View Single Post
  #39  
Old February 14, 2012, 01:55 AM
idrinkh2O's Avatar
idrinkh2O idrinkh2O is offline
Test Cricketer
 
Join Date: April 9, 2011
Favorite Player: Performing Tigers
Posts: 1,879
Default His last interview!

His last interview from prothom-Alo!

প্রথম আলোকে দেওয়া ফরীদির শেষ সাক্ষাত্কার
‘আনন্দে ছিলাম, আনন্দে আছি, আনন্দে থাকব’| তারিখ: ১৩-০২-২০১২

মঞ্চ-টিভি-বড়পর্দার শক্তিমান অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি চলে গেলেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ধানমন্ডিতে মেয়ের বাসায় তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬০ বছর। ২০১১ সালের ৪ জুন প্রথম আলোর সাপ্তাহিক ক্রোড়পত্র ‘ছুটির দিনে’ হুমায়ুন ফরীদির এক সাক্ষাত্কার প্রকাশিত হয়েছিল। প্রথম আলোর পাঠকদের জন্য সাক্ষাত্কারটি আবারও প্রকাশ করা হলো। সাক্ষাত্কারটি নিয়েছিলেন জাহীদ রেজা নূর।

সদ্য ষাট পূর্ণ করলেন অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি। মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে তাঁর অভিনয় আমাদের সাংস্কৃতিক অর্জনকে দিয়েছে উজ্জ্বল মাত্রা।

লিফটের তিনে পৌঁছে কলবেলে হাত রাখার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ঘরের দরজা খুলে দিলেন হুমায়ুন ফরীদি। বাড়িতে তিনি একা। বসার ঘরটি অনাবশ্যক আসবাবের বাহুল্যমুক্ত, ছিমছাম। দেয়ালে টাঙানো সুলতানের আঁঁকা পেশিবহুল মানুষের ছবিটি পরিশ্রম ও মেধার যুগলবন্দী।

একটু পরই তাঁর বন্ধুরা চলে আসবেন। আড্ডা চলবে আর আবহমান ছবিটি দেখা হবে। সুতরাং সময় কোথায় সময় নষ্ট করবার? শুরুতেই ষাটে পৌঁছানোর অভিনন্দন আর বেয়াড়া প্রশ্ন, ‘ষাটে তো পৌঁছে গেলেন। অভিনয় করে পেলেন কী? কোনটাকে অর্জন বলবেন?’

‘আমি তো অভিনয় ছাড়া আর কিছু শিখিনি। প্রতিনিয়ত অভিনয় করতে করতে নতুন নতুন চরিত্র আবিষ্কার করা, মানুষের ভালোবাসা পাওয়া, অর্জন বলতে এটাই। সেদিন একটা ঘটনা দেখে আমি খুবই মোহিত হয়েছি। একটা দোকানে ঢুকেছি, ডিম না কি যেন কিনতে। সেখানে এক তরুণ বয়স কত হবে, পঁচিশ-ছাব্বিশ। আমাকে দেখে সিগারেটটা লুকিয়ে ফেলল। এই যে সম্মান, শ্রদ্ধাবোধ—এটা একটা বিশাল অর্জন। এটা আমি অভিনয় করেই পেয়েছি। আমি যদি অন্য কোনো পেশায় থাকতাম, তাহলে কি তা সম্ভব ছিল?’

আপনি এক সাক্ষাত্কারে বলেছিলেন, সব সময় আনন্দে থাকতে চান। সেটা কি পারেন?

‘একটা মানুষ সারাক্ষণ আনন্দে থাকবে, তা তো হয় না। কিন্তু অধিকাংশ সময় আনন্দে থাকতে চাই, আনন্দে ছিলাম, আনন্দে আছি, আনন্দে থাকব। তার কারণ আমার তেমন চাহিদা নেই। যার লোভ আছে, তার আনন্দ নেই।’

ফরীদি, আপনার লোভ নেই? আপনার চাহিদা কম? তাহলে মঞ্চনাটক ছেড়ে সিনেমার দিকে ঝুঁকলেন কেন? আপনার কথাগুলোর বৈপরীত্য এড়াবেন কী করে—এ ধরনের প্রশ্ন করার কথা ভাবছি যখন, তখন ফরীদিই বিষয়টি খোলাসা করলেন।

‘পঁচাশি সাল পর্যন্ত চাকরি করেছিলাম। একসময় দেখলাম, আমি চাকরি করতে পারি না, ব্যবসা করতে পারি না। একটা জিনিসই মোটামুটি পারি, অভিনয়। অভিনয়ই হতে পারে আমার আয়-রোজগারের একমাত্র উপায়। তখন টেলিভিশনে নাটক করে আয়-রোজগার করা সম্ভব ছিল না। যাত্রা আর চলচ্চিত্র—এই দুটো মাধ্যমে কাজ করলে আয় হবে। কাকতালীয়ভাবে সে সময় একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করার প্রস্তাব এল। খলনায়ক চরিত্রে। ছবির নাম সন্ত্রাস, পরিচালক শহীদুল ইসলাম খোকন। এভাবেই চলচ্চিত্রে আসা। অভিনয় করে বাঁচতে হলে তখন চলচ্চিত্রে কাজ করা ছাড়া উপায় ছিল না। এখন টেলিভিশনে অভিনয় করে জীবনযাপন করা সম্ভব। সেই কারণে আমি চলচ্চিত্রে অভিনয় করা প্রায় ছেড়ে দিয়েছি। যেগুলো মনের মধ্যে দাগ কাটছে, স্ক্রিপ্ট পছন্দ হচ্ছে, সেগুলো করছি। এখন শুধু টাকার জন্য অভিনয় করা—ওই জায়গাটা নাই।’

আমরা কথা বলছি, সদ্য ষাটে পা দেওয়া অসাধারণ এক অভিনেতার সঙ্গে, মঞ্চ, টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রে যার অভিনয় আমাদের সাংস্কৃতিক অর্জনকে দিয়েছে এক উজ্জ্বল মাত্রা।


২.
একটু পিছিয়ে যাই, সাতাত্তরের ফরীদির কাছে। তখন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তিনি। এর আগের বোহেমিয়ান জীবনের বর্ণনা না দিয়ে কেবল এটুকু বলাই ভালো, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও উড়নচণ্ডী স্বভাবের কারণে ব্রেক অব স্টাডি হলো পাঁচ বছরের। বিশ্ববিদ্যালয় কি তাঁকে আর ফিরিয়ে নেবে? রেজাল্ট ছিল ভালো। চেষ্টা করলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সুযোগও পেয়ে গেলেন অর্থনীতি বিভাগে। এরপর আন্তহল নাটক প্রতিযোগিতায় লিখে ও নির্দেশনা দিয়ে প্রথম হলেন। সেখানেই বিচারক হয়ে আসা নাসিরউদ্দিন ইউসুফের সঙ্গে পরিচয়। এই পরিচয়ের সূত্র ধরেই ঢাকা থিয়েটারে যাওয়া-আসা। টুকটাক ফাইফরমাশ খাটা। সে সময় ঢাকা থিয়েটার পথনাটক করছিল। চর কাঁকড়ার ডকুমেন্টারি ছিল ঘূর্ণিঝড়ের পটভূমিতে তৈরি পথনাটক। সে নাটকে দারুণ অভিনয় করেছিলেন হাবিবুল হাসান। মঞ্চ করেছিলেন আফজাল হোসেন। খবরের কাগজ জোড়া লাগিয়ে তৈরি হয়েছিল সেটা। সেটি ভেঙেই বেরিয়ে আসতেন হাবিব, মনে হতো খবর থেকে বেরিয়ে এসেছে চরিত্রটা। এই পথনাটকে প্রোডাকশনে কাজ করলেন ফরীদি। এরপর সংবাদ কার্টুনে ছোট্ট একটি চরিত্রে বিকল্প হিসেবে মঞ্চে উঠলেন। নাট্যকার সেলিম আল দীন তো আল বেরুনী হলের হাউস টিউটর। তিনিই একদিন ফরীদিকে বললেন, একটু আয় তো!

শকুন্তলার দ্বিতীয় পর্ব পড়ে শোনালেন সেলিম। ভাষা-শব্দ চয়নে স্তম্ভিত ফরীদি। নাসিরউদ্দিন ইউসুফের নির্দেশনায় এই নাটকেই সর্পরাজ তক্ষকের ভূমিকায় অভিনয় করলেন তিনি। সে সময় ঢাকা থিয়েটার তারকাখচিত দল। আছেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, আফজাল হোসেন, সুবর্ণা মুস্তাফা, জহিরউদ্দিন পিয়ার ও হাবিবুল হাসান। সে দলেই নাম লেখালেন ফরীদি। এরপর শুধু এগিয়ে যাওয়ার কাহিনী। শকুন্তলার পর ফণীমনসা। তারপর কিত্তনখোলা, কেরামত মঙ্গল। নতুন করে শুরু হওয়া সংবাদ কার্টুন, মুনতাসীর ফ্যান্টাসি। গ্যেটে ইনস্টিটিউটের সঙ্গে ধূর্ত উই, একটিই পাত্র পথনাটক বাসন। নির্দেশনা দিলেন ভূত নাটকে। ঢাকা থিয়েটারের সঙ্গে সেটাই শেষ কাজ ফরীদির। আর ধূর্ত উইতে শেষ মঞ্চ-অভিনয়।

সে সময় যাঁরা মঞ্চনাটক দেখেছেন, তাঁরা জানেন, কী অসাধারণ এক স্বর্ণযুগ ছিল আমাদের নাটকের ইতিহাসে। কত ধরনের নিরীক্ষা আর কত নিবেদিতপ্রাণ অভিনয়, নির্দেশনা!

৩.
মঞ্চে হুমায়ুন ফরীদির সবচেয়ে প্রিয় চরিত্র কিত্তনখোলার ছায়ারঞ্জন। যাত্রাপালায় কাজ করার অভিজ্ঞতা আগেই ছিল, সেটা কাজে লাগিয়ে ছায়ারঞ্জন চরিত্রটিকে তিনি পৌঁছে দিলেন অন্য এক মার্গে। কেরামত চরিত্রটিও ছিল খুব চ্যালেঞ্জিং।

সোফায় হাতের ওপর হাত রেখে বসা ফরীদিকে বলি, ‘মঞ্চে আর কাজ করবেন না?’

উত্তর প্রস্তুত ছিল, ‘মঞ্চে আর অভিনয় করব না। মঞ্চে কাজ করতে গেলে অনেক শক্তি লাগে। ওই শক্তি আমার আছে, কিন্তু অভিনয় করার জন্য যতটুকু শক্তি লাগে, তার চেয়ে একটু বেশি শক্তি থাকা উচিত মানুষের। সেটুকু আমার নেই।’

আমরা বুঝতে পারি, মঞ্চে ফরীদি-পর্বের অবসান ঘটেছে। নতুন অভিনয়শিল্পীরা এই অসাধারণ অভিনয়শিল্পীকে মঞ্চে দেখবেন না কখনো। মন একটু খারাপ হয় বৈকি। এ কারণেই পরের প্রশ্নটি। ফরীদি ভাই, কীভাবে শিখবে নতুন অভিনয়শিল্পী? আপনার অভিজ্ঞতা কীভাবে পৌঁছে দেবেন নবীনের কাছে?

‘অভিনয় শেখার জন্য সবচেয়ে বড় ক্লাসরুম হচ্ছে শিশুদের দেখা। শিশুদের আচরণের মধ্যে কোনো ধরনের ভান নেই। ওরা যেটা অনুভব করে, সেটাই প্রকাশ করে। কার্টুন ছবি দেখাও অভিনয় শেখার জন্য কাজে লাগবে। আর অগ্রজ যাঁরা ভালো অভিনেতা, তাঁদের জীবনযাপনের যে রীতি, তাঁরা অভিনয়ের জন্য যে কৌশলগুলো করেন, সেগুলো রপ্ত করলে ভালো অভিনেতা হওয়া যাবে।’

৪.
টেলিভিশন নাটক নিয়ে কথা বলি আমরা। ভালো কাজ কি হচ্ছে?

উত্তর দেন ফরীদি। ‘ভালো মাপের নাটক কম হচ্ছে। অধিকাংশ নাটকই খারাপ। নাটকের নামই তো পছন্দ হচ্ছে না। কী সব সিরিয়াল তৈরি হচ্ছে, অদ্ভুত তাদের নাম। যেটার সঙ্গে বাংলা সাহিত্য বা শিল্পের কোনো সম্পর্ক নাই। বিচ্ছিরি নাম।’

সেসব নাটকে আপনি অভিনয় করছেন?

‘না’। প্রায় চিত্কার করেই ‘না’ বলা। ‘প্রশ্নই আসে না। আমি ভালো দিকেই আছি। খারাপ হতে চাই না।’

সেই সব পাঠককে আবার স্মরণ করিয়ে দিই সেই সময়ের কথা, যখন এই বঙ্গ দেশটিতে বিটিভি নামে একটিমাত্র টেলিভিশন চ্যানেল ছিল এবং দর্শক-শ্রোতারা সেই একটিমাত্র চ্যানেলের সাপ্তাহিক নাটক দেখার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকত। যারা সে সময় টেলিভিশন দেখেনি, তাদের বলি, হঠাত্ একদিন আয়না ধারাবাহিকে ভাঙনের শব্দ শুনি পর্বে সেরাজ তালুকদারের চরিত্রে হুমায়ুন ফরীদির অভিনয় দেখে বিস্ময়-বিমূঢ় হয়ে গেল দর্শক। খল চরিত্রে সাবলীল অভিনয় করে নায়ক বা তারকা বনে গেলেন ফরীদি। এর আগে অবশ্য নিখোঁজ সংবাদ, সেতুকাহিনী, চোরকাঁটা, ছিনিমিনি, সে সহ বেশ কিছু নাটকে অভিনয় করে ফেলেছেন তিনি। প্রচলিত ধারায় নায়ক বলতে চেহারার যে ধারণা আছে, তা ফরীদিই ভেঙে দিলেন। আরও একটি ঘটনা জানিয়ে রাখি, টেলিভিশনে নিখোঁজ সংবাদ নাটকটির মূল চরিত্রের জন্যই প্রযোজক আতিকুল হক চৌধুরী ফরীদির কথা ভেবেছিলেন। ফরীদি বলে দিলেন, মূল চরিত্রটি তিনি করবেন না, করবেন মোটে এক সিনে থাকা এক বিপ্লবী ছেলের চরিত্র। সেটাতেই রাজি হতে হলো প্রযোজককে। অডিশন নিয়েও ঘাপলা। ফরীদি অডিশন দিলেন না। টিভি নাটকে ফরীদিই সম্ভবত প্রথম অডিশন ছাড়া শিল্পী।

বলছিলাম সেরাজ তালুকদার চরিত্রটির কথা। ফরীদির কণ্ঠে ‘আমি তো জমি কিনি না, ফানি (পানি) কিনি’ সংলাপটা তখন ছিল মানুষের মুখে মুখে। এ সময় কী হয়? একই ধরনের চরিত্রের জন্য বারবার ডাকা হয় শিল্পীকে। শিল্পী টাইপড হয়ে যেতে সময় নেন না। কিন্তু এরপর কয়েক বছর ফরীদি আর লুঙ্গি পরেই অভিনয় করেননি।

এ সময় অ্যাডগার অ্যালান পোর ফল অব দ্য হাউস অব আশার অবলম্বনে শেষ বংশধর নাটকের মূল চরিত্রে অভিনয় করলেন। গ্রন্থিকগণ কহের গজেন্দ্র, কোথাও কেউ নেই নাটকের উকিলের চরিত্র এবং সংশপ্তকের কানকাটা রমজান ফরীদিকে আলোচনায় রাখল দীর্ঘকাল।

নাটকের আলোচনার মধ্যেই ফরীদি সম্পর্কে আল মনসুরের একটি মূল্যায়নের কথা বলি—আল মনসুর বলছেন, ‘এ মাটিতে জন্ম নেওয়া সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ চির উজ্জ্বল অভিনেতা হলো হুমায়ূন ফরীদি।’ কীভাবে আল মনসুর সমসাময়িক একজন শিল্পীকে এভাবে ঈর্ষাহীন মূল্যায়ন করতে পারলেন?
‘বেলাল ভাই তো মানুষ। একটা মানুষ সত্য কথা বলবে না? প্রাণ খুলে কথা বলবে না?’

এখনো কি সেই পরিবেশটা আছে?

‘কমে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে বলি। তিন ধরনের শিল্পী আছে পৃথিবীতে। ভালো শিল্পী, বিপদগ্রস্ত শিল্পী, অশিল্পী। বিপদগ্রস্ত শিল্পী সব সময় মনে করে এই বুঝি আমি পড়ে গেলাম। এ কথা মনে করার দরকার নেই তো! চরিত্রটা ঠিক মতো করো। বেশি কাজ করার দরকার কি? মাসে ২০ দিন কাজ করলেই যথেষ্ট। আমাদের টিভি নাটকে এখন তাড়াহুড়া ঢুকে গেছে। এই তাড়াহুড়াটা বন্ধ করতে হবে। না হলে হঠাত্ করেই এরা পড়ে যাবে। একই ধরনের বৈচিত্র্যহীন অভিনয় করে যাবে। এখনকার শিল্পীরা ত্রস্ত। দৌড়াচ্ছে। এই দৌড়টা বন্ধ করে হেঁটে যাও। টাকার পেছনে না ছুটে ভালো অভিনয় করো। টাকা আপনিই আসবে। আগে শিল্পী হতে হবে তো!’

ষাটে এসে জীবনটা কেমন লাগছে?

‘চল্লিশে জীবন নতুন করে শুরু হয়। ষাটে জীবনটা আরও সুন্দর হয়। ওটা আরও সুন্দর হবে যদি মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ইন্টারনেট, ফেসবুক না থাকে। এগুলো মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগের মাধ্যমকে নষ্ট করে দেয়। আগে যদি তোমাকে আমার প্রয়োজন থাকত, তবে আমি তোমার বাড়িতে যেতাম। খালাম্মা হয়তো বলতেন, ও ওইখানে গেছে। আমি হয়তো হেঁটে হেঁটে সেখানে যেতাম। সেখানে দেখা হতো, কথা হতো, আড্ডা হতো। এখন তো আড্ডাই নাই। আড্ডা হয় কোথাও? আড্ডা ছাড়া মানুষ সম্পূর্ণ হয় না। জাহাঙ্গীরনগরে তো পুরোটাই, চার বছর কাটিয়েছি আড্ডায়। এই একজীবনে আমি কোনো কাজ অসত্ভাবে করিনি। সে টেলিভিশনে হোক, মঞ্চে হোক, জীবনযাপনে হোক। আমার যখন জ্ঞান হয়েছে, তখন থেকেই বিবেচনাবোধ কাজ করেছে। এখন আমার বাড়িতে আড্ডা হচ্ছে। বন্ধুরা আসছে। জুনিয়ররা বেশি আসে। রাজনীতি, সমাজনীতি, সাহিত্য, দর্শন, ব্যাকরণ, উচ্চারণ—সব নিয়েই আড্ডা হয়।

কোন চরিত্রে অভিনয় করেননি অথচ করার জন্য উন্মুখ হয়ে আছেন?

‘কিং লিয়র। বুঝছ, অভিনয় প্রচণ্ড পরিশ্রমের ব্যাপার। আমি তো স্ক্রিপ্ট নিই ছয়-সাত দিন আগে। তারপর মাথার মধ্যে বুনতে থাকি। অভিনয় হয়ে যাওয়ার পরও মনে হয়, ওই জায়গাটা ওই রকমভাবে করলে ভালো হতো। অতৃপ্তি থেকে যায়। কিং লিয়র করার ইচ্ছা আমার আছে।’
আলাপ শেষে ফিরব। বিদায় বেলায় নিজেই দরজা খুলে দিলেন ফরীদি। ষাট বছর বয়স তখন তাকে স্পর্শ করছে না, শিল্পীর চিরতারুণ্যই দৃশ্যমান।
__________________
-- Alwayz with !!! Champions are made from something they have deep inside them - a desire, a dream, and a vision!
-- Bangladesh are the Runners-up in the 2012 ASIA Cup!

Last edited by shuziburo; February 15, 2012 at 12:41 PM.. Reason: Mod edit. Please add bangla tag (the awe, left of B) while posting Bangla articles.
Reply With Quote