December 16, 2011, 04:21 PM
|
|
Test Cricketer
|
|
Join Date: April 9, 2011
Favorite Player: Performing Tigers
Posts: 1,879
|
|
Dear Head-master Bijoy Kumar, thank you so very much for your amazing work and dedication. We salute you. Tumi-e Bangladesh-er sujoggo sontan. Everyone should follow this in Bangladesh!
"Amader deshe hobe sei chele kobe
kothay na boro hoye kaje boro hobe"
- Well, amra ekta peye gechi...aro onek laghbe...
----------------------------------------------------------------------------------------------------------
শ নি বা রে র বিশেষ প্রতিবেদন
মফস্বলে দেশসেরা বিদ্যালয়!
মজিবর রহমান খান, ঠাকুরগাঁও | তারিখ: ১৭-১২-২০১১
শারীরিক কসরতে ব্যস্ত ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
আমাদের দেশে শহর বা শহরতলির শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোই দেশসেরা হবে। সেই প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীরাই হবে সেরা মেধাবী—এটা যেন ধরেই নেওয়া হয়। কিন্তু এর ব্যতিক্রমও আছে। সেই ব্যতিক্রমী একটি
বিদ্যালয় হলো ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
২০০৮ সালে দেশসেরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি পেয়েছে বিদ্যালয়টি। শিক্ষক-শিক্ষার্থী আর স্থানীয়দের চেষ্টার ফসল এই অর্জন।
বিদ্যালয়ে এক দিন:
সম্প্রতি এক সকালে বিদ্যালয়ের চত্বরে ঢুকতেই নজর কাড়ে বিদ্যালয় মাঠের ঝকঝকে পরিবেশ। পতাকা দণ্ডে পতপত করে উড়ছে লাল-সবুজের পতাকা। পাশেই স্বাধীনতাযুদ্ধে শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধ। বিদ্যালয় ভবনের বারান্দায় সাজানো হরেক রকম ফুলগাছের টব।
বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষগুলোর নাম রাখা হয়েছে বিভিন্ন মনীষীর নামে। কক্ষের দেয়ালে তাঁদের ছবিও আঁকা। ছবির পাশে মনীষীদের সংক্ষিপ্ত জীবনী। মনীষীদের মধ্যে আছেন জাতীয় নেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, ভাষাশহীদ বরকত, রফিক, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম, কবি সুফিয়া কামাল, নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া, পল্লিকবি জসীমউদ্দীন, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন ও ভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। শিশুদের ছোট থেকেই দেশের ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত করানোর জন্য আঁকা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসবিষয়ক নানা ছবি। রয়েছে মনীষীদের বাণী।
বিদ্যালয়ের একটি কক্ষ কম্পিউটার ল্যাব হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সেখানে রয়েছে তিনটি কম্পিউটার। তৃতীয় শ্রেণী থেকেই এখানে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক।
পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরে ই-বুকের মাধ্যমে গণিত বিষয়ের ক্লাস নিচ্ছিলেন সহকারী শিক্ষিকা ফারজানা আক্তার। ‘আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচিত করতে নিয়মিত মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া হয়। এতে অমনোযোগী শিক্ষার্থীদেরও পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়।’ জানালেন তিনি।
বিদ্যালয়ের কার্যালয় কক্ষটি সাজানো বিভিন্ন স্মারক ও পুরস্কার দিয়ে। তিনটি আলমারিতে শিশুমানস বই ও শিক্ষা উপকরণ। দেয়ালে সেঁটে দেওয়া তথ্যবোর্ড। সেখানে দেওয়া তথ্যমতে, বিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী ৮৩৭ জন। প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় ২০১০ সাল পর্যন্ত এই বিদ্যালয়ের ২৩৯ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পেয়েছে। ২০১০ সালে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় ১৪২ জন শিশু অংশ নিয়ে সবাই পাস করেছে।
বিদ্যালয়ে প্রাক-প্রাথমিকসহ ছয়টি শ্রেণীতে মোট ১১টি শাখা। প্রতিটি শাখায় ন্যূনতম ৫০ জন শিক্ষার্থী। সবগুলো শাখায় আছে একজন করে ক্যাপ্টেন। শিক্ষার্থীদের খাওয়ার জন্য বিদ্যালয়ে রয়েছে একটি ক্যানটিন। প্রতিটি শ্রেণীকক্ষেই আছে পানি খাওয়ার ব্যবস্থা।
প্রতিষ্ঠাকালের কথা:
১৯৩০ সালের দিকে রানীশংকৈলের পালপাড়া গ্রামের চন্দ্র হরিপাল নিজ বাড়িতে একটি পাঠশালা খোলেন। নাম দেন ‘চন্দ্র হরির পাঠশালা’। তাঁর মৃত্যুর পর বন্ধ হয়ে যায় পাঠশালাটি। ১৯৩৫ সালে ওই গ্রামের সহোদর চিকিৎসক ধীরেন্দ্রনাথ রক্ষিত ও সুরেন্দ্রনাথ রক্ষিতের দান করা এক একর পাঁচ শতক জমিতে বিদ্যালয় করা হয়। তবে নাম দেওয়া হয় রানীশংকৈল প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৭৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। ১৯৯২ সালে উপজেলার মডেল বিদ্যালয় করা হয়।
বদলের শুরু:
বিদ্যালয়ের বয়োজ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিকা রেবা রানী রায় জানালেন, ১৯৯২ সালে বর্তমান প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার যোগ দেন। তখন বিদ্যালয়ের পরিবেশ দেখে তাঁর মন খারাপ হয়ে যেত। পর্যাপ্ত শ্রেণীকক্ষ নেই, মাঠের নোংরা আবর্জনার দুর্গন্ধ। একদিন স্কুলের সব শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে ডেকে প্রধান শিক্ষক বললেন, ‘বিদ্যালয়টি কার?’ উত্তরে শিক্ষার্থীরা সমস্বরে বলল, ‘আমাদের’। তিনি জানতে চাইলেন, তাহলে বিদ্যালয়ের মাঠ এত নোংরা কেন? এরপর প্রধান শিক্ষক নিজেই বললেন, ‘আজ আমরা মাঠের মাত্র চার হাত জায়গা পরিষ্কার করব।’ এই বলে তিনি মাঠ পরিষ্কার শুরু করলেন। তাঁর সঙ্গে যোগ দিলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী সবাই। সেই শুরু বিদ্যালয়ের বদলে যাওয়া।
এরপর প্রধান শিক্ষক এলাকার সুধীজনদের নিয়ে বিদ্যালয়ের পড়ালেখার পরিবেশ তৈরিতে সহযোগিতা চাইলেন। সেদিনই সুধী সমাজের সহায়তায় বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হয়। পরে সবার সহযোগিতায় নির্মাণ করা হয় দুটি শ্রেণীকক্ষ। প্রধান শিক্ষকের পরিকল্পনায় শিক্ষকেরা প্রতিটি শিক্ষার্থীর বাড়ি পরিদর্শন করে কথা বলেন অভিভাবকদের সঙ্গে। বিদ্যালয়ে নিয়মিত ‘মা’ সমাবেশ শুরু হলো। তাঁদের কাছ থেকে পাওয়া পরামর্শ বাস্তবায়িত হলো বিদ্যালয়ে। উপজেলার সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নিয়ে সর্বজনীন একটি কমিটি করা হলো। সবার সহযোগিতায় শিক্ষার চমৎকার পরিবেশ নিশ্চিত হলো, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতির হার বেড়ে গেল, ফলও ভালো হতে থাকল।
অন্য বিদ্যালয় থেকে আলাদা:
বিদ্যালয়ের উন্নয়নে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের পাশাপাশি গঠন করা হয়েছে কল্যাণ সমিতি ও শিক্ষক-অভিভাবক সমিতি।
২০০৮ সালে প্রতিটি অভিভাবকের কাছ থেকে মাথাপিছু অতিরিক্ত দুই টাকা করে নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে কল্যাণ সমিতির তহবিল। এ ছাড়া বিদ্যালয়ের জমিতে ভাড়া দেওয়া চারটি দোকান থেকে ভাড়া ও প্রতি মাসে কিছু অনুদান এই তহবিলে জমা হয়। সেই তহবিল থেকে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। ওই তহবিল থেকে চলতি মাসে ১৩৩ জন শিক্ষার্থীকে নতুন পোশাক ও একজনকে চিকিৎসা-সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দরিদ্রদের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যে দেওয়া হয়েছে বই-খাতা ও কলম।
বিদ্যালয়ে কম্পিউটার, শরীরচর্চা ও নাচ-গানের জন্য তিন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রাখা হয়েছে নৈশপ্রহরী, অফিস সহকারী ও দুজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য রাতে আড়াই ঘণ্টা পাঠদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য আছে জেনারেটর। রাতে অতিরিক্ত চারজন শিক্ষক এই শিক্ষার্থীদের পড়ান। এসব খরচ মেটানো হয় কল্যাণ তহবিল থেকেই।
শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার খোঁজখবর নেওয়ার জন্য অভিভাবকদের মুঠোফোন নম্বর বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। উপস্থিতি বাড়াতে পরীক্ষায় উপস্থিতির ওপর সংরক্ষিত রাখা হয়েছে ৫০ নম্বর।
বিদ্যালয়ের অর্জন:
রানীশংকৈল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উকিল চন্দ্র রায় জানান, ২০০৮ সালে রানীশংকৈল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে দেশের সেরা বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া বিদ্যালয়টি ২০১০ সালে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি ক্যাটাগরিতে রংপুর বিভাগে শ্রেষ্ঠ স্থান লাভ করে।
শিক্ষার্থীদের কথা:
চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী সুমাইয়া জান্নাতি বলে, ‘বিদ্যালয়ের পরিবেশ, শিক্ষকদের ব্যবহার সব সময় আমাদের আকৃষ্ট করে। পড়া না বুঝলে স্যার-আপারা কখনোই বিরক্ত বোধ করেন না, বারবার বুঝিয়ে দেন।’ পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র রাফি তোরাব বলে, ‘আমি ঠাকুরগাঁও শহর ছেড়ে এখানে পড়তে এসেছি। বিদ্যালয়টি ভালো বলে বাবা আমাকে এখানে পাঠিয়েছে।’
প্রধান শিক্ষক যা বলেন:
প্রধান শিক্ষক বিজয় কুমার এই সাফল্য সম্পর্কে বলেন, ‘নিজের কাজটুকু সব সময় যত্ন দিয়ে করতে হয়। একজন মানুষের পেশা ও নেশার মধ্যে সমন্বয় না থাকলে ভালো কিছু করতে পারে না। আমি পেশাকে নেশা হিসেবে নিয়েছি। আর এত সাড়া দিয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকার সুধীজন। সবার সহায়তায় এ সাফল্য।’
তাঁদের কথা:
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও রানীশংকৈল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সইদুল হক বলেন, ‘এই বিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে আমি গর্বিত। যেকোনো ত্যাগের বিনিময়ে আমরা এই বিদ্যালয়ের সুনাম রক্ষা ধরে রাখতে চাই।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম তৌফিকুজ্জামান বলেন, ‘বিদ্যালয়টি সারা দেশে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
__________________
-- Alwayz with !!! Champions are made from something they have deep inside them - a desire, a dream, and a vision!
-- Bangladesh are the Runners-up in the 2012 ASIA Cup!
|