View Single Post
  #7585  
Old March 14, 2013, 12:31 PM
Maple1900 Maple1900 is offline
First Class Cricketer
 
Join Date: September 6, 2012
Posts: 288

Shakib's interview:

সাক্ষাতকার: দেবব্রত মুখোপাধ্যায়



হঠাৎ ফোনে পেয়ে নিউজের জন্য কিছু কথা বললাম। পাশাপাশি বাড়তি কিছু কথা হল।

সাকিব, শরীর কেমন এখন? পায়ে ব্যাথা আছে?
জ্বি, ভালো। না, এখন ব্যথা-ট্যথা সে রকম নেই। আজ সেলাই কাটিয়ে এলাম। এখন ব্যাথ্যা টের পাচ্ছি না। বেশ ভালো বলতে পারেন।

খেলায় ফিরতে পারবেন কবে?
সেটা তো নির্ভর করছে, কতো দ্রুত পুরো সুস্থ হয়ে উঠি; তার ওপর। তবে অনুশীলন শুরু করব। কাল পরশুই হয়তো অনুশীলন শুরু করবো। শুরুতে হালকা কিছু। নতুন কোনো সমস্যা না হলে দ্রুত খেলায় ফিরতে চাই।

গল টেস্ট দেখলেন? বলেন, কেমন লাগল খেলা?
টানা তো দেখতে পারিনি। মাঠের বাইরে থাকলে যা হয়; অনেক কাজ ছিল। হাসপাতালে যেতে হয়েছে। তবে সবসময় স্কোরে আপডেট ছিলাম। আর সুযোগ পেলেই খেলা দেখতে বসে গেছি। সত্যি বলি, অনেকদিন পর একেবারে খাঁটি দর্শক হয়ে গিয়েছিলাম। ক্রিকেটার হিসাবেও মনে হয় কোনো ম্যাচ এতো উপভোগ করিনি কখনো। জীবনের অন্যতম সেরা একটা অভিজ্ঞতা হলো। অসাধারণ একটা টেস্ট দেখলাম।

তাহলে দর্শক হিসেবে একটু মূল্যায়ন করেন....
আমি এক কথায় বলছি, এই টেস্টটায় যা কিছু হয়েছে, সেটা হল মেজর টিম হয়ে ওঠার সাইন সব দেখতে পাচ্ছি আমরা। আমাদের টেস্ট ইতিহাসের বিবেচনায় একেবারেই অন্যরকম একটা টেস্ট খেলেছে এবার দলটা। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের দিক থেকে তো বটেই; দলীয়ভাবেও আমরা এবার বলা যায়, প্রথমবারের মতো ঠিক যেমন উচিত, সে রকম টেস্ট ক্রিকেট খেলতে পেরেছি। একটু অন্যভাবে বলি। এই ম্যাচটা হয়েছে ব্যাটিং উইকেটে। ব্যাটিং উইকেটে এর আগে আমরা বহু ম্যাচ খেলেছি। কিন্তু ঠিক যেভাবে ব্যাট করলে উইকেটের পুরো সুবিধাটা নেওয়া যায়, সেটা আগে কখনো এতো ভালো ইমপ্লিমেন্ট করে দেখানে পারিনি আমরা। আমরা প্রায়ই বলি, ভালো উইকেটে সেট হলে বড় ইনিংস খেলতে হবে। এই বলা কথাটা করতে পারছিলাম না। সেটা এবার আশরাফুল ভাই, মুশফিক ভাই; দু জনই করে দেখিয়েছে। আমি বারবার বলছি, এটা বড় দলের কাজ।

আশরাফুল আর মুশফিক তো অসাধারণ দুটো ইনিংস খেললেন। কেমন লেগেছে দেখতে?
মুশফিক ভাই তার সেরা ফর্মে আছে মনে হয়; সে এটা ডিজার্ভ করে। সে এক দেড় শ ওভার কিপিং করেছে, আবার ক্যাপ্টেনসির চাপ আছে। এর সঙ্গে সেশনের পর সেশন যেভাবে ব্যাট করেছে, সেটা খুবই ইন্টারেস্টিং ছিল। অসম্ভব টেম্পারমেন্ট দেখিয়েছে। আশরাফুল ভাই আউট হয়ে যাওয়ার পরও সে যে শান্তভাবে ব্যাট করে গেছে; এটা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন। তেমন কেউ বলছে না; তবে নাসিরও কিন্তু ভালো একটা ইনিংস খেলেছে। ও কয়েকটা ইনিংসে সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়ে আউট হয়েছে। ফলে ওর একটা সেঞ্চুরি পাওয়া দরকার ছিল। একেবারে স্টাইলিস সেঞ্চুরি করেছে। তবে সবার চেয়ে গুরুত্বপূর্ন হল আশরাফুল ভাইয়ের ইনিংস। আমি আগেও অনেকবার বলেছি, আশরাফুল ভাই সোজা কথায় জিনিয়াস। লম্বা ইনিংস খেলার সব ধরণের যোগ্যতা তার আছে। সেটারই প্রমান দিয়েছে সে। যে সময়ে উইকেটে গেছে, তখন আরেকটা বিপর্যয়ের সম্ভাবনা ছিল। সেখান থেকে একটার পর একটা পার্টনারশিপ করে এগিয়েছে, সেশনের পর সেশন খেলেছে। খুব ইন্টারেস্টিং। কিন্তু আশরাফুল ভাইয়ের আউটটায় কষ্ট পেয়েছি। ওনার ডাবলটা হওয়া দরকার ছিলো। একটা ডাবল সেঞ্চুরি ওনার নামের পাশে মানায়।

আশরাফুল ১৮৯ রানে নটআউট থেকে রাতে ঘুমাতে গেল। আপনার টেনশন হচ্ছিল? বা মুশফিককে নিয়ে টেনশন হয়েছে?
খুব একটা না। আমি টেনশন কখনোই খুব করি না। আশায় ছিলাম। কিন্তু টেনশন করিনি।

গলে না থাকাটা মিস করেছেন? ওখানে ব্যাটিং করা বা ড্রেসিংরুমের মজা...
আপনারা তো জানেন, আমি এরকম মিস খুব একটা করি না। মানে, বাইরে থাকলে বাইরেই থাকি। তবে এবার একটু মিস করেছি। বেশ মিস করেছি বলতে পারেন। দল এরকম খেলছে; মনে হয়েছে, ওখানে থাকতে পারলে ভালো হত।

বোলিংয়ে যখন কেউ তেমন কিছু করতে পারছিল না; তখন মনে হয়নি, আমি থাকলে একটু অন্যরকম হত?
নাহ। এটা মনে হয়নি। আমার মনে হয়েছে, ওরা ভালো বল করেছে। চেষ্টা করেছে। উইকেটে কিছু না থাকলে তো কিছু করা কঠিন।

এই টেস্ট নিয়ে যতো আলোচনা হচ্ছে, আপনার নাম আসছে। বলা হচ্ছে, আপনাকে আর তামিমকে ছাড়াই বাংলাদেশ এরকম খেলে ফেললো! সবাই অবাক হচ্ছে। আপনার এখানে পর্যবেক্ষনটা কী?
দেখুন, এটাই হল এই টেস্টের সবচেয়ে বড় অ্যাচিভমেন্ট। এই ঘটনা প্রমান করল, আমরা অনেকদিন ধরে যে শক্তিশালী বেঞ্চের বা রিসোর্সের প্রয়োজনীয়তার কথা বলছি; সেটা যে শক্তিশালী হয়েছে, তা এবার আমরা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। একটা দলকে আপনি কী দেখে বড় দল বলবেন? শুধু রেজাল্ট দেখে এটা হয় না। অনেক বৈশিষ্ট থাকতে হয়। তার একটা হল এই যে কোনো খেলোয়াড়কে রিপ্লেস করার ক্ষমতা। আপনি দেখবেন বড় দলগুলোতে একজন তারকা ইনজুরিতে বাইরে গেল, তার বদলে একটা ইয়াং ছেলে এসে সেঞ্চুরি মেরে দিল। এটাই ওদের কম্পিটিশন লেভেল বাড়িয়ে দিল। অস্ট্রেলিয়া-ইংল্যান্ডের মতো দলগুলোতে একসঙ্গে চার-পাঁচ জন খেলোয়াড়ও অনেক সময় ইনজুরিতে পড়ে বা অন্য কোনো কারণে বাইরে থাকতে হয়। তারপরও দলে যারা সুযোগ পায়, তারাই পারফরম করে। এতে বোঝা যায়, বেঞ্চের শক্তিটা কেমন। বোঝা যায়, দলটায় আভ্যন্তরীণ হেলদি ফাইট কেমন জমে উঠেছে। আমাদের কিন্তু এবার তাই ঘটল। শুধু আমি আর তামিম কেন, ইনফর্ম কয়েক জন খেলোয়াড় দলে থাকতে পারেনি। সেটা বোঝাই যায়নি মাঠের খেলা দেখে।

মানে আপনি এখন বাংলাদেশকে বড় দলই মনে করছেন?
অন্তত সেই পথে আছি আমরা। অন্তত এখন দারুন একটা হেলদি কম্পিটিশন হবে। এই যারা রান করল, তারাও ফাইট করবে। যারা দলে নেই, ফর্মে আছে; তারাও ফাইট করবে। এতে প্রত্যেকের ইনডিভিজুয়াল পারফরম্যান্স আরও ভালো হবে। আমি খুব অপটিমিস্টিক।
Reply With Quote