গুয়াংজুর প্রতিশোধ
সালমা খাতুন কথাটা একবার বলেই ফেললেন, ‘হ্যাঁ, আমরা প্রতিশোধ নিতে চাই।’
কিসের প্রতিশোধ নিতে চান বাংলাদেশ অধিনায়ক? গত বছরের এই নভেম্বরেই গুয়াংজু এশিয়ান গেমসের কথা অনেকের মনে থাকতে পারে। ভারত, শ্রীলঙ্কাবিহীন গেমসের মহিলা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ গিয়েছিল অন্যতম ফেবারিট হিসেবে। ফাইনাল পর্যন্তও উঠল। কিন্তু সোনার লড়াইয়ে পাকিস্তানের কাছে ১০ উইকেটে হার! বাংলাদেশের মাত্র ৯২ রানের চ্যালেঞ্জ পাকিস্তান টপকে যায় ১৫.৪ ওভারে।
সেই পাকিস্তানকে আজ মিরপুরের মাঠে হারাবে বাংলাদেশ? আগের রেকর্ড দেখলে অসম্ভব মনে হয়ও না। বাংলাদেশ একবার পাকিস্তানকে হারিয়েছিল, সেটি ২০০৮ এশিয়া কাপে। এ ছাড়া বাকি চার ম্যাচে জয় পাকিস্তানের। একবার যখন হারাতে পেরেছে, আজ নয় কেন?
ক্রিকেটে অসম্ভব কিছু নেই, কাজেই সালমার কথা উপেক্ষা করা যায় না। তবে আজকেরটি ৫০ ওভারের ম্যাচ হওয়ায় এখানে পরীক্ষার মঞ্চটা কঠিনই।
গুয়াংজুর ফাইনালটা দেখেছিলেন বাংলাদেশ দলের ভারতীয় কোচ মমতা মাবেন। এশিয়াডে তিনি ছিলেন চীনের কোচ। তার মানে এক বছর আগের বাংলাদেশ আর এই বাংলাদেশের পার্থক্যটা তাঁর ভালোই জানা। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলছেন, পাকিস্তানের কাছে ১০ উইকেটে হারা সেই বাংলাদেশের চেয়ে এই বাংলাদেশ অনেক ‘পরিণত’।
তাঁর কথা, ‘আমরা ভালো কিছু করে দেখাতে চাই।’ যদি সেই ‘ভালো কিছু’ হয়ে যায়, তাহলে মহিলা বিশ্বকাপ ক্রিকেটের বাছাইপর্বে বাংলাদেশের শুরুটা ভালোই হওয়ার কথা।
বাংলাদেশ দলের কোচ-অধিনায়ক কাল সকালে মিরপুরে অনুশীলন শেষে কথা বললেন, টপ-অর্ডার ব্যাটিং নিয়েই বেশি চিন্তিত দেখাল দুজনকে। টপ-অর্ডার ব্যাটিংয়ে পরিবর্তন আসবে, এমন ইঙ্গিত দিয়ে অধিনায়ক সালমা খাতুন জানালেন, ‘সাথিরা জাকিরের (উদ্বোধনী ব্যাটার) জায়গায় পান্না ঘোষ আসতে পারে।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গত দুটি অনুশীলন ম্যাচেই রানের খাতা খুলতে পারেননি সাথিরা। শেষ ১০ ম্যাচে তাঁর রান মাত্র ৫৩! এ জন্যই তাঁকে বাদ দেওয়ার চিন্তা। তবে দলেও নাকি থাকতে পারেন, সে ক্ষেত্রে ব্যাট করবেন একটু নিচে।
টপ-অর্ডার রান পাচ্ছে না অনেক দিন ধরে। এর প্রভাবে দলও বড় স্কোর গড়তে পারছে না। তবে মিডল-অর্ডার নিয়ে খুশি কোচ মাবেন, ‘আমাদের মিডল-অর্ডার ব্যাটিং কিন্তু ঠিক আছে।’ পাশাপাশি জানালেন, স্পিনাররাই বোলিংয়ে মূল শক্তি।’
রেকর্ড মাথায় রাখলে বাংলাদেশের বিপক্ষে নির্ভারই থাকতে পারে পাকিস্তান। তবে তারা স্বাগতিক বাংলাদেশকে হালকা করে নিচ্ছে না। এটা বোঝা গেল কোচ মাহতাসিম রশিদের কথায়, ‘ক্রিকেটে নির্দিষ্ট দিনে যারা ভালো খেলবে, জয় তাদেরই।’
বাংলাদেশ অধিনায়কের প্রতিশোধ নেওয়ার কথা শুনে বললেন, ‘মাঠেই দেখা যাবে।’ তাঁর সংযোজন, ‘মেয়েরা তৈরি। ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি আমরা। এই ম্যাচে ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আশা করি।’ দলের শক্তির দিকটিও উঠে এল তাঁর কথায়, ‘ব্যাটিং-বোলিং আমাদের বড় মানও শক্তি। তবে ফিল্ডিংয়ের ভালো।’
বিকেলে ১০ অধিনায়ককের সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান অধিনায়ক সানা মীর প্রতিপক্ষ হিসেবে বাংলাদেশকে সমীহই করছেন, ‘বাংলাদেশ ভালো দল। ওরা দর্শক সমর্থন নিয়ে খেলবে, তার পরও মাঠের ক্রিকেটটা আমরা উপভোগ করব আশা করি।’
পাকিস্তানি মেয়েদের দিনটা নিরানন্দ করতে পারবেন সালমারা?
http://www.prothom-alo.com/detail/da...14/news/200702