View Single Post
  #47  
Old July 10, 2011, 07:51 AM
nakedzero's Avatar
nakedzero nakedzero is offline
Cricket Legend
 
Join Date: February 3, 2011
Favorite Player: ShakTikMashNasir(ShakV2)
Posts: 2,024
Default টিপাইমুখ প্রকল্প নিয়ে তবুও এগিয়ে যাচ্ছে ভারত




মনিপুর রাজ্যের টিপাইমুখে প্রস্তাবিত ১৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্পটি নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে ভারত সরকার। যদিও টিপাইমুখ প্রকল্পের তীব্র বিরোধিতা রয়েছে বাংলাদেশ-ভারতের বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও রাজনৈতিক সংগঠনের তরফ থেকে। নয়াদিল্লির একজন সরকারি কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।

ভারতের সরকারি প্রতিষ্ঠান নর্থ ইস্টার্ন ইলেকট্রিক পাওয়ার কর্পোরেশন লিমিটেডের (নিপকো) চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রেম চান্দ পঙ্কজ বলেন, ‘সব আশঙ্কাই ভিত্তিহীন। জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের বিশাল এ প্রকল্পটির কাজ চলবে, দেশ ও দেশের বাইরে বিরোধিতা সত্ত্বেও।’

মনিপুর ও বাংলাদেশের পরিবেশবাদীদের একটি অংশ জানাচ্ছে, টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণের ফলে কয়েকটি নদীর গতিপ্রবাহে প্রভাব পড়বে। এরফলে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হবে।

গত বছর বিশাল এ প্রকল্পটির কার্যভার ভারতের ন্যাশনাল হাইড্রোইলেকিট্রি পাওয়ার কর্পোরেশন (এনএইচপিসি), সাতলুজ জলবিদ্যুৎ নিগাম (এসজেভিএন) ও মনিপুর সরকারের সমন্বয়ে গঠিত একটি কনসোর্টিয়ামকে দেওয়া হয়। প্রকল্পটির মূল পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য ১৯৯৯ সালে নিপকোকে পুরস্কৃত করা হয়।

পঙ্কজ বলেন, ‘প্রকল্পটির কাজ দ্রুত শেষ করতে আমরা শিগগির সরকারকে নিপকোর হাতে আবারও প্রকল্পটি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বলব। এই কাজ করতে দেরি করলে বহু সমস্যার সৃষ্টি হবে।’

গত মাসে নিপকোর দায়িত্ব পাওয়া পঙ্কজ বলেন, ‘কিছু তথাকথিত পরিবেশবাদী ও বেসরকারি সংস্থা গত কয়েক বছর ধরে এ প্রকল্পের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে আসছে এবং মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে।’

আশঙ্কার কথা দূরে ঠেলে তিনি বলেন, ‘১৭০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয়ের এ প্রকল্পটির বাস্তবায়নে মাত্র ৭৪টি পরিবারকে অন্যত্র পুনর্বাসন করতে হবে।’

মনিপুরের পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা চুড়াচান্দপুরে বরাক নদীর ওপর প্রকল্পটির অবস্থান। বাংলাদেশের বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠন, সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এর বিরোধিতা করে আসছে। তাদের অভিযোগ, এ প্রকল্পের আওতাধীন নির্মিতব্য বাঁধটির ফলে বাংলাদেশের কুশিয়ারা ও সুরমা নদী দুটির প্রবাহে ব্যাপক প্রভাব পড়বে এবং এর ফলে সিলেট অঞ্চল মরুভূমিতে পরিণত হবে।

উল্লেখ্য, বরাক নদীটি ভারতের মনিপুর রাজ্যের কাছার পর্বতে উৎপন্ন হয়ে মনিপুর, আসাম, মিজোরামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে অমলসিধের কাছে সুরমা ও কুশিয়ারা নামে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বরাকের উজানের অংশটি ভারতের আসাম ও মনিপুর রাজ্যে বিস্তৃত। আর এর ভাটির প্লাবন সমভূমি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে।

বাংলাদেশের বিরোধীদলী নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া টিপাইমুখ প্রকল্পটির নির্মাণকাজ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের কাছে একটি চিঠিও লেখেন।

গত বছর জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তিনদিনের সফরে দুই দেশের যৌথ ইশতেহারে বলা হয়, ‘ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং বারবার নিশ্চয়তা দিয়ে বলেছেন, টিপাইমুখ প্রকল্প নিয়ে ভারত সরকার এমন কোনো পদক্ষেপ নেবে না, যা বাংলাদেশের ক্ষতির কারণ হয়।’

এছাড়া ২০০৯-এর জুলাইয়ে বাংলাদেশের ১০ সদস্যের একটি সংসদীয় প্রতিনিধি দল টিপাইমুখ বাঁধ পরিদর্শন করেন।

ভারতের কেন্দ্রীয় জ্বালানিমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্ডে সেসময় বাংলাদেশি প্রতিনিধি দলকে বলেছিলেন, টিপাইমুখ প্রকল্পটি কোনো সেচ প্রকল্প নয় বা পানি প্রবাহের গতিপথ পরিবর্তনেরও কোনো পরিকল্পনা নেই এ প্রকল্পে।

সুশীল কুমার শিন্ডে আরও বলেছিলেন, জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি বাংলাদেশের স্বার্থের কোনো ক্ষতি করবে না। মনিপুরের সরকারি জ্বালানি বিভাগের একজন কর্মকর্তা ইমফলে এ তথ্য জানান।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণ বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিপু মনিকে বলেন, ভারত তার প্রতিবেশির কোনো ক্ষতি করবে না।

নিপকোর জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলী টিসি বর্ঘাইন বলেন, প্রকল্পটি বাংলাদেশের সিলেট, ভারতের মনিপুরে পশ্চিম ও আসামের দক্ষিণাঞ্চলে অতিরিক্ত পানির প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করবে। তিনি বলেন, এটি পশ্চিমবঙ্গের হালদিয়া বন্দর থেকে বাংলাদেশ হয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পানির নতুন প্রবাহ সৃষ্টি করবে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত পানি আবারও নদীতে ফিরিয়ে দেওয়া হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে মনিপুরের কয়েকশ পরিবার তাদের বাস্তুভিটা উচ্ছেদ হবে। এতে মনিপুরে টিপাইমুখ বাঁধবিরোধী তীব্র ক্ষোভ রয়েছে। এখানকার বিভিন্ন এনজিও ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা প্রকল্পের বিরুদ্ধে মিছিল সমাবেশ করে আসছে।

ইমফলভিত্তিক সিনলুং ইনডিজেনাস পিপল হিউম্যান রাইটস অর্গারেশনের জানিয়েছে, ‘এ প্রকল্পে আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে অবজ্ঞা করা হয়েছে। এছাড়া বাঁধসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক কমিশনের সুপারিশ মেনে চলা হয়নি।’



BanglaNews24
Reply With Quote