View Single Post
  #41  
Old March 5, 2012, 01:28 AM
Naimul_Hd's Avatar
Naimul_Hd Naimul_Hd is offline
Cricket Guru
 
Join Date: October 18, 2008
Location: Global City of Australia
Favorite Player: Shakib, Mashrafe
Posts: 13,524


বিপিএল খেলে অনেক কিছু শিখেছি: আনামুল

অনলাইন প্রতিবেদক | তারিখ: ০৫-০৩-২০১২





নাম তাঁর এনামুল হক। বানানবিভ্রাটের কারণেই বলুন আর দুই সিনিয়র ‘এনামুল’-এর কারণেই বলুন বিসিবির কাগজে-কলমে তাঁর নাম ‘আনামুল হক’। বিজয় নামে বেশি পরিচিত এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানই এবারের বিপিএলের বড় চমক। প্রতিযোগিতার প্রথম দিকে যখন দেশি খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের আকাল, ঠিক তখনই এই আনামুল পথ দেখান। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিপিএলে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারটি নিজের করে নেন। ফাইনালেও ইমরান নাজিরের সঙ্গে জুটি বেঁধে নিজ দল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান। বিপিএল তাঁকে স্পট লাইটের আলোয় এনে দিলেও এ দেশের ক্রিকেটে ভবিষ্যতের প্রতিভা হিসেবে আনামুল কিন্তু বেশ কিছুদিন ধরেই পরিচিত। প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে আবাহনীর হয়ে খেলেন তিনি। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ইংল্যান্ডে সফরে তিনি রেখেছিলেন প্রতিভার স্বাক্ষর। পরে ২০১০ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। প্রথম শ্রেণীর রেকর্ডটা তাঁর একেবারেই মন্দ নয়। ১৭টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে অংশ নিয়ে গড়ে ৩৭ দশমিক ৩৪ এবং তাঁর সংগ্রহ ১০৮৩ রান। আছে চারটি শতরান এবং একইসংখ্যক অর্ধশতক।

উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতেও মোটামুটি সফলই বলা যেতে পারে আনামুলকে। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ২৯টি ক্যাচ ও দুটি স্ট্যাম্পিংয়ের রেকর্ড রয়েছে তাঁর। বাংলাদেশের ভবিষ্যত্ এই তারকা প্রথম আলো অনলাইনের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় জানান, পাঁচ বছর ধরে দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে ক্রিকেট খেললেও সদ্যসমাপ্ত বিপিএল তাঁর কাছে নতুন এক অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, বিপিএল তাঁকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সম্পর্কে ব্যবহারিক ধারণা দিয়েছে।

প্রথম আলো অনলাইনের পাঠকদের জন্য সেই সাক্ষাত্কার বিবৃত করা হলো:

প্রথম আলো অনলাইন: বিপিএলের আগের আনামুল ও পরের আনামুলের মধ্যে নিশ্চয়ই কিছু পার্থক্য বুঝতে পারছেন...

আনামুল: আসলে বিপিএল খেলে আমি গর্ববোধ করছি, সেই সঙ্গে আনন্দও পেয়েছি। নতুন অনেক কিছু শিখতে পারলাম এখানে খেলে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলতে হলে, ভালো করতে হলে অ্যাটিচিউডটা কী রকম হতে হবে, মনঃসংযোগ কোন পর্যায়ে থাকতে হবে—এসব জানতে পেরেছি। মোট কথা, জাতীয় দলে খেলার আগেই সর্বোচ্চ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা হলো। আমি পাঁচ বছর ধরে দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলছি। কিন্তু বিপিএল খেলেই যা অভিজ্ঞতা হলো, তা সেই পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতার সমান। তা ছাড়া বিপিএল শেষ হওয়ার পর অনেকেই চিনতে পারছে—ব্যাপারটিত ভালো লাগার মতোই।

প্রথম আলো অনলাইন: তাহলে বিপিএলে খেলে অনেকটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা হলো আপনার...
আনামুল: ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরসে আমার সিনিয়র সতীর্থ যেমন—আশরাফুল ভাই, মাশরাফি ভাই, নাজিমউদ্দিন ভাই ও আফতাব ভাইয়েরা প্রতিযোগিতা শুরুর সময় বলেছিলেন, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মেজাজটা কেমন তা বিপিএল খেলে বুঝতে পারবি।’ এই পর্যায়ে খেলোয়াড়দের মধ্যে কোনো ধরনের পেশাদারি মনোভাব কাজ করে—সেটা বিপিএল থেকে বুঝলাম। সেই সঙ্গে বুঝেছি, এই পর্যায়ে কেবল মাঠে নেমে খেলে দিলেই চলে না, অনেক কিছু ভাবার বিষয় আছে।

প্রথম আলো অনলাইন: বিপিএলে বিদেশি তারকাদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করার অভিজ্ঞতাটা নিশ্চয়ই দারুণ...
আনামুল: আমাদের দলে পাকিস্তানের আজহার মাহমুদ ও ইমরান নাজির প্রতিযোগিতাজুড়েই ছিলেন; ছিলেন রানা নাভিদ ও কাইরন পোলার্ড। শেষ দিকে এলেন শহীদ আফ্রিদি ও সাঈদ আজমল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের বড় বড় সব নাম। তাঁদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করাটা আসলে বিরাট ব্যাপার, বিরাট অভিজ্ঞতা। আজহার মাহমুদ, পোলার্ড ও রানা নাভিদ আমাকে খুবই আদর করতেন। অনেক টিপস দিয়েছেন। আফ্রিদি ও আজমলকে বেশিদিন পাইনি। তবে অনেক কথা হয়েছে। মাঠে দোর্দণ্ড প্রতাপশালী এসব ক্রিকেটার মাঠের বাইরে যে কতটা বিনয়ী, কতটা বন্ধুবত্সল—এটা খুব কাছ থেকে জানতে পারলাম।

প্রথম আলো অনলাইন: আফ্রিদি নাকি আপনাকে বাংলাদেশের ভবিষ্যত্ তারকা বলে মন্তব্য করেছেন; কিছু শুনেছেন নাকি?
আনামুল: (হাসি) ফাইনালে অপরাজিত ৪৯ রান করে যখন প্যাভিলিয়নে ফিরলাম, তখন আফ্রিদি অনেক প্রশংসা করেছেন, পরামর্শ দিয়েছেন। বলেছেন, ‘তোমার প্রতিভা আছে, কাজে লাগাও। কঠোর পরিশ্রম করো, তুমি একদিন না একদিন ভালো করবেই।’

প্রথম আলো অনলাইন: ২০০৯ সালে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ইংল্যান্ড সফর করেছিলেন আপনি। সে সফরের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
আনামুল: দারুণ একটি অভিজ্ঞতা! ইংল্যান্ডের মাঠে খেলার অভিজ্ঞতার সঙ্গে কিছুই তুলনীয় নয়। এত বৈচিত্র্যপূর্ণ। আমাদের কোচ ছিলেন মিনহাজুল আবেদীন স্যার। আমি তখন একটু নিচের দিকে ব্যাট করতাম। তিনিই আমাকে ব্যাটিং অর্ডারে ওপরের দিকে তুলে আনেন। ইংল্যান্ড সফরে খুব একটা খারাপ করিনি। আসলে ওই সফর শেষে আমি বুঝতে পারি, সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলার যোগ্যতা আমার আছে। এখন কেবল চেষ্টা করে যেতে হবে।

প্রথম আলো অনলাইন: জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন নিশ্চয়ই দেখেন...
আনামুল: এটা কে না দেখে। ক্রিকেট খেলছিই দেশকে কিছু দেওয়ার জন্য। দেশের জার্সি গায়ে দেওয়া আমার স্বপ্ন। আমি পরিশ্রম করে যাচ্ছি। বাকিটা সর্বশক্তিমান আল্লাহর হাতে।

Reply With Quote