View Single Post
  #20  
Old September 23, 2011, 12:02 AM
nakedzero's Avatar
nakedzero nakedzero is offline
Cricket Legend
 
Join Date: February 3, 2011
Favorite Player: ShakTikMashNasir(ShakV2)
Posts: 2,024


অনেক দিন ধরে শোনা যাচ্ছে দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে ল্যাপটপ কম্পিউটার। যার দাম হবে কম।বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টেশিস) এ ল্যাপটপ তৈরির কাজ হাতে নিয়েছে। দেশে উৎপাদিত এ ল্যাপটপ কম্পিউটার ‘দোয়েল’ নামে বাজারে আসবে।
চলতি বছরের জুন মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় টেশিসের স্টলে দোয়েলের নমুনাও প্রদর্শন করা হয়েছিল। সেখানে এ নতুন ল্যাপটপ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়েছে। জানা গেছে, ১১ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে দেশে তৈরি ল্যাপটপ উদ্বোধন করবেন।

টেশিস তৈরি করছে ল্যাপটপ
টেশিস দেশে ল্যাপটপ তৈরির কাজটি করছে। এর আগে টেলিফোনের বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রাংশ এবংটেলিফোন সেট তৈরি করে আসছিল সরকারি এ সংস্থাটি। এ প্রতিষ্ঠানের রয়েছে উন্নত অবকাঠামো, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয় ও দক্ষ জনবল। দেশে ল্যাপটপ তৈরির পাশাপাশি এরই মধ্যে টেশিস সৌর বিদ্যুৎ প্যানেল, দীর্ঘস্থায়ী মেইনটেইনেন্স ফ্রি ব্যাটারি তৈরি করেছে টেশিস।ভবিষ্যতে দেশেই মুঠোফোন তৈরির পরিকল্পনা করেছে সংস্থাটি।

ল্যাপটপের রকমফের
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দোয়েল ব্র্যান্ডের চার ধরনের ল্যাপটপ বাজারে পাওয়া যাবে। এর মধ্যে প্রথমটির নাম হচ্ছে ‘প্রাইমারি’।এটি হবে নেটবুক কম্পিউটার।এর পর্দার আকার হবে ১০ ইঞ্চি। এতে ইন্টেল ৮০০ মেগাহার্টজের প্রসেসর, ৫১২ মেগাবাইট র‌্যাম থাকছে।এর তথ্য ধারণক্ষমতা ১৬ গিগাবাইট। একবার ব্যাটারি চার্জ করলে এটি টানা দুই ঘণ্টা চলবে।এই নেটবুক কম্পিউটার ১০ হাজার ৫০০ টাকায় পাওয়া যাবে।
দোয়েলের দ্বিতীয় মডেলটির নাম নেটবুক বেসিক। এটির মনিটর ১০.১ ইঞ্চি। এতে ইন্টেল ১.৬৬ গিগাহার্টজের প্রসেসর, ১ গিগাবাইট র‌্যাম ও ২৫০ গিগাবাইট তথ্য ধারণক্ষমতা থাকবে। এর ব্যাটারি টানা চার ঘণ্টা চলবে।এটির দাম ১৩ হাজার ৫০০ টাকা।
‘স্ট্যান্ডার্ড’ নামের তৃতীয় মডেলের নেটবুক কম্পিউটারের মনিটর ১২.১ ইঞ্চি। এতে ১.৮ গিগাহার্টজ গতির এই নেটবুকে রয়েছে ২ গিগাবাইট র‌্যাম, ৩২০ গিগাবাইট তথ্য ধারণক্ষমতা।এর দাম ২০ হাজার ৫০০ টাকা। এটিও চলবে টানা চার ঘণ্টা।
দোয়েল ব্র্যান্ডের সর্বশেষ মডেলের ল্যাপটপ কম্পিউটারের নাম অ্যাডভান্স। এতে নানা ধরনের উন্নত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। এ ল্যাপটপটিতে আছে১৪ ইঞ্চির মনিটর। এতে ২ গিগাবাইট র‌্যাম, ৩২০ গিগাবাইট হার্ডডিস্কের পাশাপাশি ওয়েব ক্যামেরা, ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সুবিধা থাকছে। এতে ডিভিডি রাইটারও থাকছে। এর দাম ২৬ হাজার ৫০০ টাকা।
প্রতিটি ল্যাপটপ কম্পিউটারে এক বছরের বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়া হবে। বিক্রয়োত্তর সেবা দেওয়ার জন্য গণনা নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ল্যাপটপে বাংলা কি-বোর্ড ও বাংলায় লেখার সুবিধা থাকবে। ভাষা পরিবর্তন করার সুযোগও এতে রয়েছে। ল্যাপটপটি চলবে মুক্ত অপারেটিং সিস্টেম উবুন্টু দিয়ে। তবে উইন্ডোজ এক্সপি, উইন্ডোজ সেভেন অপারেটিং সিস্টেমও ব্যবহার করা যাবে বলে জানা গেছে। ল্যাপটপ তৈরির মনিটরগুলো আনা হচ্ছে মালয়েশিয়া থেকে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রাংশ বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে।

উৎপাদনের পরিমাণ
দোয়েল ল্যাপটপ এখন একটি শিফটে তৈরি হচ্ছে। এই শিফটে সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত প্রায় ২০০ জন কর্মী কাজ করছেন। এখানে চারজন বিদেশি প্রকৌশলী রয়েছেন। প্রথম অবস্থায় চারটি আলাদা মডেলের প্রায় ১০ হাজার ল্যাপটপ বাজারে আসবে। তবে প্রথমে এ ল্যাপটপগুলো সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া হবে। উৎপাদন বাড়ানোর জন্য দুই শিফটে কাজ চালানোর প্রক্রিয়া চলছে। এটি শুরু হলে ল্যাপটপ উৎপাদন বাড়বে বলে জানা গেছে। দ্বিতীয় শিফটের ল্যাপটপ উৎপাদনের সময় এটির বিভিন্ন যন্ত্রাংশ দেশেই উৎপাদন করা হবে। প্রথম অবস্থায় সরকার ভর্তুকির মাধ্যমে ল্যাপটপ উৎপাদন করছে। তবে উৎপাদন বাড়ানো হলে ধীরে ধীরে ভর্তুকির পরিমাণ কমে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

লক্ষ্য ডিজিটাল বাংলাদেশ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি
বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের হাতে কম দামে ল্যাপটপ কম্পিউটার পৌঁছাতে এবং সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের ধারণার বাস্তবায়ন করতে দেশে ল্যাপটপ তৈরির প্রক্রিয়াটি শুরু করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ কথা বলেছেন। এ ছাড়া কম দামে এ ল্যাপটপ পেয়ে শিক্ষার্থীরা অনেক লাভবান হবেন। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ল্যাপটপ পৌঁছাতে পারলে এর মাধ্যমে অনেকে স্বাবলম্বী হয়ে নিজের কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারবে বলেও মনে করছেন অনেকে।

দেশের ল্যাপটপ
টেশিস উৎপাদিত দোয়েল ব্র্যান্ডের ল্যাপটপ নিয়ে অনেক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের আগ্রহ লক্ষ করা গেছে। ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় টেশিসের স্টলে সাধারণ মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে ছিল এই নমুনা ল্যাপটপ। কিন্তু শুরুতেই এটি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেওয়া হবে এ খবরে অনেকেই শঙ্কিত হচ্ছেন। অনেকের প্রশ্ন, তাহলে কবে এ ল্যাপটপ কম্পিউটার সাধারণ মানুষের হাতে আসবে। আর সাধারণ মানুষ পেলেও তার মান নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলেছে। আবার সঠিকভাবে এই ল্যাপটপ উৎপাদন করতে পারলে দেশে একটি দারুণ সম্ভাবনাও তৈরি হবে বলে মনে করছেন কেউ কেউ। একসময় দেশের চাহিদা মিটিয়ে যদি বিদেশেও এ ল্যাপটপ রপ্তানি করা যায়, তাহলে এটি বাংলাদেশের প্রযুক্তি বাজারের জন্য একটি ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে। যত যা-ই হোক, দোয়েল তো দেশের ল্যাপটপ।


SOURCE
Reply With Quote