View Single Post
  #113  
Old July 15, 2013, 08:25 AM
PoorFan PoorFan is offline
Moderator
 
Join Date: June 15, 2004
Location: Tokyo <---> Dhaka
Posts: 14,850

A good expression from one of my favorite writer in Prothom Alo. Me too not happy with this verdict, then again, got to respect the judgement of the tribunal, and the govt. should appeal against this verdict as well.

Quote:

তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়া

রাষ্ট্র লজ্জা থেকে বাঁচল

মিজানুর রহমান খান | তারিখ: ১৫-০৭-২০১৩

« আগের সংবাদ

গোলাম আযমকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।
ছবি: মনিরুল আলম


যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমকে মৃত্যুদণ্ড না দেওয়ায় বাংলাদেশের জনগণের ক্ষুব্ধ ও বেদনাহত হওয়াটাই স্বাভাবিক। এই রায় লাখো শহীদ ও ভুক্তভোগী পরিবারের ক্ষত প্রশমনেও কার্যকর প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে এটাই সত্য, আমরা যুদ্ধাপরাধী হিসেবে চিহ্নিত একটি সংগঠনের প্রধানকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দিতে পেরেছি। এই রায়ে জনগণ সন্তুষ্ট হয়নি সত্য, তবে বাংলাদেশ রাষ্ট্র লজ্জা থেকে বাঁচল।

শহীদজননী জাহানারা ইমামের গণ-আদালত গোলাম আযমের অপরাধকে মৃত্যুদণ্ডযোগ্য বলে যে রায় দিয়েছিল, তা বাস্তবে পরিণত হলো। রাষ্ট্রের স্বীকৃতি পেল। শত সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এর কৃতিত্ব সরকার দাবি করতে পারে।

এ রায়ের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে, তবে আপিলের সুযোগ কীভাবে গ্রহণ করা হবে, সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে। আমি মনে করি, তাঁর বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা করার সুযোগ এখনো আছে। সেটা দায়ের করতে বিএনপির নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কাছ থেকে এখনই নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি চাই। গোলাম আযমের বিচারের দাবিতে ১৯৯২ সালে যে গণ-আদালত গঠিত হয়েছিল, তাঁর সরকার তাদের সবার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহের মামলা ঠুকে দিয়েছিল।

বাংলাদেশের যে সুপ্রিম কোর্ট একাত্তরের যুদ্ধাপরাধকে বিবেচনায় নিতে অপারগ থেকে গোলাম আযমকে নাগরিকত্ব দিয়েছিলেন, সেই আদালতই আজ গোলাম আজমের ৯০ বছরের দণ্ড দিলেন। তবে আমরা ভুলে যাইনি যে, আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী একদা গোলাম আযমের দোয়া নিয়েছিলেন, দলটি তত্ত্বাবধায়কের দাবিতে জামায়াতকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনও করেছিল। এসব তথ্য অসত্য নয়, আওয়ামী লীগ এ জন্য কখনো অনুতাপ করেনি। কিন্তু সেসব ছাপিয়ে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার পথে জাতি হিসেবে আজ আমাদের একটি ঐতিহাসিক অর্জন হলো, গোলাম আযম একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাজা পেয়েছেন। তিনি সেই ব্যক্তি, যিনি স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণায় সৌদি আরব, পাকিস্তান ও লন্ডনে ছুটোছুটি করেছেন। তিনি দেশবিরোধী তত্পরতা চালিয়েছিলেন বলে বিএনপির সরকার তাঁর নাগরিকত্ব মামলায় আদালতে প্রমাণ দাখিল করেছিল।

গোলাম আযমের নাগরিকত্ব মামলার রায়ে জামায়াতেরই যুক্তি ছিল, সময়ের ব্যবধানে অপরাধের বিচার থেকে মাফ পাওয়া যায় না। সেটা আজ প্রমাণিত হলো। এই বিচার বিলম্বিত করার দায় রাষ্ট্রের। আইনমন্ত্রী ও আইন প্রতিমন্ত্রীর চড়া সুরে তাই সন্তোষ প্রকাশ করা দুর্ভাগ্যজনক। বিচার করার জন্য তাঁরা যদি ধন্যবাদ নিতে চান, তাহলে বিলম্বে বিচার করার জন্যও তাঁদের উচিত অনুতপ্ত হওয়া। কিন্তু কোনো বিনয় তো কোথাও দেখি না।

লাইবেরিয়ার ৬৪ বছর বয়স্ক প্রেসিডেন্ট চার্লস টেইলরের আইনজীবীরাও গেলাম আযমের কৌঁসুলিদের মতো একই যুক্তি দিয়েছিলেন। তবে ওই আদালতের সামনে সমস্যা ছিল, বিচারকেরা মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সাজা দিতে পারতেন না। সেখানেও টেইলরের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ অপরাধ প্রমাণিত হয়নি। তিনিও কাউকে নিজের হাতে গুলি করে মারেননি। বিচারক বলেছেন, Leadership must be carried out by example, by the prosecution of crimes, not the commission of crimes.

জনসাধারণ গোলাম আযমের ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ড না পেয়ে যেভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছে, তা যুক্তিসংগত বলেই মনে করি। কারণ, আদালতের রায়ে তাঁর অপরাধ যে মৃত্যুদণ্ডযোগ্য, সে কথা স্পষ্ট বলা হয়েছে। বার্ধক্যজনিত কারণে তাঁর দণ্ড লঘু করা হয়েছে।

রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে বার্ধক্যের বিষয়টি বিবেচনা করা বাংলাদেশে যেমন আছে, তেমনি উপমহাদেশেও বিরল নয়। কিন্তু গোলাম আযমের বিষয়টি অন্যান্য যুদ্ধাপরাধীর সঙ্গে তুলনীয় নয়। তাই এই প্রশ্ন কখনোই মুছে যাবে না যে, বাংলাদেশ গোলাম আযমের সহযোগীদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে, অথচ পালের গোদার শাস্তি হয়েছে লঘু। অন্য কথায়, এই দণ্ড আনুপাতিক ন্যায্যতা থেকে অনেক দূরে।

সুতরাং রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলিদের ৯০ বছরের দণ্ড নিশ্চিত করার বিষয়টি নিয়ে উচ্ছ্বাস কিংবা সন্তুষ্টি প্রকাশের সুযোগ সীমিত। কৌঁসুলিরা নিশ্চয়ই স্মরণ রাখবেন, এই রাষ্ট্রব্যবস্থা যদি তাঁদের আরও আগে এই বিচার-প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করার ব্যবস্থা করে দিত, তাহলে বার্ধক্য প্রশ্নটি বিবেচনায় আসত না। তদুপরি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বার্ধক্যজনিত কারণ এমন কোনো বিচার বিভাগীয় মীমাংসিত মতবাদ নয়। সুতরাং এ নিয়ে মতভিন্নতা থাকা ও শান্তিপূর্ণভাবে সংযত ভাষায় তা নিয়ে আলোচনায় ক্ষতি নেই।

গোলাম আযমের আইনজীবীরা বলেছেন, প্রত্যক্ষ অপরাধের দায় রাষ্ট্র প্রমাণ করতে পারেনি। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, এটি একটি অন্তর্নিহিত দুর্বলতা কিংবা সীমাবদ্ধতা। গত এক দশকে আন্তর্জাতিক যুদ্ধপরাধ ট্রাইব্যুনাল এমন অনেককে দণ্ড দিয়েছেন, যাঁরা পরোক্ষভাবে অথচ নিয়ামক ভূমিকা রেখেছেন।

গোলাম আযমের নাগরিত্বের প্রশ্ন আদালতের মাধ্যমে রাজনীতিকেরা সুরাহা করে নিয়েছিলেন। জিয়াউর রহমান তাঁকে দেশে আসার সুযোগ দিয়েছেন, কিন্তু তাঁকে নাগরিকত্ব দেননি; এমনকি আমির হতেও সায় দেননি। জিয়ার পরে এরশাদ এলেন। তিনিও নাগরিকত্বের প্রশ্নে ঝুলিয়ে রাখলেন। বেগম খালেদা জিয়াও দেননি। দিতে পারেননি। তিনি রমজান মাসে গোলাম আযমকে জেলে রেখেছিলেন। এমনকি তাঁকে নাগরিকত্ব দিতে জামায়াতের সঙ্গে শর্ত করে সরকার গড়ে ওয়াদা ভেঙেছিলেন। এটা প্রমাণ করে গোলাম আযম জাতির কাঁধে কত বড় আপদ।

Source Prothom Alo
Reply With Quote