View Single Post
  #54  
Old January 26, 2010, 07:34 PM
CTazim CTazim is offline
ODI Cricketer
 
Join Date: January 6, 2005
Posts: 904

:notwo rthy:

Very very well thought and well written article. I whole heartedly agree with this article!


Quote:
Originally Posted by tipu009
http://shongho.wordpress.com/2010/01/23/

যা না ঘটলেও চলত
জানুয়ারি 23, 2010 in ক্রিকেট, বাংলা, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল, বিসিবি, সাকিব আল হাসান | Tags: ক্রিকেট, বাংলা, বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল, বিসিবি, লোটাস কামাল, সাকিব আল হাসান, Bangladesh, Bangladesh Cricket Board, Bangladesh National Cricket Team, BCB, Cricket, Lotus Kamal, Shakib Al Hasan | by writersclubeditor
মুহম্মদ তাওসিফ সালাম
২৩ জানুয়ারি, ২০১০

তিনি বোর্ডের সভাপতি। আমি জানিনা বিসিবি সংবিধানে পদবী অনুযায়ী ঊর্দ্ধতন-নিম্নস্তন অবস্থানের ক্রমটি কি রকম, শীঘ্রই জানতে হবে। কিন্ত আপাতদৃষ্টিতে তিনি বোর্ডের সভাপতি, দীর্ঘকাল যাবৎ তার পরিচয় তিনি একজন শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী, বর্তমান সরকারী দলের একজন নেতা এবং হয়তোবা একজন দাতাও। বর্তমানে তার পরিচয়ে আরও মাত্রা যুক্ত হয়েছে – তিনি ক্ষমতাসীন দলের একজন প্রভাবশালী আইন প্রণেতা। অতএব বাইশ তেইশ বছর বয়সী বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন, সে যে-ই হোননা কেন, ক্ষমতা ও প্রতিপত্তির বিচারে অবশ্যই অনেক নীচের সারিতে অবস্থান করছেন।

লক্ষ্য করুন এখানে কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের নাম উল্লেখ করিনি। উল্লেখ করিনি কেননা উল্লিখিত রাজনৈতিক অবস্থানের ব্যাক্তিবর্গ দেশের উভয় বড় দলেই বিদ্যমান এবং তাদের দৃষ্টিভঙ্গির উল্লেখযোগ্য পার্থক্য এখনও কারও গোচর হয়নি। অতএব এই লেখাটি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত কোন নিবন্ধ হিসেবে চিহ্নিত না হোক, সেটাই চাইছি।

বিসিবির সভাপতি এ.এইচ.এম মোস্তফা কামাল লোটাস সম্প্রতি জনসমক্ষে ন্যাশনাল টিমের বিরুদ্ধে যে উষ্মা প্রকাশ করেছেন, তা অবশ্যই পর্যালোচনার দাবিদার। তিনি কি বলেছেন সেটা ইতমধ্যেই সবার জেনে যাওয়ার কথা। তাও পুরো ঘটনাটা সংক্ষেপে নীচে একটা ছোট প্যারায় তুলে ধরা যাক।

হোটেল সোনারগাঁওয়ে ন্যাশনাল টিমকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্যে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিসিবি সভাপতি লোটাস কামাল। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কামাল প্লেয়ারদের সম্পর্কে বলেন- তারা দায়িত্মজ্ঞানহীন; তাদের প্রয়োজনীয় কমিটমেন্ট নেই; খেলার মাঝে জেতার ষোলআনা ইচ্ছা নেই; এক রানের জন্য লিড নিতে পারেনা; ড্রেসিং রুম থেকে তাদের উদ্দেশ্যে কোন কাজের মেসেজ যায় বলে মনে হয়না; কোন কমিউনিকেশান নাই। এসব কথা চলতে থাকা অবস্থাতেই হতভম্ব প্লেয়ার, প্রেস ও অন্যান্যরা একে অন্যের দিকে তাকাতে থাকেন। তারা হতভম্ব হতেই পারেন, কারন তারা তো জানতেন এখানে পুরষ্কার, সংবর্ধনা, ফটোসেশন ইত্যাদি সুন্দর সুন্দর জিনিষপত্রের সাথে থাকবে সুন্দর সুন্দর কথা। গোলাগুলির আশংকা তাদের দূরতম কল্পনাতেও ছিল না। প্রতিরক্ষামূলক ব্যাবস্থা নেই উপলব্ধি করে এক পর্যায়ে ন্যাশনাল টিম ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসান প্রতিআক্রমণকে শ্রেয়জ্ঞান করেন, মাইক্রোফোন হাতে বলেন, “আমাদের দায়িত্মবোধ নিয়ে যারা কথা বলেন, আশা করি কথা বলার সময় তারা নিজেদের দায়িত্মজ্ঞান বজায় রাখবেন”। এই মন্তব্য শোনার পর নাকি লোটাস কামালের চেহারা হয়েছিল দেখার মত। বক্তব্যদান শেষ হওয়ার পর সাকিবকে কেউ একজন ডেকে নিয়ে যায় লোটাস সাহেবের কাছে। সম্ভবত অলি গলিতে বড়ভাইরা যেমন ‘চিপা’-এ নিয়ে যায় অনেকটা সেরকম ঘটনা। চিপা অবশ্য কারওরই দৃষ্টির অগোচর ছিলনা, সেখানে সাকিবকে দেখা গিয়েছে নত মস্তকে লোটাস কামালের দাপটাদাপটির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে। সাকিব সেখানে লোটাস কামালের কাছে দুই হাত জোড় করেছেন, ক্ষমাই চেয়েছেন হয়তো। সেই ফটো আবার দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকায় ছাপাও হয়েছে। তেলেসমাতি আর কাকে বলে!

লোটাস কামাল অবশ্য কিছু ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। তিনি বলেছেন তিনি একজন প্রফেশনাল। তিনি চাইবেন পারফর্ম্যান্স। তার দাবি থাকবে জয় এবং তার কাছে প্লেয়ারদের কমিটমেন্টও হতে হবে জয়। ম্যাচ শেষে সেটা জয় না হয়ে যদি জয়ের কাছাকাছিও হয়, সেটা তিনি বিবেচনা করে দেখবেন। কিন্তু প্লেয়াররা খেলার আগে জেতার কথা না বলে বলবে ভালো খেলার জন্য খেলব, ওটি হবে না।

লোটাস কামালকে বাংলাদেশের আপামর ক্রিকেটপ্রেমী ও একনিষ্ঠ দর্শকদের একজন ধরে নিলে তার ক্ষোভের বিষয়বস্তু উপলব্ধি করা সহজ। তার তুলে ধরা বেশিরভাগ পয়েন্টকেই ক্রিকেটের সমঝদার ও না-সমঝদার, সবাই সমর্থন করবেন।

কিন্তু কয়েকটা ব্যাপার মেলানো যাচ্ছেনা। যেমন লোটাস কামালের স্থান-কাল-পাত্র জ্ঞান। তিনি বলেছেন তিনি প্রফেশনাল। সম্ভবত বোঝাতে চেয়েছেন যে তিনি একজন নেতা যিনি প্রতিষ্ঠানের অর্গানগুলোর কাছ থেকে সর্বোচ্চ পারফর্ম্যান্স আশা করবেন, এবং সেটা সম্ভব করার জন্য নরম-গরম কোন পন্থা অবলম্বন করতেই দ্বিধাবোধ করবেন না।

কথা হচ্ছে, একজন প্রফেশনাল কি কখনও বিশ্ববাসীকে জানিয়ে সমস্ত মিডিয়াকে সামনে রেখে তার অধীনস্তদের গুষ্টি উদ্ধার করবেন? এরকম নজির কি আছে কোথাও? একজন প্রফেশনাল যিনি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষে অবস্থান করেন তাকে অবশ্যই তার সাবঅর্ডিনেটদের প্রতি অম্ল ও মধুর দুই আচরণই করতে হবে, নেতৃত্বরক্ষা ও দক্ষতা বাড়ানো, উভয় উদ্দেশ্যেই। কিন্তু তিনি কি সেই প্রতিষ্ঠান আয়োজিত কোন সংবাদ সম্মেলনে কোনদিন তার কর্মীদের এক হাত নিবেন? এতে তার কর্মীদের মনোবল কোথায় যাবে? নেতা হিসেবে এ ধরণের পেটপাতলা লোক কি কখনও নিজেকে প্রফেশনাল দাবি করতে পারে?

একজন ফ্যান হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের প্রতি লোটাস কামালের সমর্থন নিয়ে কোন সন্দেহ নেই, এবং টিম জিততে না পারায় তিনি হতাশ। তো এ ধরণের সমর্থক তো দেশে আরো ১৬ কোটি আছেন। জিততে না পারলে তারাও হতাশ হন। অনেকে প্লেয়ারদের গ্যালারি থেকে দুয়ো দেন, কেউ কেউ মারতেও ধরেছিলেন। তো এদের সাথে আর বিসিবি প্রেসিডেন্ট লোটাস কামালের তফাত কি রইল? তিনি একজন ক্ষমতাবান এমপি, যার বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে খোদ আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকেই নাকানি চোবানি খেতে হতে পারে। এই অহংকারই কি লোটাস কামালের বোধবুদ্ধিকে হজম করে নিয়েছে? সাকিবকে দুটো কথা শোনালে কেউ কিছু বলার নেই, বরং প্রতিবাদ করলে সাকিবকেই হার মেনে ক্ষমা চেতে হবে, এটা জেনেই কি তিনি বিষ উগরে দিলেন?

মনে পড়ে, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের একজন বিশিষ্ট নেতা জয়নাল হাজারী জামিনে মুক্ত হওয়ার পর জানিয়েছিলেন বাকি জীবন ক্রিকেট নিয়ে থাকতে চান, প্রধানমন্ত্রী ও তার প্রিয় সভানেত্রীর কাছে আবেদন করবেন বিসিবির দায়িত্মটা তার হাতে দেওয়ার জন্যে। তখন আমরা বলেছিলাম, বাহ্! এবার তো আমাদের ব্যাটসম্যানরা আউট হলে আর ড্রেসিং রুমে যাবে না, মাঠ থেকে সোজা আত্মগোপনে যাবেন। প্রাণের ভয় কার নেই? বিশেষ করে টিপু সুলতানকেই বা কে চেনে না। তো সেটা ছিল জয়নাল হাজারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

লোটাস কামালকে যখন বিসিবির প্রেসিডেন্ট বানানো হল, তখন সত্যিই ভেবেছিলাম যে অন্তত এই অ্যাপয়েন্টমেন্টট অ্যাটর্নি জেনারেল বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মত হয়নি। লোটাস কামাল, আরেফীন সিদ্দিকী বা মাহবুবে আলম এনারা সবাইই রাজনৈতিক লোক ও নিয়োগও পেয়েছেন একান্ত রাজনৈতিক বিবেচনায়, কিন্তু লোটাস কামালের বিসিবির প্রেসিডেন্ট হওয়াতে তেমন নিরাশ হইনি। তাকে একজন সফল ব্যবসায়ীও দক্ষ ব্যাবস্থাপনার লোক বলেই জানি। কিন্তু তিনি সম্প্রতি আমাদের নতুন করে ভাবতে বসিয়ে দিলেন।

ঘটনা অতিবাহিত হতে হতেই সাকিব সমর্থন পেয়েছেন বাংলাদেশের প্রায় সব ক্রিকেটারের পক্ষ থেকেই। এককালের ক্যাপ্টেনগণ যেমরূরু নাইমুর রহমান দূর্জয়, খালেদ মাসুদ পাইলট এবং আমিনুল ইসলাম বুলবুল, এনারা সবাই বোর্ড সভাপতির আচরণকে ঔদ্ধত্য হিসেবে দেখছেন। সভাপতিও যে সমর্থন পাননি তাই বা বলি কি করে। দেশের স্বঘোষিত সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক যারা এই সভাপতির নিয়োগে উদ্বেল হয়ে উঠেছিল, তারা মোটামুটি চেপেই গিয়েছে এই পুরো ঘটনাটা।

তবে এটা ঠিক যে তাৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়া দেখানোতে সাকিব আল হাসানেরও কিছুটা ছেলেমানুষি প্রকাশ পেল। লোটাস কামাল বিসিবির প্রেসিডেন্ট, আওয়ামী লীগের ক্ষমতাধর এমপি ও আবাহনী ক্রিকেটের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বলে বলছি না। সাকিব আল হাসান জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন। এ ধরণের তাৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়া দেখানো তার শোভা পায় না নিশ্চয়ই। এ কথা সত্য যে ক্যাপ্টেন হিসেবে তিনি বোর্ডের কাছ থেকে আরও সমর্থন আশা করেন, অন্তত পক্ষে লোটাস কামালের এই লোকসমক্ষে রূঢ় আচরণ আশা করেন না। কিন্তু খেলোয়াড় হিসেবে এসকল পরিস্থিতিতে নিঃশব্দে সামলে ওঠার গুণটা তার থাকা জরুরী। বোঝা গেল এখনও সেই গুণ পরিপক্ক ভাবে রপ্ত হয়নি। তাড়াতাড়ি রপ্ত হওয়া প্রয়োজন। আর লোটাস কামাল সাহেব, বেশ পরিণত বয়স্ক মানুষ, তাকে আর কি শেখার জন্য বলব, শুধু বলা যেতে পারে, স্থান-কাল-পাত্র জ্ঞানটা আরেকটু ঝালিয়ে নিলে সবারই মঙ্গল।

তবে সবশেষে এটা না বলে উপায় নেই, লোটাস কামালের মত মানসিকতার দিক থেকে পিছিয়ে থাকা কর্মকর্তাদের অভিভাবক হিসেবে পেয়ে আমাদের প্লেয়াররা এগিয়ে থেকেও সামগ্রিক ভাবে হয়তোবা পিছিয়েই থাকবেন। এদের কাছ থেকে প্লেয়াররা যখন স্বান্ত্বনা চান তখন পাবেন ধিক্কার, আর যখন সমর্থন চান তখন পাবেন আক্রমন। আর এক সময় যখন এই প্লেয়াররা সব কাটিয়ে উঠে সাফল্য পাবেন, তখন এই কর্মকর্তারাই লজ্জা বিসর্জন দিয়ে সাফল্যের ক্রেডিট তুলে নিবেন নিজের কাঁধে। এনারা কর্মকর্তা হিসেবে নন, বরং গ্যালারিতে বসে হৈচৈ করবার যোগ্য। অতএব এনাদের গ্যালারিতে পাঠিয়ে দেয়া হোক। এনারা বরং হসপিট্যালিটি বক্সে বসে সপরিবারে খেলা দেখুন আর বুঝে না বুঝে যা খুশি মন্তব্য করুন, যেগুলো কেউ শুনবে না। বোর্ড বরং ছেড়ে দেওয়া হোক তাদের হাতে যারা প্লেয়ারদের সাথে ব্যাক্তিগত আলোচনাকে গুরুত্ব
দিয়ে আপত্তির কথা তখন জানাবেন, অন্তত সংবাদ সম্মেলনে উচ্ছৃংখলতার জন্ম দিবেননা, প্লেয়ারদের স্পিরিটের বারোটা বাজাবেননা।
__________________
Always and never are two words you should always remember never to use.
Reply With Quote