেই লেখা হয়ে উঠেনি আমার।আয়ারল্যান্ড ম্যাচ এর আগের রাত্রে টিকেট পাবো ভেবেছিলাম (সৌজন্য টিকেট), কিন্তু হাতে পেলাম ম্যাচের ঘন্টাখানেক আগে, আর তারপর যা প্রত্যাক্ষ করলাম তা তো ইতিহাস!
এমনিতে আয়ারল্যান্ডকে হারানো খুব বড় আনন্দের উপলক্ষ হওয়ার কথা নয়, কিন্তু খাদের কিনারা থেকে উঠে এসে যেভাবে আমরা ম্যাচটা জিতেছি- সেটাই বড় পাওয়া।সম্ভাব্য মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে গেলে যেরকম আনন্দ হয়, ওই হারা ম্যাচ যেতার পর আমাদেরও সেরকম আনন্দ হচ্ছিল। ২০০ রান করার পর ওই উইকেটে ম্যাচ জেতার স্বপ্ন দেখা অসম্ভব ছিল, কিন্তু আমরা যে বাংলাদেশি! আমাদের রক্তের প্রতিটা বিন্দুতেই যে আছে সংগ্রামের এক অনন্য ইতিহাস!
খুব আশা ছিল ২৬ হাজার মানুষের সাথে এক সুরে গলা মিলিয়ে গাইব 'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি', কিন্তু পারিনি কারণ আমি মাঠে যেতে দেরি করে ফেলেছিলাম, তারপরও আমরা বাইরে থেকেই সুর মিলিয়ে গাইছিলাম......
হোম অফ ক্রিকেট-এ আমরা প্রথমে ভাল করলেও ব্যাটিং মড়ক থেকে রেহাই পাইনি সেদিনও, আর যার ফল হলো আমাদের ২০৫ রানের মামুলি সংগ্রহ। যখন ব্যাটিং এ বিপর্যয় চলছিল তখন যে কি কষ্ট লাগছিল তা বলে বোঝানো যাবেনা ভাই! মনে হচ্ছিল এত দিনের এত স্বপ্ন, আশা, আকাংক্ষা- সব মনে হয় মিথ্যে হতে চলেছে! অবশেষে আয়ারল্যান্ডের কাছে আবারো মাথা নত করতে হচ্ছে।
নাহ...সেরকম কোনো কিছু হয়নি। আয়ারল্যান্ডের কয়েকটি উইকেট পতনের পরেই ২৫ হাজার দর্শক জেগে উঠেছিল, অবশ্য তারা গর্জন করছিল পুরো ম্যাচজুড়েই। ওইদিন যে কি অবিশ্বাস্য রকমের গর্জন করছিলাম আমরা তা বোঝানো যাবেনা। আমি অনেক খেলা দেখেছি, দর্শকদের জাগিয়ে তোলার জন্য অনেক কিছু করেছি অনেক দিন, পুরো স্ট্যান্ড নেতৃত্ব দেয়ার চেষ্টা করেছি। কিন্তু শুক্রবারের সাথে কোনো কিছুর তুলনা হয়না। ওইদিন আয়ারল্যান্ডের ষষ্ঠ উইকেট পড়ার পর থেকে যেভাবে আমরা সবাই মিলে 'উইকেট' 'উইকেট' বলে কোরাস তুলছিলাম, সেরকম কোরাস আমাদের দেশে আর হয়েছে কি না তাতে সুন্দেহ আছে। ভেবে দেখুন যখন ২৬ হাজার দর্শক একসাথে 'উইকেট' 'উইকেট' বলছিল তখন কি উজ্জীবিত-ই না হচ্ছিল আমাদের ছেলেরা, কি অদ্ভূত পরিবেশই না ছিল সেখানে! শেষ দিকে আমরা 'জিতব জিতব' বলে কোরাস দিচ্ছিলাম আর আসলেই আমরা জিতে গিয়েছিলাম।আমার মনে হয় আমরা দর্শকরাই আমদের দেশকে জিতিয়ে দিয়েছি সেদিন। যখন মনে হচ্ছিল যে আমরা হেরে যাচ্ছি তখন ই আমরা নিজেদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই কোরাস দিচ্ছিলাম 'জিতব' 'জিতব' বলে। মৃত্যুপথযাত্রী অসহায় মানুষ যখন চেঁচিয়ে উঠে 'না' বলে, আমদের কোরাসগুলো কিন্তু অনেকটা সেরকম ছিল। অনেকটা রাজনৈতিক মিছিলের মত!একেবারে হাত উচিয়ে...মুষ্টিবদ্ধ করে সমস্বরে বলছিলাম 'জিতব জিতব' - মনের অজান্তেই, যদিও মনে হচ্ছিল আমরা হেরে যাচ্ছি!
আসলে আমাদের বুকপাঁজরে অনেক বিষবাষ্প জমা হয়েছিল এই দলের কাছে পূর্বে পরাজয়ের কারণে, আর সেদিনের জয়ের ফলে এখন আমরা আমরা অনেকটা নির্ভার, আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছি। বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা কিন্তু জয়ের পরে আমি আমার বুকে হাত দিয়ে বলেছিলাম- 'Relieved'.
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাকিব তো বলেই ফেললেন এরকম সমর্থন এর আগে বাংলাদেশ দল কখন-ই পায়নি। এবার যেন পুরো বাংলাদেশ দলের পেছনে আছে। ম্যাচ শেষে দর্শক সমর্থনের জবাব দিতে সাকিবসহ কয়েকজন তো ল্যাপ অফ অনার দিলেন।এরকম আবেগময় সময় খুব কম ই এসেছে আমাদের ক্রিকেটে।
আমার দায়িত্ব আমি পালন করার চেষ্টা করছি, তাই আসুন আমরা সবাই মিলে নিজের দেশের পতাকা ওড়াই, নিজের দলকে সমর্থন দেই।
জানিনা কি হবে এই বিশ্বকাপে, কিন্তু আমার কেন জানি মনে হচ্ছে বিশেষ কোনো একটা কিছু ঘটবে এবার। আমি কিন্তু গৌরবের গন্ধ পাচ্ছি!আপনারা কি পাচ্ছেন?
ইতি,
হাসান
পুনশ্চঃ আমার গলা বসে গেছে, অফিসে এসেছি কিন্তু কোনো কথা বলতে পারছিনা! আগামী ম্যাচ এর টিকেট পেলেও দেখা হবে বলে মনে হচ্ছেনা।
[/বাংলা]
Download the audio clip of the Roar form here (http://www.enterupload.com/8q110vgp3zai/Roar_at_SBNS.wav.html) . Maximize your volume and listen to the clip, you will be amazed!