September 20, 2011, 11:58 PM
|
|
Test Cricketer
|
|
Join Date: April 9, 2011
Favorite Player: Performing Tigers
Posts: 1,879
|
|
ক্রিকেট দলের নতুন অধিনায়ক মুশফিকুর
উৎপল শুভ্র | তারিখ: ২১-০৯-২০১১
মুশফিকুর রহিম
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর অভিষেকটা ছিল খুব নাটকীয়। অধিনায়কের মুকুটটাও মাথায় উঠল তেমনি নাটকীয়ভাবে।
কাল বিকেলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনা পর্ষদের সভার মাঝখানে নতুন অধিনায়ক হিসেবে যখন ঘোষিত হলো মুশফিকুর রহিমের নাম, সেটিতে অবশ্য কোনো নাটকীয়তা ছিল না। প্রায় সবারই জানা ছিল, শুধু আনুষ্ঠানিক ঘোষণা, এই যা! সহ-অধিনায়ক হিসেবে মাহমুদউল্লাহর নামটাও তা-ই।
আপাতত অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ডিসেম্বরে পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই সিরিজের জন্য অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়ক করা হয়েছে মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহকে। মুশফিকের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়াটাও খুব অনুমিত, ‘যেকোনো ক্রিকেটারের জন্য এটা সর্বোচ্চ সম্মান। আমাকে এই দায়িত্ব দেওয়ায় ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। পুরো জাতির প্রত্যাশা সম্পর্কে আমি সচেতন। লক্ষ মানুষের স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করব।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট বিসিবি কাপে মুশফিকুর রহিমকে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নির্বাচন করেই বার্তাটা দিয়ে দিয়েছিল ক্রিকেট বোর্ড। অভিজ্ঞতা এবং দলে অপরিহার্যতা বিবেচনায় আর কোনো বিকল্পও ছিল না। তার পরও মুশফিকের অধিনায়কত্ব পাওয়াটাকে নাটকীয় বলার কারণ গত কিছুদিনের ঘটনাপ্রবাহ।
জিম্বাবুয়ে সফরে ব্যর্থতার পর অধিনায়ক ও সহ-অধিনায়ককে একসঙ্গে সরিয়ে দেওয়ার অভূতপূর্ব ঘটনা ঘটেছে। সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালকে বরখাস্ত করার চরম বিতর্কিত সিদ্ধান্ত নিয়ে ঝড় উঠেছে চায়ের পেয়ালায়। এই ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ সময়ে অধিনায়কের কঠিন দায়িত্ব পেলেন মুশফিকুর রহিম। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর মনোনয়ন হয়তো নাটকীয় নয়, তবে প্রেক্ষাপটটা তো অবশ্যই।
এমন নাটকীয়তার সঙ্গে মুশফিকুরের পরিচয় অবশ্য ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই। ২০০৫ সালে ইংল্যান্ড সফরের জন্য ঘোষিত ২০ জনের প্রাথমিক দলেও ছিলেন না। শেষ মুহূর্তে দলে ঢুকে গেলেও সেই সফরে তাঁর ‘পর্যটক’ হয়েই থাকার কথা ছিল। উইকেটরক্ষক হিসেবে তখন অপ্রতিদ্বন্দ্বী খালেদ মাসুদ। তাঁর বিকল্প হিসেবে দলে আসা মুশফিকের খেলার সুযোগ কোথায়?
সুযোগ এল নাটকীয়ভাবে। সাসেক্সের বিপক্ষে ট্যুর ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করলেন, নর্দাম্পটনশায়ারে বিপক্ষে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। লর্ডস টেস্টে স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবেই অভিষেক হয়ে গেল মুশফিকের। তা নিয়ে আলোড়িত ইংল্যান্ডের ক্রিকেট-মহলও। লর্ডসে তাঁর চেয়ে কম বয়সে যে আর কেউ টেস্ট খেলেনি। সাড়ে নয় মাস পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বগুড়ায় দ্বিতীয় টেস্টটিও খেললেন স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে। উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হিসেবে টেস্ট অভিষেক ২০০৭ সালের জুলাইয়ে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৮০ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসে ঘোষিত হলো ‘খালেদ মাসুদ যুগ’-এর অবসানবার্তাও।
মাসুদের দীর্ঘ ছায়ায় ঢাকা পড়ে থেকেই গিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে। সেখানে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরি করে দলকে জিতিয়ে ফিরেছেন। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ আর উইকেটরক্ষক হিসেবে প্রথম টেস্ট—খালেদ মাসুদকে বাদ দেওয়া ঠিক হয়েছে কি হয়নি বিতর্কের কারণে দুটিতেই তাঁর ওপর ছিল প্রচণ্ড চাপ। সেই চাপকে যেভাবে জয় করেছেন, তা থেকেই মুশফিকের মানসিক শক্তির প্রমাণ মেলে।
নেতৃত্বগুণও অনেক আগেই চিহ্নিত। অনূর্ধ্ব-১৭ ও অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও। জাতীয় দলের সহ-অধিনায়কও ছিলেন অনেক দিন। গত ডিসেম্বরে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ ছাড়াই মুশফিককে সরিয়ে তামিম ইকবালকে সহ-অধিনায়ক করা হয়। মুশফিকুর রহিমকে অধিনায়ক করাটাকে তাই বলতে পারেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের বিলম্বিত ভুল স্বীকার।
সহ-অধিনায়কের মতো অধিনায়ক নির্বাচনে বিসিবির ভুল বা অধৈর্যের প্রমাণ মিলবে আরেকটি তথ্য থেকেও। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের ১১ বছরও হয়নি, অথচ মুশফিকুর রহিম এই দলের অষ্টম অধিনায়ক! সংখ্যাটা শুধু টেস্ট অধিনায়ক ধরে। ২০০৪ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে রাজিন সালেহর নেতৃত্ব দেওয়ার কথা মনে রাখলে সেটি হয়ে যায় নয়!
হাবিবুল বাশার প্রায় তিন বছর অধিনায়ক ছিলেন। এ ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো অধিনায়কই থিতু হওয়ার সময় পাননি। বগুড়ার মাটিডালির ক্রিকেট-অন্তঃপ্রাণ মাহবুব হামিদের ২৩ বছর বয়সী ছেলে কি পারবেন ব্যতিক্রম হতে?
এই প্রশ্নের উত্তর সময়ই দেবে। আপাতত স্বাগত জানানো যাক নতুন অধিনায়ককে। মুশফিকুর রহিম, অধিনায়কের কণ্টক-সিংহাসনে আপনাকে স্বাগত!
__________________
-- Alwayz with !!! Champions are made from something they have deep inside them - a desire, a dream, and a vision!
-- Bangladesh are the Runners-up in the 2012 ASIA Cup!
|