View Single Post
  #6421  
Old September 17, 2012, 04:11 PM
mufi_02's Avatar
mufi_02 mufi_02 is offline
BanglaCricket Staff
Editorial Team
 
Join Date: August 2, 2011
Location: NY
Favorite Player: Lara, Shakib
Posts: 8,002
Default :(

সাকিবের দুঃখ

‘রাজপুত্রছাড়া হ্যামলেট’ একটু বাড়াবাড়ি শোনাবে। তবে আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর অলরাউন্ডারের উপেক্ষিত থাকা কিছুটা তো এ রকমই। সাকিব আল হাসানের মন খারাপ করা খুবই স্বাভাবিক।

যৌক্তিক একটা প্রশ্নও ওঠে এতে। হয় আইসিসি নির্বাচিত দলটা ঠিক হয়নি, অথবা র‌্যাঙ্কিংটা অর্থহীন। সাকিব অবশ্য দুটির কোনোটা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন না। প্রথম প্রতিক্রিয়াটা যদিও চমকে দেওয়ার মতো: ‘এটা আমাকে বলে লাভ কী, যা করার বিসিবিকেই করতে হবে।’
মানে কী? বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটারের সংক্ষিপ্ত তালিকা থেকে সাঈদ আজমলের বাদ পড়া নিয়ে পিসিবি যেমন হইচই করেছে, তাঁর বাদ পড়া নিয়ে বিসিবির কাছ থেকেও কি এমন কিছু আশা করেছিলেন!

না, তেমন কিছু নয়। আবেগকে পাশে সরিয়ে রেখে যুক্তি দিয়ে বিচার করে যে উত্তর পাচ্ছেন, সেখানে যে তাঁর কিছু করার নেই। সেটি সমাধানের দায়িত্ব বিসিবির। ‘আমি জানি, অন্য দেশের ক্রিকেটারদের চেয়ে হয়তো আমাকে একটু বেশি ভালো করতে হবে। কিন্তু সে জন্য তো ম্যাচ খেলতে হবে। ২৫-৩০টা ম্যাচ খেললে তবেই না পারফরম্যান্সটা সবার চোখে পড়বে। এশিয়া কাপ আর মানুষ কদিন মনে রাখবে, ওটা তো সাত মাস হয়ে গেল।’ কাল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেও পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ মুখে দুঃখের কথা বললেন সাকিব।

আপাতদৃষ্টিতে র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বর অলরাউন্ডারের বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের স্বীকৃতি পাওয়ার দৌড়েও থাকা উচিত। তা থাকতে না পারারও ওই একটাই কারণ খুঁজে পাচ্ছেন, ‘বিরাট কোহলি ৩১টা ম্যাচ খেলে সতেরো শ (১৭৩৩) রান করেছে। আমি ২৫-৩০টা ম্যাচ খেললে অন্তত এক হাজার রান তো করতে পারতাম। একবার আমরা বছরে ২৬-২৭টা ম্যাচ খেলেছিলাম, মনে আছে সেবার আমাদের চার-পাঁচজন আট শর বেশি রান করেছিলাম।’

আইসিসির পুরস্কার বা বর্ষসেরা দলের জন্য বিবেচিত হয়েছে ২০১১ সালের ৪ আগস্ট থেকে ২০১২ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত সময়কাল। এই সময়ে সাকিব টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র পাঁচটি, যার শেষটি সেই ডিসেম্বরে। এই পাঁচ টেস্টে ৫০.১১ গড়ে রান করেছেন ৪৫১, বোলিংয়ে ২৮.৬১ গড়ে ২১ উইকেট। বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটারের পুরস্কার পাওয়া কুমার সাঙ্গাকারার রান ১৪ টেস্টে ১৪৪৪। সাকিবও ১৪টি টেস্ট খেলতে পারলে রানসংখ্যায় হয়তো সাঙ্গাকারাকে ধরতে পারতেন না (৯ টেস্টে করতে হতো ৯৯৩ রান), কিন্তু রান আর উইকেট মিলিয়ে নিশ্চিত এই স্বীকৃতির বড় দাবিদার হয়ে উঠতেন।

ওয়ানডে খেলেছেন ১৫টি। এর একটিতে আবার ব্যাটিং করতে হয়নি। ১৪ ইনিংসে ৫৯০ রান ও বোলিংয়ে ২২ উইকেট সাকিবের দুঃখটাকে আরও যৌক্তিক করে তুলছে। ২৫-৩০টা ম্যাচ খেলতে পারলে বর্ষসেরা ওয়ানডে ক্রিকেটারের তালিকা থেকে তাঁকে বাদ দেওয়া কঠিনই হতো।

রান আর উইকেট মিলিয়ে এভাবে হিসাব করেননি, তবে আরও বেশি টেস্ট ও ওয়ানডে খেলার সুযোগ না পাওয়ায় মাঝেমধ্যেই দীর্ঘশ্বাস পড়ে সাকিবের। র‌্যাঙ্কিং-ট্যাঙ্কিং নিয়ে খুব একটা ভাবেন না বলে দাবি, তবে কিছুদিন আগেই বলছিলেন, ‘টিভিতে টেস্ট দেখি আর ভাবি, কত দিন সাদা পোশাকে খেলি না। এই র‌্যাঙ্কিং কদিন থাকে, কে জানে!’

যুুক্তির আশ্রয় তো দুঃখ ভুলতে। আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে দলে নিজের নাম না দেখে মন খারাপ হয়নি? সাকিব স্বীকার করছেন, হয়েছে। ‘খারাপ তো লেগেছেই। বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটার হওয়ার সুযোগ তো ছিলই না, বর্ষসেরা ক্রিকেটার তো আরও না। একমাত্র আশা তো ছিল ওটাই।


http://www.prothom-alo.com/detail/da...18/news/290370
Reply With Quote