View Single Post
  #1  
Old May 25, 2011, 02:32 AM
nakedzero's Avatar
nakedzero nakedzero is offline
Cricket Legend
 
Join Date: February 3, 2011
Favorite Player: ShakTikMashNasir(ShakV2)
Posts: 2,024
Default ক্রীড়াঙ্গন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে আনসার

সেই ১৯৮২ সাল থেকে অর্থাত্ ২৯ বছর ধরে ক্রীড়াঙ্গনে একক আধিপত্য দেখাচ্ছে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির ছেলেমেয়ে খেলোয়াড়রা। তাদের সমতুল্য কোনো সার্ভিসেস দল নেই। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে যত খেলোয়াড়, তার সিংহভাগ তৈরি হয় এই আনসার থেকে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, অনেকদিনের জমানো ক্ষোভ, অভিমান আর আক্ষেপ সইতে না পারার যন্ত্রণা নিয়ে তারা ক্রীড়াঙ্গন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছে বলে আনসার সূত্র জানিয়েছে। এ মাসে তাদের নিয়মিত বৈঠকে নীতিগতভাবে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সত্যিই যদি আনসার সরে দাঁড়ায়, তাহলে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন মাটিতে মিশে যাবে। যদি তাই হয়, তাহলে খেলোয়াড়দের কী হবে, এর জবাবে উপ-মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. ফোরকান উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের এখানেই খেলবে, অন্য কোথাও নয়। তারা ২৯টি খেলায় অংশ নিয়ে থাকে। সারা বছরই তাদের অনুশীলন চলে। তারপরও সরকার বা ফেডারেশন কেউই তাদের খোঁজ নেয় না—এটাও তাদের ক্ষোভের অংশ। আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির আধিপত্য ঠেকাতে ‘অপকৌশল’ নিয়েছে বিভিন্ন ফেডারেশন কর্তারা। নানাভাবে সঙ্কুচিত করা হচ্ছে ‘ক্রীড়াবিদ তৈরির কারখানা’ আনসারের সাম্রাজ্য। শুধু তাই নয়, আন্তঃসার্ভিস খেলায়ও তাদের নেয়া হয় না বলে অভিযোগ করেন আনসারের কর্মকর্তারা। কারণ তারা অংশ নিলেই চ্যাম্পিয়ন হয়। বক্সিং দিয়ে ১৯৮২ সালে ক্রীড়াঙ্গনে প্রবেশ করা প্রতিষ্ঠানটিকে বঞ্চিত করার তালিকায় যোগ দিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদও (এনএসসি)। কুস্তি ও জুডো ফেডারেশনে সভাপতি থাকলেও বছর চারেক ধরে কোথাও স্থান হয়নি দেশের ক্রীড়াক্ষেত্রে অবদান রাখা ২০০৪ সালে স্বাধীনতা পদক পাওয়া সংগঠন আনসার মহাপরিচালকের। অন্য সার্ভিসেস দলের থাকলেও কার্যনির্বাহী পরিষদে নেই তাদের কোটা। এনএসসিকে দু’দফা চিঠি দিয়েও এর উত্তর পায়নি বর্তমানে ২৯টি ডিসিপ্লিনে অংশ নেয়া আনসার। ফলে অভিমানী সুর বাজছে গলফার সিদ্দিকুর রহমান, শুটার শারমিন রত্না, তীরন্দাজ ইমদাদুল হক মিলন, সাজ্জাদ হোসেন, অ্যাথলেট শামসুন্নাহার চুমকি, ফুটবলার তৃষ্ণা চাকমা, শাটলার দুলালী হালদার, তায়কোয়ানডোর শারমিন ফারজানা রুমিদের কর্মক্ষেত্রে। জানা গেছে, আনসারের সর্বশেষ মাসিক সভায় ক্রীড়াঙ্গনে হতাশা নিয়ে ব্যাপক আলোচনাও হয়েছে।
অন্য সার্ভিসেস দলগুলোতে শুধু পুরুষ অ্যাথলেট থাকলেও আনসার ও ভিডিপিতে মেয়েরাও আছে। দেশব্যাপী প্রতিভা অন্বেষণ করে খেলোয়াড় বাছাই করা হয়। ৪১৭ অ্যাথলেটের ২০৪ জন মহিলা। বেতনভুক্ত বলে সারা বছর প্রশিক্ষণে থাকেন তারা। গত বছর অনুষ্ঠিত ঢাকা এসএ গেমসে বাংলাদেশের ১৮টি স্বর্ণের একক-দলগত মিলিয়ে ১৪টির অবদান আনসারের অ্যাথলেটদের। এবছর গত ৫ মাসে হওয়া ১৫টি ডিসিপ্লিনে ১১টিতে তারা চ্যাম্পিয়ন। পরিচালক (ক্রীড়া ও সংস্কৃতি) গোলাম কিবরিয়া জানালেন, দেশের স্বার্থে ক্রীড়াবিদ তৈরি করছি। বড় কিছু প্রত্যাশা করি না; সঠিক মূল্যায়ন হোক—এটাই কামনা করি। মূল্যায়নের কথাটা এসেছে এনএসসির ৪৬টি ফেডারেশন ও অ্যাসোসিয়েশন-সংস্থায়ও আনসার মহাপরিচালকের স্থান না হওয়ায়। অতীতে মেজর জেনারেল ড. এটিএম আমিন কুস্তি এবং মেজর জেনারেল মঞ্জুর আলম ও সর্বশেষ এম আকবর আখতার জুডোর সভাপতি ছিলেন। এরপর থেকে ক্রীড়াঙ্গনের বাইরে ‘সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল’ পদধারী আনসার বাহিনী প্রধান। তাছাড়া সরকারি কর্মচারী হওয়ায় নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা থাকায় তাদের প্রতিনিধিদের ফেডারেশন, জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কার্যনির্বাহী পরিষদে কোটা প্রথায় রাখার অনুরোধ জানিয়ে গত বছর ১৬ আগস্ট এনএসসিকে চিঠি দেয় আনসার। একইদিন আরেক চিঠিতে ‘বিদেশে দল প্রেরণের ক্ষেত্রে আনসার সদস্যদের টিম ম্যানেজার, সহকারী টিম ম্যানেজার, অফিসিয়াল, টেকনিক্যাল অফিসিয়াল’ হিসেবে অন্তর্ভুক্তির অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনো উত্তর দেয়নি এনএসসি। এ ব্যাপারে এনএসসি সচিব শফিক আনোয়ার সৌদি আরবে থাকায় তার মত পাওয়া যায়নি। তবে এনএসসি চেয়ারম্যান ও ক্রীড়ামন্ত্রীর ব্যক্তিগত সেক্রেটারি সেরনিয়াবাত বলেন, চিঠি আমি না দেখলেও বিভিন্ন ফেডারেশনে আনসারের প্রতিনিধি রাখা উচিত। কারণ ক্রীড়াঙ্গনে আনসারের অবদান অনেক। তিনি বলেন, আমি বিষয়টি মন্ত্রী মহোদয়কে বলব। আরেকটি হতাশার নাম বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) সভাপতি পদ। ক্রীড়াঙ্গনে আলোচনা রয়েছে, আশির দশকে ‘অলিখিত’ সিদ্ধান্ত হয়েছিল বাংলাদেশ গেমসে টানা তিনবার চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলের প্রতিষ্ঠান প্রধান হবেন বিওএ সভাপতি। ১৯৯২, ১৯৯৬ ও ২০০২-এর বাংলাদেশ গেমসে আনসার শীর্ষে থাকলেও তা মানা হয়নি। কারণ, পরবর্তীতে পদটি যেন ‘অলিখিত’ভাবে সেনাবাহিনী প্রধানের নির্ধারিত হয়ে যায়। তাছাড়া সেনাবাহিনীরই শীর্ষ কর্মকর্তা আনসার মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পাওয়ায় প্রতিবাদের ভাষাও হারায়।
তবে এসব নিয়ে ভাবছেন না বলে জানান আনসারের উপ-মহাপরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. ফোরকান উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আনসারের পারফরমেন্সের মূল্যায়নটা তো আমরা করব না। ক্রীড়াক্ষেত্রের সবারই জানা আনসার চেষ্টা করছে দেশকে ভালো কিছু দেয়ার। আমরা সে স্বপ্ন লালন করেই চলেছি যাতে করে দেশ আরও এগিয়ে যায়। আমাদের কাজই হলো দেশের জন্য নিজেদের উজাড় করে দেয়া।

SOURCE
Reply With Quote