June 9, 2011, 10:03 PM
|
|
Cricket Legend
|
|
Join Date: February 3, 2011
Favorite Player: ShakTikMashNasir(ShakV2)
Posts: 2,024
|
|
বড় একটা কাঠের ক্যানভাস। তাতে ২০১১ বিশ্বকাপের সব অধিনায়কের পেইন্টিং। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের সিঁড়ির ল্যান্ডিংয়ে ঝোলানো এই ছবিটিকে ঘিরে ১০-১১ বছর বয়সীদের জটলা। জটলায় মৃদু তর্ক। সাকিব, ভেট্টোরি, ধোনি বা আফ্রিদিদের সবাই চিনছে। তর্কটা কানাডা, হল্যান্ডের অধিনায়কদের চেনা না-চেনা নিয়েই।
সিঁড়ি ভেঙে দোতলায় উঠে আবারও থমকাতে হলো। যেন বিয়েবাড়ির উৎসব! চিৎকার-চেঁচামেচি, হইহুল্লোড়। কচিকাঁচার ভিড়টা ওপরতলার গ্যালারিতেই বেশি, উৎসবের ঢেউও। লোহার রেলিংয়ে বাঁধা বেলুনের সারি। একটু পর ঠাস ঠাস করে ফুটতে লাগল সেগুলো। উৎসবমুখর পরিবেশ তাতে একটুও রং হারাল না। কৈশোরের উচ্ছলতার সামনে এমন লোভনীয় রঙিন বেলুন বেশিক্ষণ টিকে থাকাটাই তো অস্বাভাবিক!
মাঠে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড আন্তস্কুল ক্রিকেটের জমজমাট ফাইনাল খেলল চট্টগ্রাম পুলিশ ইনস্টিটিউট স্কুল ও পটুয়াখালীর ডনোভান সেকেন্ডারি স্কুল। শেষ ওভারে নিষ্পত্তি হওয়া ম্যাচ ৫ রানে জিতে চ্যাম্পিয়ন চট্টগ্রামের স্কুলটা। মাঠের বাইরের পরিবেশ জমিয়ে রাখল খেলা দেখতে আসা ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন স্কুল আর একাডেমির ছাত্ররা। মায়ের সঙ্গে মাঠে আসা সাহাদ ইসলাম মুগ্ধ তাদেরই একজন। ক্রিস গেইল তার প্রিয় ব্যাটসম্যান, লাসিথ মালিঙ্গা প্রিয় বোলার। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম খেলা দেখা কি না—জানতে চাইলে ছোট্ট মুখটা গম্ভীর হয়ে গেল, ‘না, আগেও এসেছি। বিশ্বকাপে বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা দেখেছি।’
নিজেরা খেলছে না, অনেকের স্কুলও হয়তো খেলছে না, উৎসাহের তবু কমতি নেই। আসা-যাওয়ার পথে আকরাম খান, মিনহাজুল আবেদীন বা হাবিবুল বাশারদের কেউ সামনে পড়ে গেলে করমর্দনের সুযোগ। খুদে ক্রিকেটাররা যেন এক দিনের জন্য ঢুকে পড়েছে রূপকথার কোনো চিত্রনাট্যে!
চট্টগ্রাম পুলিশ ইনস্টিটিউট স্কুলের কাছে সেই রূপকথাটাই দিন শেষে বাস্তব। স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক কাম কোচ প্রণব দেবদাস যে বললেন, ক্রিকেটের প্রতি তারা যথেষ্টই সিরিয়াস, সেই ছাপ শরিফুল ইসলাম-আরাফাত খানদের খেলায়। হোম অব ক্রিকেট থেকে শিরোপা নিয়ে ফিরতে পেরে দারুণ খুশি অধিনায়ক শরিফুল। খুশির আরেকটা কারণ, বড়দের ক্রিকেটেই ক্রমেই পিছিয়ে পড়া চট্টগ্রামকে অন্তত ছোটদের ক্রিকেটে তো সেরা করা গেল!
একই আনন্দ ম্যান অব দ্য ম্যাচ আরাফাত খানেরও। ১২৭ রানে ৪ উইকেট পড়ার পরও যে চট্টগ্রামের স্কুলটি ২২৮ রান করতে পারল, শরিফুল (৪৫) ছাড়াও তাতে বড় অবদান দুই ছক্কা আর তিন বাউন্ডারিতে ৬১ বলে ৫৯ রান করা আরাফাতের। এই বয়সেই হাতে ভালো স্ট্রোক, বুকে সাহস। ম্যাচসেরার ট্রফি হাতে আবেগাপ্লুত অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র আরাফাত, ‘অনেক দিন পর চট্টগ্রামের কোনো স্কুল শিরোপা জিতল। সেজন্যই বেশি খুশি লাগছে।’
হারলেও খুব বেশি মন খারাপ করার কারণ নেই পটুয়াখালীর ডনোভান সেকেন্ডারি স্কুলের ক্রিকেটারদের। সীমিত সুযোগ-সুবিধার মধ্যেও ফাইনালে উঠে মঞ্জুরুলের লড়াকু ৬০ রানের সৌজন্যে শেষ ওভার পর্যন্ত শিরোপার সম্ভাবনা জাগিয়ে রাখাও কি কম! দলের ব্যাটসম্যান ফারুক জানাল, স্কুলের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। মাঠ থাকলেও সরঞ্জামের অভাব। নিজেদের টাকায় কেনা বা অন্যের কাছ থেকে ধার করে আনা ব্যাট-বলে চলে তাদের ক্রিকেট। জেলা ক্রীড়া সংস্থা থেকে পাওয়া সাহায্য বলতে বিভাগীয় পর্যায়ে ওঠার পর সংস্থার কোচ শ্যামল সরকারকে দলের সঙ্গে দেওয়া। এত সীমাবদ্ধতার মধ্যেও সারা দেশের ৫৪০টি স্কুলকে নিয়ে শুরু টুর্নামেন্টে টানা সাত ম্যাচ জিতে ফাইনালে।
জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতা শেষে বিভাগীয় পর্যায়ে খেলেছে ৬৪ জেলার চ্যাম্পিয়নরা। সেখান থেকে জাতীয় পর্যায়ে খেলেছে সাত বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন ও ঢাকা মহানগরের আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নসহ ৮টি দল। বিসিবির গেম ডেভেলপমেন্ট বিভাগের উপব্যবস্থাপক শরীফ মাহমুদ জানালেন, স্কুল ক্রিকেট নিয়ে এখানেই শেষ নয় তাদের পরিকল্পনা, ‘আমরা এই টুর্নামেন্ট থেকে ১৫০ জন প্রতিভাবান খেলোয়াড় বাছাই করেছি। এখান থেকে বাছাই করে আমরা ১৫-১৬ জনের একটা সম্মিলিত স্কুল দল করব।’
SOURCE
|