View Single Post
  #257  
Old March 27, 2012, 03:58 PM
idrinkh2O's Avatar
idrinkh2O idrinkh2O is offline
Test Cricketer
 
Join Date: April 9, 2011
Favorite Player: Performing Tigers
Posts: 1,879


রহিমা খাতুন, মুশফিকুর রহিমের মা
ছেলে আমার ভালো করবে
| তারিখ: ২৮-০৩-২০১২


মা রহিমা খাতুনের সঙ্গে ছেলে মুশফিকুর রহিম

খেলার সময় মায়েরা সামনে থাকেন না। থাকেন হূদয়ের বিশেষ জায়গাজুড়ে, যেমনটা থাকেন বরাবরই। খেলার দিন সকালে বা তার আগের রাতে দলের সবাই মায়েদের সঙ্গে কথা বলেন মুঠোফোনে। মায়েরা দোয়া করেন, ক্রিকেটার ছেলেরা সেসব আপ্তবাক্য ধারণ করেন হূদয়ে। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও মা রহিমা খাতুনের সঙ্গে কথা বলেন। তবে সে কথা হয় অন্য এক মাধ্যমে। দুনিয়ার কোনো তার কিংবা উপগ্রহের মতো যান্ত্রিক মাধ্যমের সঙ্গে তার তুলনা চলে না! কথা হয় হূদয়ে হূদয়ে! মা রহিমা খাতুনের হূদয়ের কথা নিঃসৃত হয় না কণ্ঠ দিয়ে! তাঁর কান বেয়ে মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে না মুশফিকের ‘মা’ ডাক! জন্মগতভাবে এই অক্ষমতা তাঁর নিয়তি। তার পরও মুশফিক মায়ের সঙ্গে কথা বলেন, দোয়া নেন। যেমনটা নিয়েছিলেন এশিয়া কাপের সময়ও।

এ ক্ষেত্রে বাবা মাহবুব হামিদ দায়িত্ব পালন করেন আরেক মাধ্যম হিসেবে। খেলার আগে মুঠোফোনের এপাশ থেকে মুশফিক জিজ্ঞেস করেন, ‘মা এখন কী করে?’ বাবা জানান, ‘বসে বসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। বুঝতে পারছে, আমি তোমার সঙ্গে কথা বলছি!’ মুশফিক হয়তো চোখ বন্ধ করে মায়ের মুখ আঁকেন মনের ইজেলে, ‘মাকে বলো দোয়া করতে।’ বাবা সেটা বুঝিয়ে দেন মাকে। স্ত্রীর চোখের ভাষা পড়তে জানেন তিনি। তাই বোঝেন, ছেলের জন্য সব সময় দোয়া থাকে তাঁর। ছেলেকে বলেন, ‘তোমার মা দোয়া করছেন!’ মুশফিক তা শুনে নিশ্চয়ই উদ্দীপিত হন। বলা বাহুল্য, এশিয়া কাপের সময়ও হয়েছিলেন। দল এবং তিনি নিজে যে এত ভালো করেছেন, তার পেছনে মায়ের দোয়া অব্যর্থ, তা জানে গোটা দেশ।

অথচ এই মা ক্রিকেটের ‘ক’-ও বুঝতেন না। মুশফিক মাকে বুঝিয়েছেন কীভাবে একটা ছক্কা হয়, কীভাবে হয় আউট আর কী করলেই বা জেতে বাংলাদেশ। মুশফিক কি জানেন, এভাবেই মায়ের ভেতরে একটা মহাকাব্য গেঁথে দিয়েছেন তিনি? কেননা, এই ক্রিকেট নামের মহাকাব্যের সুখের অধ্যায়ে এসে আনন্দে ভাসেন রহিমা খাতুন। দুঃখের অধ্যায়ে যিনি কেঁদে ফেলেন শিশুদের মতোই! যেমন কাঁদলেন এশিয়া কাপ ফাইনালের দিন গ্যালারিতে বসে! ছেলেকে কাঁদতে দেখে তিনি নিশ্চয়ই বুঝে গিয়েছিলেন, গভীর দুঃখের একটা অধ্যায় তাঁর সামনে উন্মোচিত।

তবে মাহবুব হামিদ জানালেন খেলা শেষের কথা। মাঠে ছেলেকে কাঁদতে দেখে কাঁদলেও পরে নিজেকে সামলে নিয়েছিলেন রহিমা। নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছিলেন, এখন আর কাঁদলে চলবে না। ছেলের পাশে দাঁড়াতে হবে যে! সেটাই করেছেন তিনি। খেলা শেষে মায়ের কোলে ফিরে আসতেই পরম মমতায় বুকে টেনে নিয়েছেন ছেলেকে। চোখের ভাষায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, এবার হয়নি তো কী হয়েছে! সামনে জিতবে তোমরা!

এমনিতে নাকি খুব টিভি-ভক্ত রহিমা। এসব বলছিলেন মুশফিকের বাবা মাহবুব। আর ছেলের খেলা থাকলে তো নাকি কথাই নেই। কোনো কাজ থাকবে না সেদিন, কেবল খুদে পর্দার সামনে বসে থাকা; কখন দেখা যায় ছেলের মুখ! ভারত শ্রীলঙ্কাকে হারানোর দিন মাঠেই ছিলেন। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে ম্যাচটির দিন ছেলেকে বাঘের মতো লড়াই চালিয়ে যেতে দেখে নাকি তাঁর খুশির সীমা ছিল না। খেলা শেষে ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছিল ওই বিশেষ মাধ্যমে, মানে মাহবুব হামিদের মাধ্যমে। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, ‘বাবা, আমি তোমার জন্য গর্বিত!’

মা কেঁদেছিলেন, তবে আবার হাসবেন। কারণ, এই মা-ই যে নিরন্তর প্রার্থনা করছেন, ছেলে আমার ভালো করবে। আর সবার মা মুখে উচ্চারণ করে বলতে পারেন এই কথাগুলো। কিন্তু মুশফিকের মা পারেন না। তাতে কিচ্ছু যায়-আসে না বাংলাদেশ অধিনায়কের। তিনি তো মায়ের সঙ্গে কথা বলেন হূদয়ের ভাষায়!
__________________
-- Alwayz with !!! Champions are made from something they have deep inside them - a desire, a dream, and a vision!
-- Bangladesh are the Runners-up in the 2012 ASIA Cup!
Reply With Quote