View Single Post
  #2  
Old May 31, 2010, 05:31 PM
Murad's Avatar
Murad Murad is offline
Cricket Sage
 
Join Date: July 30, 2006
Favorite Player: MAM & MBM
Posts: 19,850

 ‘এখন তিনি কী বলবেন?’
তারেক মাহমুদ | তারিখ: ০১-০৬-২০১০

একটা সেঞ্চুরিকে কতভাবেই না দেখা যায়! বাংলাদেশ দলের বড় রানের ভিত, অনার্স বোর্ডে নাম ওঠানোর উপলক্ষ কিংবা জেওফ্রি বয়কটের সমালোচনার জবাব। তামিম ইকবালের কাছে এই সেঞ্চুরির তাৎপর্য তাই অনেক। লর্ডসে স্বপ্নের সেঞ্চুরির পর পরশু রাতে তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তারেক মাহমুদ

 লর্ডসে সেঞ্চুরির স্বপ্নপূরণ হলো। টিম ব্রেসনানকে মিড অন দিয়ে ওই বাউন্ডারিটি মারার পরপর কেমন লাগছিল?
তামিম ইকবাল: আমি আগেও দুটি সেঞ্চুরি করেছি। এতটা নার্ভাস কখনো হইনি। আমার রান যখন ৯৭, তখন খুবই নার্ভাস লাগছিল। খালি মনে হচ্ছিল বাউন্ডারি মেরে সেঞ্চুরি করে ফেলি, নয়তো সময়টা পার করতে পারব না। খেয়াল করে থাকবেন, আমি কিন্তু টেস্টে এ রকম মুহূর্তে সাধারণত নিচে মারি, ওপরে মারি না। কিন্তু আজ (পরশু) মারলাম। সেঞ্চুরিটা হয়ে যাওয়ার পর পুরো অন্যরকম একটা ফিলিংস...বলে বোঝাতে পারব না। আমার ধাতস্থ হতেও সময় লাগছিল। ২-৩ বল পর একটু রিল্যাক্সড হয়েছি।

সেঞ্চুরি করলে লর্ডসের অনার্স বোর্ডে নাম উঠবে জানতেন। সেটাও তো একটা লক্ষ্য ছিল...
তামিম: এখানে খেলে গিয়ে ভাইয়া (তামিমের বড় ভাই নাফিস ইকবাল) আমাকে বলেছিলেন, লর্ডসে সেঞ্চুরি করলে বা ৫ উইকেট পেলে একটা বোর্ডে নাম লেখা হয়। এটা তাই জানাই ছিল, লক্ষ্যও বলতে পারেন। সেঞ্চুরির লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ের সময় আমি অনেক চিন্তাভাবনাও করেছি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গত সিরিজে ঢাকায় ৮৫ রান করে আউট হয়ে গিয়েছিলাম। সেবার পাঁচজন ফিল্ডার বাইরে ছড়িয়ে রাখার পরও আমি সতর্ক হইনি। আজও (পরশু) আমার রান যখন ৭৫, ওরা সেই কাজটাই করল—পাঁচজন ফিল্ডার বাইরে। কিন্তু আমি ব্যাপারটা খেয়াল করি এবং পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে খেলেছি। এ ছাড়া লাঞ্চের দুই ওভার আগ থেকে আমি শট খেলা বন্ধ রেখেছিলাম, যেন লাঞ্চের পর আবার নতুন করে শুরু করতে পারি। এই ইনিংসে এসবও আমার অর্জন, আমি পরিস্থিতি বুঝে খেলতে পেরেছি।

 ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার জন্য আলাদা কোনো তৃপ্তি?
তামিম: ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নয়, ইংলিশ কন্ডিশনে সেঞ্চুরি করলাম বলে ভালো লাগছে। এখানকার উইকেট, বাউন্স, মুভমেন্ট এসবে আমরা অভ্যস্ত নই। এই কন্ডিশনে সবার জন্যই রান করা কঠিন।

 হাতের ইনজুরির কারণে তো এই সিরিজে আপনার খেলা নিয়েই অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। ব্যাটিংয়ের সময় কি কখনো ব্যথাটার কথা খেয়াল হয়নি?
তামিম: প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে সমস্যা হয়নি। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করার সময় ব্যথা লেগেছে, খুব সম্ভবত রানটা যখন ৮৪ তখন থেকে। এখনো হালকা ব্যথা আছে। তবে ফিজিও বলেছে, ম্যাচ খেললে যতটুকু ব্যথা বা সমস্যা হওয়ার কথা তার চেয়ে নাকি অনেক ভালো আছে হাতের অবস্থা।

 সেঞ্চুরির পর মাঠ থেকেই হাতের ইশারায় বাংলাদেশ দলের অ্যাটেনডেন্টকে অনার্স বোর্ডে নাম লিখতে বললেন। এত তাড়াহুড়ার কী ছিল?
তামিম: আসলে কাল (টেস্টের তৃতীয় দিন) আমি ওনাকে মজা করে বলেছিলাম, ৫০ রান করলে নাম উঠবে, এ রকম একটা বোর্ড বানিয়ে দিন। উনি বলেছিলেন, না ১০০-ই মারতে হবে। ১০০ ছাড়া হবে না। আমিও তখন বলি, ঠিক আছে ১০০ মেরেই নাম ওঠাব বোর্ডে। নাম না উঠিয়ে লর্ডস থেকে যাব না। ওই সময় আরও একটা মজার ব্যাপার ঘটেছিল। ওর সঙ্গে কথা বলার সময় মুশফিকুর সামনে ছিল। হাসতে হাসতে ওকে বলেছিলাম, দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৩ রান করব। দেখেন, ঠিক সেটাই করলাম! আরও বেশি বলা উচিত ছিল মনে হয়...(হাসি)।

 সেঞ্চুরির পর অ্যাটেনডেন্ট কী বললেন? ড্রেসিংরুমে ফিরেই বা কেমন অভিনন্দন পেলেন?
তামিম: চমৎকার, দলের সবাই খুব খুশি। আর অ্যাটেনডেন্টও খুব খুশি। ও বাংলাদেশকে খুব সাপোর্ট করে। ড্রেসিংরুমে ফেরার পর আমাকে আনন্দে জড়িয়ে ধরে বলল, ‘এর আগে এভাবে কেউ বলে-কয়ে অনার্স বোর্ডে নাম তোলেনি। তুমিই প্রথম...।’

 সেঞ্চুরির পেছনে ‘বাংলাদেশের টেস্ট খেলা উচিত নয়’ বলে জেওফ্রি বয়কটের মন্তব্যের প্রভাব কতটুকু?
তামিম: এ রকম মন্তব্য নাকি আগেও অনেকে করেছেন। তবে আমি খেলা শুরুর পর এ ধরনের কথা এই প্রথম শুনলাম। সেজন্যই বেশি খারাপ লেগেছে। আর যাঁরা এসব বলেন, এখন আমার এই ইনিংস দেখার পর তাঁদের প্রতিক্রিয়া কী? বাংলাদেশ কি এই টেস্টে খুব খারাপ খেলছে! এখন তিনি কী বলবেন? তবে সবাই যে আমাদের খারাপ বলে তা নয়। শুনেছি, আজ (পরশু) ধারাভাষ্যে সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক নাসের হুসেইন বাংলাদেশের অনেক প্রশংসা করেছেন। যারা আমাদের পছন্দ করে না, তারাই আসলে ওসব বলে।

 কিন্তু হঠাৎ একটা ভালো ইনিংস বা হঠাৎ একটা টেস্টে ভালো খেলা—এভাবে খেলে কি সমালোচকদের মুখ পুরোপুরি বন্ধ করতে পারবেন?
তামিম: আমরা কিন্তু এখন নিয়মিতই ভালো খেলছি। গত ছয়টা টেস্ট খেয়াল করে দেখেন, আমাদের প্রায় সব ব্যাটসম্যানেরই সেঞ্চুরি আছে। কেউ না-কেউ বড় রান করছেই। হ্যাঁ, আজ থেকে চার-পাঁচ বছর আগে হঠাৎ ভালো খেলার ব্যাপারটা ছিল। লোকে যা-ই বলুক, আমার মনে হয়, আমরা সঠিক পথেই এগোচ্ছি। ম্যাচ জেতার প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি। এখন শুধু দরকার নিয়মিত জেতা। এখানে জয়ের অভ্যাসটা খুব জরুরি। অনেকে বলে জিম্বাবুয়ে-কেনিয়ার বিপক্ষে খেলে কী হবে? আমি বলি ওটাই আমাদের বেশি দরকার। জয়ের অভ্যাসটা তাহলে থাকে, আত্মবিশ্বাস বাড়ে। ২০০৭ বিশ্বকাপে আমাদের ভালো খেলার এটা একটা কারণ। আমরা সেবার জিম্বাবুয়ে-কেনিয়ার বিপক্ষে অনেক ম্যাচ খেলেছিলাম।

 ৯৪ বলে সেঞ্চুরি—গত ২০ বছরে লর্ডসের দ্রুততম। টেস্ট ম্যাচ হিসেবে একটু কি তাড়াহুড়া হয়ে গেল না? ব্যাট হাতে অনেক বেশি আক্রমণাত্মক মনে হয়েছে আপনাকে...
তামিম: এভাবে খেললেই মনে হয় আমার ভালো করার সম্ভাবনা বেশি। হ্যাঁ, কখনো কখনো হয়তো বিশ্রী লাগবে দেখতে...ধরেন প্রথম বলেই হয়তো আউট হয়ে গেলাম। তবে এ নিয়ে আমি ভাবি না, কারণ এটাই আমার স্টাইল। সব ক্রিকেটারেরই আলাদা আলাদা স্টাইল থাকে। শেবাগ বা দিলশান কিন্তু উইকেটে গিয়ে বল ঠেকায় না, শট খেলে। ওদের যদি ঠেকিয়ে খেলতে বলেন ওরা পারবে না। আমিও খেয়াল করেছি মাঠে আমার বডি মুভমেন্ট যত বেশি আক্রমণাত্মক থাকে, তত আমার খেলা ভালো হয়।

 সেঞ্চুরির পর দেশে কথা হয়েছে?
তামিম: ভাইয়া ফোন দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তবে সেঞ্চুরির চেয়ে হাতের কথাই জিজ্ঞেস করেছেন বেশি। আমার পরিবারে এই একটা সুবিধা—কেউ খেলা নিয়ে কথা বলে না। এই নিয়মটা আমার বাবা করে দিয়ে গেছেন। বাবার কড়া নির্দেশ ছিল, খেলা নিয়ে যতটা সম্ভব কম কথা বলতে হবে।


http://www.prothom-alo.com/detail/da...-01/news/67634
__________________
~*Islam is the only way to attain peace in life, be it personal, family or political.*~

Last edited by Murad; May 31, 2010 at 05:37 PM..
Reply With Quote