OK here's the interview without smilies
বাংলাদেশ অধিনায়কের ভাবনায় বিশ্বকাপ
Courtesy: cricinfo
হাবিবুল বাশার। একটি নাম, একজন খেলোয়ার, একটি ইতিহাস। তার নেতৃত্তে বিশ্বকাপের সুপার-৮ এ উন্নিত হয়েছে বাংলাদেশ।বাংলাদে দলের সাফল্যে সবাই আনন্দিত হলেও মাঠে বাংলাদেশ অধিনায়কের কার্যক্রম জন্ম দিয়েছে নানা প্রশ্নের।আসলে মাঠের বাইরে থেকে প্রশ্ন করতে কোন কষ্ট হয় না কিন্তু সিদ্ধান্ত যিনি নেন তিনিই জানেন যে ব্যপারটা তাকে কিভাবে সামলাতে হয়। যাকে ঘিরে এত সব প্রশ্ন সেই তিনিই উৼপল শুভ্রকে জানিয়েছেন ভেতরের কথা।
উৼপল শুভ্র: শ্রীলঙ্কার সাথে বোলিং - এর সময় প্রচন্ড পিটানি খাবার পরও রাজ্জাক এর বদলে কোন ষস্ঠ বোলার ব্যবহার করেন নি আপনি।বরংকপিবুক ক্রিকেট অনুযায়ি ৫ জন বোলারকে দিয়ে পুরো ৫০ ওভার বল করিয়েছেন। অন্যদিকে, শ্রীলঙ্কা দল ৩৭ ওভার বল করাতে ব্যবহার করেছেন ৭ জন বোলার। কেন অতিরিক্ত বোলার ব্যবহার করেন নি?
বাশার: সত্যি বলতে কি আমিও আফতাব এবং আশরাফুলকে দিয়ে বল করাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ওদের ভাগ্যে সেটা ছিল না।
উৼপল শুভ্র: “ভাগ্যে ছিল না” এ কথার মানে কী?
বাশার: চেঞ্জ বোলার ব্যবহার করব কি করব না - সেটা ঠিক করার জন্য আমি মুশফিককে আমার দু আঙ্গুল - এর যে কোনো একটা ধরতে বলেছিলাম। মুশফিক মধ্যম আঙ্গুলটি ধরল, যার অর্থ চেঞ্জ বোলার ব্যবহার করা ঠিক হবে না।এজন্য বোলার চেঞ্জ করাই নি। দয়া করে কথাটা কাউকে বলবেন না বা লিখবেনও না।
উৼপল শুভ্র: তাই বলে বিশ্বকাপেরমত বড় আসরে আপনি এত বড় ঝুকি নিলেন?
বাশার:দেখুন জিততে হলে আপনাকে ঝুকি নিতেই হবে। মনে রাখবেন এখন আর আমরাMinnows(চুনোপুটি) নই।
উৼপল শুভ্র: আছা ভাস এবং মালিঙ্গা যখন আগুন ঝরানো বোলিং করছিল, তখন ওয়ান ডাউনে আফতাব অথবা আশরাফুলকে পাঠাতে পারতেন,অথবা সামনে থেকে দলকে নেতৃত্ত দেবার জন্যে আপনি নিজেও নামতে পারতেন। তা না করে মুশফিককে কেন পাঠালেন?
বাশার: কী বলছেন আপনি! ভাস এবং মালিঙ্গার বোলিং এর সামনে আমাকে নামতে বলছেন! আমিই যদি সব দায়িত্ত নেই তাহলে বাকিরা কী করবে। আর মুশফিককে নামানোর ব্যাপারেও আমার কোন দোষ নেই। ওই মুহুর্তে ব্যাটিং এ কাকে নামাব তা ঠিক করার জন্য জাভেদকে একটা আঙ্গুল ধরতে বললাম। জাভেদ যে আঙ্গুলটি ধরল, তার মানে ছিল মুশফিক। এখানে আমার ভুলটি কোথায়?
উৼপল শুভ্র: আচ্ছা অন্যদের দায়িত্ত নেবার কথা যখন বললেনই, তবে আরেকটা প্রশ্ন করি। নিউজিল্যান্ডের সাথের খেলায় আশরাফুলকে দায়িত্ত নিতে না দিয়ে আপনি আগে নেমে গেলেন। কেন?
বাশার: আসলে তার আগের রাতে আপনার ভাবি অর্থাৼ শাওনের সাথে আমার ফোনে কথা হচ্ছিল। কথা প্রসঙ্গে শাওন বলছিল, আমি অনেক পরে ব্যাটিং এ নামি এটা নাকি ওর তেমন পছন্দ না। ওকে খুশি করার জন্যেই আগে নেমেছিলাম। কিন্তু আশরাফুলকে তো কিছুক্ষণের মধ্যেই নামতে হয়েছিল। আর ও যাতে দায়িত্ত নেয়াটা শিখে সেজন্যে আমি দ্রুত ওকে দায়িত্ত দিয়ে মাঠ ছেড়ে চলে এসেছিলাম।
উৼপল শুভ্র: অস্ট্রেলিয়ার সাথে খেলার সময় তাপশ অসুস্থ হয়ে যাবার পরও তাপশকে দিয়েই বোলিং করানোর চেস্থা করছিলেন। কেন?
বাশার: তাপশ আসলে ড্রেসিং রুমে ফিরে যেতে চাচ্ছিল, কিন্তু আমি ওকে বুঝাছিলাম যে দেশের জন্যে অনেক ত্যগ সিকার করতে হবে। প্রয়োজনে জীবন বিসর্জন দিতে হবে। কিন্তু তাপশ বেচারা সুযোগটা নিতে পারল না।
উৼপল শুভ্র: কিন্তু পন্টিং তো প্রথম সুযোগে আহত ওয়াটসনকে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছিল।
বাশার:আপনি আস্ত্রেলিয়ার সাথে আমাদের তুলনা করলেন! ওরা তো সেদিন চাপ নিয়ে খেলছিল।
উৼপল শুভ্র: সুপার-৮ এর বাকি খেলাগুলোতে আমাদের পারফরম্যন্স কি আরেকটু ভাল আশা করা যায়?
বাশার: তার মানে কি বলতে চাচ্ছেন আমাদের পারফরমেন্স ভাল হচ্ছে না? আমরা কি সুপার-৮ এ উঠি নি? আমরা কথা দিয়ে কথা রেখেছি। এর চেয়ে ভাল আর কী আশা করেন? আসলে মানুষ একটু পেলে আরো পেতে চায়।মানুষের সভাবই এরকম।
উৼপল শুভ্র: ইদানিং ব্যাটিং, ফিল্ডিং, ক্যাপ্টেন্সি সবকিছুতে আপনার মনোযোগের অভাব দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে আপনি কী বলেন?
বাশার: দল কিন্তু আমার ক্যাপ্টেন্সিতেই সুপার-৮ এ উঠেছে। আর মনোযোগের অভাব বলতে আপনি কি আমার হোমসিকনেস নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন? আমি মোটেই হোমসিক না। আমি আপনাকে বলতে পারি দলের কেউই হোমসিক না। জানেন তো আমার ছেলে অহন আমাকে ছাড়াই জন্মদিন পালন করেছে। দেশের হয়ে খেলার জন্যেই তো আমি অহনের জন্মদিনে উপস্থিত থাকতে পারি নি।
আমি অন্য একটা প্রশ্ন করতে চাইছিলাম কিন্তু বাশার আমাকে বলার সুযোগ না দিয়ে বলল,
“শুভ্রদা, আমাকে মাফ করবেন। আমি এখন আর সময় দিয়ে পারছিনা। আপনার ভাবিকে ফোন করতে হবে, তাছাড়া আমার ফোন করা দেরি হলে অহন কান্না শুরু করে দিতে পারে। আর তাছাড়া প্রথম আলোর জন্যে কলাম শেষ না করলেও তো আপনি ছাড়বেন না।''
আমাকে আর কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়েই বাশার হনহন করে নিজের রুমের দিকে হেটে চলে গেলেন। প্রাপ্য ধন্যবাদটাও বাশারকে দেওয়া হ্ল না।
Written by : Shahjamal (Banglacricket user)
|