View Single Post
  #3  
Old November 23, 2011, 09:08 AM
WarWolf WarWolf is offline
Cricket Guru
 
Join Date: March 3, 2007
Favorite Player: Love them all....
Posts: 14,685

টিপাই চুক্তির প্রতিবাদে ক্ষোভে ফুঁসছে সিলেট : প্রতিমন্ত্রী বললেন, এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়

টিপাইমুখ বাঁধ ও জলবিদ্যুত্ প্রকল্প নির্মাণে চুক্তির প্রতিবাদে ক্ষোভে ফুঁসছে সিলেট। নিন্দা ও প্রতিবাদমুখর রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর নীরবতায় বিক্ষুব্ধ সবাই।
ওদিকে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আলহাজ মাহবুবুর রহমান মুখ খুলেছেন গতকাল। তিনি বলেছেন, টিপাইমুখে বাঁধ নির্মাণ ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এটা নিয়ে বাংলাদেশের করার কিছু নেই। গতকাল একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেয়া সাক্ষাত্কারে তিনি এসব মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের এমন কোনো সমঝোতা চুক্তি নেই, যে চুক্তির আওতায় তারা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় সম্পর্কে আমাদের জানাবে।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘টিপাইমুখে বাঁধ দেয়া নিয়ে ভারতকে বিরত থাকতে বলা পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নয়। কারণ, ভারতের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কাজ করে। এ বিষয়ে প্রয়োজনে তারাই কথা বলবে।’
তিনি বলেন, টিপাইমুখে বাঁধ দেয়ার বিষয়টিকে রাজনৈতিক ইস্যু বানানোর চেষ্টা চলছে। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকেই একটি পক্ষ এটাকে ইস্যু করতে চাইছে। প্রতিমন্ত্রীর ভাষায়, ‘এই কাজটি যত না দেশপ্রেমের টানে করা হচ্ছে, তারচেয়ে বেশি রাজনৈতিক ফায়দা লুটতেই করা হচ্ছে।’
এদিকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুরের বরাক নদীর ওপর টিপাইমুখ বাঁধ ও জলবিদ্যুত্ নির্মাণে চুক্তি সইয়ের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে সিলেটের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন সংগঠন। প্রতিবাদে সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে ভারত সরকার টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ চুক্তি সই করেছে। বিস্তারিত সিলেট অফিসের পাঠানো খবরে।
টিপাইমুখ বাঁধ প্রতিরোধ আন্দোলনের বিক্ষোভ : টিপাইমুখ বাঁধ প্রতিরোধ আন্দোলন সিলেট গতকাল বিকালে এক বিক্ষোভ মিছিল বের করে। কোর্ট পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি জিন্দাবাজার সড়ক অতিক্রম করে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। মিছিলে অ্যাডভোকেট বেদানন্দ ভট্টাচার্য, ব্যারিস্টার আরশ আলী, জেলা বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ, শহীদুল ইসলাম শাহীন, সিকান্দর আলী, আবুল হোসেন প্রমুখ নেতৃত্ব দেন।
সিলেট জামায়াতের প্রতিবাদ সভা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের অন্যতম সদস্য সিলেট মহানগরীর আমির অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্বল ও নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে ভারত সরকার মরণফাঁদ টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ চুক্তিতে সই করেছে। ভারত চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছে এবং প্রমাণ করেছে প্রকৃত পক্ষে তারা বাংলাদেশের বন্ধু নয়।
গতকাল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সিলেট মহানগর, জেলা দক্ষিণ ও জেলা উত্তরের উদ্যোগে ভারত সরকার কর্তৃক টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের চুক্তিতে সই করার প্রতিবাদে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মহানগর সেক্রেটারি সিরাজুল ইসলাম শাহীনের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন মহানগর নায়েবে আমির ডা. সায়েফ আহমদ, জেলা দক্ষিণ আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, নায়েবে আমির অধ্যক্ষ আবদুল হান্নান, সেক্রেটারি মুক্তিযোদ্ধা মতিউর রহমান, জেলা উত্তর জামায়াতের আমির হাফেজ মাওলানা আনোয়ার হোসাইন খান, সেক্রেটারি উপাধ্যক্ষ সৈয়দ ফয়জুল্লাহ বাহার, মহানগর সহকারী সেক্রেটারি ফখরুল ইসলাম, মাওলানা সোহেল আহমদ প্রমুখ।
বাসদের মিছিল : গতকাল বাসদ সিলেট জেলার উদ্যোগে জিন্দাবাজার দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের করে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কোর্ট পয়েন্টে এসে শেষ হয়। মিছিলের আগে দলীয় কার্যালয়ে এক কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন জেলা আহ্বায়ক উজ্জ্বল রায়। বক্তব্য রাখেন বাসদ সিলেট জেলা সদস্য অ্যাডভোকেট হুমায়ুন রশীদ সোয়েব, শ্রমিক ফ্রন্ট জেলা সাধারণ সম্পাদক সুশান্ত সিনহা, ছাত্রফ্রন্ট নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ ভট্টাচার্য প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, ভারত বাংলাদেশকে না জানিয়ে গোপনভাবে এ চুক্তি করল, যা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। অথচ বাংলাদেশ সরকার এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, যা সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতিরই নির্লজ্জ বহিঃপ্রকাশ।
মুক্তস্বরের মানববন্ধন : সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করেছে মননশীল তরুণদের সংগঠন মুক্তস্বর সাংস্কৃতিক ফোরাম। গতকাল বিকাল ৪টায় অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা, পেশাজীবী ও ছাত্র-জনতা স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেন।
গতকাল শহীদ মিনারে মানববন্ধন-পূর্ব সমাবেশে বক্তারা বলেন, টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের জন্য যে কোনো ধরনের চুক্তি করার আগে বাংলাদেশকে জানানোর প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও তা মানেনি ভারত। মনমোহন সিং অঙ্গীকার করেছিলেন টিপাইমুখে এমন কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে না, যাতে বাংলাদেশের ক্ষতি হয়। কিন্তু তিনি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। টিপাইমুখ বাঁধ বাংলাদেশের জন্য সর্বনাশ ডেকে আনবে।
সংগঠনের সভাপতি আবুযর রেজওয়ানের সভাপতিত্বে ও সম্পাদক ফায়যুর রাহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন-পূর্ব সমাবেশে বক্তৃতা করেন সিলেট কল্যাণ সংস্থার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিয়াউর রহমান, রোটারেক্ট ক্লাব অব লিডিং ইউনিভার্সিটি সাবেক প্রেসিডেন্ট আলী হোসেন সুমন, রয়েল ক্লাব অব সিলেট সিটির প্রেসিডেন্ট আইনুল হক রাব্বী, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নিয়াজ আহমদ খান, লিডিং ইউনিভার্সিটির ছাত্র সাজ্জাদ হোসেন, সিলেট কল্যাণ সংস্থার সদস্য সচিব আলী আহসান হাবীব, যুগ্ম সদস্য সচিব শাহআলম, সিলেট ইয়েলো পেইজেস লিমিটেডের এমডি মমিনুল হক প্রমুখ।
একতরফা সিদ্ধান্ত বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে : জামায়াত
টিপাইমুখ বাঁধ ও পানিবিদ্যুত্ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভারত সরকারের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ। বাংলাদেশের বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবেচনা করে টিপাইমুখ বাঁধ ও পানিবিদ্যুত্ কেন্দ্র নির্মাণের ব্যাপারে ভারতের একতরফা সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে তা বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। গতকাল দলের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদের সভাপতিত্বে নির্বাহী পরিষদের এক বৈঠকে এ আহ্বান জানানো হয়।
নির্বাহী পরিষদের বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, ভারত আন্তর্জাতিক বরাক নদীর ওপর বৃহদাকার টিপাইমুখ পানিবিদ্যুত্ প্রকল্প বাস্তবায়নের কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে। এ লক্ষ্যে ভারত সরকার আনুষ্ঠানিক চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে। টিপাইমুখ বাঁধ ও পানিবিদ্যুত্ কেন্দ্র নির্মাণে ভারতের একতরফা সিদ্ধান্তের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারের রহস্যজনক নীরবতায় দেশবাসী ক্ষুব্ধ। টিপাইমুখ বাঁধ ও পানিবিদ্যুত্ কেন্দ্র নির্মাণ করা হলে বাংলাদেশের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। এর ফলে বাংলাদেশের কৃষি উত্পাদন ব্যাপক হারে কমে যাবে। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বৃহত্তর সিলেট, ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লাসহ ১২টি জেলা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য ও আবহাওয়ার পরিবর্তন হবে। এতে বাংলাদেশের জনগণ ব্যাপকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হবে। ফারাক্কা বাঁধের কারণে যেমন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলসহ গোটা এলাকা মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে, তেমনি টিপাইমুখ বাঁধ ও পানিবিদ্যুত্ কেন্দ্র নির্মাণ করা হলে সারাদেশই বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে। এ ব্যাপারে দেশের পানিবিশেষজ্ঞ ও পরিবেশ বিজ্ঞানীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ দেশবাসীকে অবহিত করে আসছেন।
সরকার ভারতকে সহযোগিতা করছে : স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত সব সরকারই এদেশের স্বার্থবিরোধী টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের বিরোধিতা করেছে। কিন্তু বর্তমান সরকার টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণে ভারতের সঙ্গে আঁতাত ও সহযোগিতা করছে।
গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেশিয়াম মাঠের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে আন্তর্জাতিক নদী ও পানি বিশেষজ্ঞ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।
আসিফ নজরুল বলেন, ভারত টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ চুক্তি করে ১৯৯৬ সালের গঙ্গা চুক্তি (ধারা : ৯) সম্পূর্ণ লঙ্ঘন করছে। এটি আন্তর্জাতিক পানি আইনের লঙ্ঘন। বর্তমান সরকার দেশের স্বার্থে কাজ না করে ভারতের স্বার্থে বেশি কাজ করছে, দেশের স্বার্থবিরোধী ট্রানজিট চুক্তি করেছে।
তিনি বিরোধী দলের সমালোচনা করে বলেন, একটি বাড়ির জন্য বিরোধী দল ধর্মঘট ডাকে, কিন্তু একটি জাতীয় বিষয় নিয়ে কেন ধর্মঘট ডাকে না। কেন সাধারণ মানুষকে এক করে না।
শাহজালাল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জহিরুল হক বলেন, টিপাইমুখের সমস্যাটি একটি পরিবেশ ও প্রতিবেশগত বৈজ্ঞানিক ভ্রান্তিজাত রাজনৈতিক সমস্যা। টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ হলে সিলেট জেলার হাওর অঞ্চল সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বাংলাদেশের পরিবেশ ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটবে। সরকারের উচিত এর বিপক্ষে অবস্থান নেয়া।



http://www.amardeshonline.com/pages/...1/11/21/118476
__________________
And Allah Knows the best
Reply With Quote