View Single Post
  #47  
Old November 11, 2010, 11:59 PM
Night_wolf's Avatar
Night_wolf Night_wolf is offline
2018 BPL Fantasy Winner
 
Join Date: October 30, 2010
Favorite Player: Mash
Posts: 22,930

কী বার্তা দিচ্ছে আয়োজক কমিটি!

ঘড়ি চলে না, চলে না...! এই মাসকটের শরীরে বিশ্বকাপের ক্ষণগণনার অচল ঘড়িটা যেন এখন পর্যন্ত চলতে থাকা অব্যবস্থাপনার প্রতীক

প্রথম আলো
রাতের সেই ভিড়ও নেই, আলোর রোশনাইও নেই। সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার সামনে নীরব দাঁড়িয়ে থাকা বিশ্বকাপের মাসকটটাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিল কয়েকজন পথচারী। এক ভদ্রলোক খুবই আগ্রহ নিয়ে দেখার চেষ্টা করছিলেন মাসকটের বুকে লাগানো ‘কাউন্টডাউন’ ঘড়িটা। কিন্তু ঘড়িতে সময় দেখতে না পেয়ে শেষ পর্যন্ত পাশের জনকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ভাই, আমার চোখে সমস্যা নাকি!’
না, সমস্যা কারও চোখে নয়। সমস্যা ব্যবস্থাপনায়। কাল রাতে বেশ অব্যবস্থাপনার মধ্যে শুরু হয়েছে বিশ্বকাপের ক্ষণগণনা। ঢাকায় তিনটি জায়গায় মাসকটের বুকে লাগানো ঘড়িতে ১০০ দিন ধরে এই ক্ষণগণনা চলার কথা। কিন্তু সকাল হতে না-হতেই আসল ঘড়ি, মানে সংসদ ভবনের সামনের ঘড়িটাই অচল!
সমস্যা শুধু সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার ঘড়িতে নয়, বাকি দুই জায়গায়ও আছে। প্রতিটি মাসকটের নিচে দুটি তারিখ লিখে বিশ্বকাপের শুরু ও শেষের দিনটা চিহ্নিত করা হয়েছে। সংসদ ভবনের সামনের মাসকটটি ছাড়া বাকি দুই জায়গার তিনটি মাসকটেই ভুল। সেখানে বিশ্বকাপের সমাপনী দিনের তারিখ লেখা—২ মার্চ; মানে প্রকৃত তারিখের এক মাস আগেই বিশ্বকাপ শেষ!
এই ভুলটা ঢাকার জন্য বিজয় সরণিতে একটি ও সার্ক ফোয়ারার দুটি মাসকটের পাদদেশে কাগজ সেঁটে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সার্ক ফোয়ারার সাইনবোর্ডের কাগজ উঠে গেছে।
শুধু মাসকট নিয়ে কথা বলায় মনে হচ্ছে, কাউন্টডাউন শুরু করায় যাবতীয় অব্যবস্থাপনা হয়েছে এখানে। আসলে অনুষ্ঠানটি জুড়েই ছিল অব্যবস্থাপনা। অনুষ্ঠানে জাতীয় ক্রিকেটাররা কে আসছেন, কোথায় বসছেন, তাঁরা আদৌ বসার সুযোগ পাচ্ছেন কি না—এসব দেখার মতো আগ্রহ কর্মকর্তাদের ছিল না।
এসব দেখা তো অনেক পরের ব্যাপার। স্থানীয় আয়োজক কমিটি (এলওসি) ক্রিকেটারদের ব্যাপারে এতটাই উদাসীন ছিল যে জাতীয় দলের দুই ক্রিকেটারকে গেটে আটকে দেওয়া হলেও কারও কোনো ভ্রূক্ষেপ ছিল না।
ক্রিকেটারদের কথা কী বলবেন? রাত ১১টার কিছু পর অনুষ্ঠানে পৌঁছে গিয়েছিলেন জেমি সিডন্স ও অন্য কোচরা। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে সামান্য সৌজন্যমূলক কথা বলা বা ডেকে নিয়ে একটু বসানোর মতো লোকও পাওয়া যায়নি।
এখানে অবশ্য আয়োজকেরা আপত্তি করতে পারেন। তাঁরা বলতে পারেন, আমরা দেশের সাবেক-বর্তমান ক্রিকেটারদের খেয়াল রাখলাম না, আর তো কোচ! সাবেক ক্রিকেটারদের তো আমন্ত্রণ-প্রক্রিয়াটাই পছন্দ হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সাবেক অধিনায়ক বললেন, ‘আগের দিন রাত নয়টা বা সাড়ে নয়টার দিকে ফোন করা হয়েছে। আমাদের উপস্থিতি আন্তরিকভাবে চাইলে একটু আগে থেকে বলা যেত।’
আরেক সাবেক অধিনায়ক একটু উষ্মাই প্রকাশ করলেন, ‘ক্রিকেটাররা কে! সাবেক বলুন আর বর্তমান, কোনো ক্রিকেটারের মূল্য এই আয়োজকদের কাছে আছে বলে মনে হলো না।’
ব্যক্তিগত কারণে অনুষ্ঠানে যেতে পারেননি রকিবুল হাসান। কিন্তু টেলিভিশনে অনুষ্ঠানটা দেখেই বেশ কষ্ট পেয়েছেন তিনি, ‘আমার সবচেয়ে খারাপ লেগেছে মঞ্চে নাঈমুর রহমানকে না দেখে। দিনটা ১০ নভেম্বর ছিল, বাংলাদেশের টেস্ট অভিষেকের দিন। এই দিন সৌরভের সঙ্গে সে প্রথম টেস্টের টস করতে নেমেছিল। সেই দিনেই বিশ্বকাপের কাউন্টডাউন শুরু হলো। সৌরভের সঙ্গে মঞ্চে নাঈমুরকে হাজির করতে পারলে কী অসাধারণ একটা ব্যাপার হতো! সাবেক ক্রিকেটারদের আমন্ত্রণ করায় বিলম্ব, তাঁদের আপ্যায়নে ত্রুটি সব আমি ভুলে যেতাম ওকে মঞ্চে দেখলে। কিন্তু ওকে আনার বিশেষ কোনো উদ্যোগ কি নেওয়া হয়েছিল?’
স্থানীয় আয়োজক কমিটির এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছা জানিয়ে বলেছেন, ‘আসলে আমন্ত্রিতরা সবাই ব্যক্তিগত অতিথি সঙ্গে নিয়ে আসায় অনুষ্ঠানটা এলোমেলো হয়ে গেছে।’
এই একটু একটু অব্যবস্থাপনা, একটু একটু ত্রুটি; এর সবকিছুই হয়তো সমাধানযোগ্য। কিন্তু এসব যাঁরা করছেন, তাঁরা কি বুঝতে পারছেন, বিশ্বকে কী বার্তা এতে দেওয়া হলো?
__________________
kumbaya
Reply With Quote