View Single Post
  #101  
Old October 17, 2011, 06:01 AM
marif marif is offline
Banned
 
Join Date: June 18, 2005
Posts: 223

বৃষ্টি এবং খেলা পরিত্যক্ত হওয়ার আশঙ্কা


স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্ট ফোর.কম
ছবি; বাংলানিউজটোয়েন্ট ফোর.কম
চট্টগ্রাম: ভেতরে ছোপ ছোপ ভেজা দাগ। রোলারের চাপে মাটি বসে গেলেও কালচে ভাব যায়নি। পা পিছলে যেতে পারে, মনের মধ্যে আতঙ্ক হচ্ছিলো। কাছে যাওয়ার পর ধারণা ভুল প্রমাণ হয়, ভেজা থাকলেও খেলতে অসুবিধা হবে না।

টানা আটদিন রোদের পর জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম যা একটু খেলার উপযোগী হয়েছিলো দুপুরে অনাহুত বৃষ্টিতে ফের মাঠের অনেকটা অংশ ভিজে যায়। ত্রিপল দিয়ে পিচ এবং আউটফিল্ডের একটা বড় অংশ ঢেকে দেওয়া সম্ভব হলেও বৃষ্টির হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।

গ্রাউন্ডস ম্যানদের পক্ষে চটজলদি পুরোটা ঢেকে দেওয়া সম্ভবও ছিলো না। ঢেকে দিলেই বা কি হতো, পানি তো মাঠের বাইরে যেতে পারতো না। সীমানা দড়ির বাইরে আটকে পড়া পানি চুইয়ে চুইয়ে ত্রিপলের নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয় পিচির দিকে।

স্থানীয় লোকজনের কাছে খোঁজ নিয়ে জানা গেলো প্রায় ১৫ দিন হয় বৃষ্টি থেমেছে। বিসিবির কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবুর কাছ থেকে একই তথ্য পাওয়া গেলেও একটা ব্যাখ্যা ছিলো, মাঠে পানি জমে ছিলো গত সপ্তাহ পর্যন্ত। রোদ ছাড়া কোন বিকল্প পথে পানি নিষ্কাশন সম্ভব হয়নি। জানা কথাই তো চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা নেই। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ তিন কোটি টাকা ব্যয়ে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিলেও বিসিবির কর্মকর্তাদের দাম্ভিক আচরণে সে প্রকল্প ভেস্তে গেছে। নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্পের কাজ শুরু করতে না পারায় টাকা ফেরত গেছে অর্থমন্ত্রণালয়ে।

এসব আলোচনা হওয়ায় বিসিবির একজন পরিচালক বিরক্ত হয়ে বললেন,“ক্রীড়া মন্ত্রীকে এক পয়সা দিয়ে গুনবে না মাঠ ভালো হবে কি করে। বিশ্বকাপের সময় কোন খেলায় মন্ত্রীকে পোডিয়ামে নেওয়া হয়নি। এখনও পাত্তা দেওয়া হয় না। আমরা বিসিবি কর্মকর্তারা মনে করি মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়েও বড় প্রতিষ্ঠান বিসিবি।”

এই অক্টোবরেও যে চট্টগ্রামে বৃষ্টি হতে পারে বিসিবি কর্মকর্তাদের তা অজানা থাকার কথা নয়। সব জেনেশুনে বছরের পর বছর দ্বিতীয় ভেন্যু হিসেবে চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক ম্যাচ দিচ্ছে বিসিবি। অথচ বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম পড়ে আছে। অন্য ভেন্যুতে খেলা না দেওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হলে বিসিবির গ্রাউন্ডস এবং ফ্যাসিলিটি বিভাগের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান মুন্না বলেন,“এখানে সুযোগ সুবিধা একটু বেশি। তাই আন্তর্জাতিক সিরিজগুলো এখানে দেওয়া হয়। বগুড়া স্টেডিয়ামে খেলতে হলে বাসে যেতে হবে। ভালো হোটেলও নেই।”

অবশ্য পরে তিনি মূল্যবান একটি কথা বলেছেন,“আমরা তো আন্তর্জাতিক সবগুলো ভেন্যু প্রস্তুত রাখি। খেলা দেওয়ার দায়িত্ব তো আমাদের নয়। বিসিবি থেকে যে সিদ্ধান্ত দেয় আমরা সেভাবে খেলা আয়োজন করে দেই।”

মাঠ উন্নয়নের কথা আপাতত থাক। খেলা হবে কি না সে বিষয়ে খোঁজখবর করে দেখা যেতে পারে। ইয়াহু এবং বিসিবির আবহাওয়া বিভাগ জানাচ্ছে আগামী কয়েকদিন ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। সোমবার যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে তাতে ১৮ অক্টোবর সিরিজের শেষ ওয়ানডের খেলা কখন মাঠে গড়াবে বলা যাচ্ছে না। প্রথম টেস্টের ভাগ্যে কি আছে তাও অনিশ্চিত।

খেলা হলেও উইকেটের সম্ভাব্য আচরণ সম্পর্কে ভালো ধারণা দিতে পারছেন না কিউরেটর। শুধু বলছেন উইকেটে বল ধরবে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছে ১৪ মার্চ ২০১১ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ওই ম্যাচে জিতে ছিলো বাংলাদেশ। সেই একই উইকেট প্রস্তুত করা হয়েছে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচ খেলার জন্য। লম্বা বিরতিতে উইকেট সবচেয়ে ভালো হওয়ার কথা থাকলেও জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে তা হচ্ছে না। বৃষ্টির পানির নিচে থাকতে থাকতে স্যাত স্যাতে হয়ে আছে পিচের সারফেসের নিচের অংশ। তবে ওপর থেকে পিচ দেখতে খুব সুন্দর। বাদামি রং চকচক করছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি মন্ত্রমুগ্ধের মতো বললেন, “দেখে মনে হচ্ছে পিচ খুবই ভালো হবে।”

আসল কথা তো কিউরেটর জাহিদ রেজা বাবু বলেছেন,“অনেক দিন খেলা না হলেও উইকেট পরিচর্যার জন্য তো সময় লাগবে। খুব বেশি সময় তো আমরা পাইনি। এক সপ্তাহের মধ্যে যা করা গেছে তাই হয়েছে। আউট ফিন্ডের ঘাস মরে গেছে। ঘাস লাগানোর সময় পাইনি।”

খেলার পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত যদি বৃষ্টি না হয় এবং কড়া রোদ থাকে তা হলে খেলা চালানো সম্ভব হবে বলে মাঠ পরিচর্যার সঙ্গে সম্পৃক্ত এমন একজন জানিয়েছেন। তার মানে খেলা হওয়া না হওয়া নির্ভর করছে প্রকৃতির ওপর।

বৃষ্টির কারণে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এপর্যন্ত দুটি ওয়ানডে পরিত্যক্ত হয়েছে। ২০০৭ সালে ভারতের বিপক্ষে এবং ২০১০ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলা হয়নি আউটফিল্ড ভেজা থাকায়। [/বাংলা]
Reply With Quote