View Single Post
  #1  
Old March 30, 2007, 12:00 PM
Ahmed_B's Avatar
Ahmed_B Ahmed_B is offline
BanglaCricket Staff
 
Join Date: February 3, 2004
Posts: 5,578
Default সুপার-এইটঃ টাইগারদের ছন্দ ধরে রাখার লড়াই...

বিশ্বকাপের ‘ওয়ার্ম-আপ’ রউন্ড শেষ হয়ে গেছে। না, বিশ্বকাপ শুরুর আগের ওয়ার্ম-আপের কথা বলছি না। গ্রুপ ম্যাচ গুলিকেই ওয়ার্ম-আপ বললাম। বিশ্বকাপ নিয়ে সত্যিকার অর্থে মারামারি তো সবে শুরু!

তো... কতটা প্রস্তুত বাংলাদেশ দল সুপার-৮ এর এই উত্তপ্ত ফ্রাইপ্যানে নামার জন্য?

পন্টিং-এর মুখে “বাংলাদেশকে ছোট করে দেখছিনা...ওরা অনেক উন্নতি করেছে...” অথবা বাশারের মুখে “আমাদের দিনে আমরা অনেক কিছু করতে পারি... দলের সবাই কিছু একটা করতে চায়... সুপার-৮ এ আমরা নিজেদের যোগ্যতায় এসেছি... ” কথাগুলি অবশ্যই সত্যি এবং বেশ পজেটিভ। কিন্তু প্রায় সবকয়টি কথাই যেন অনেকবার শোনা হয়ে গেছে সবার। বিশ্বকাপ শুরুর আগে যেটা ছিল স্বপ্ন, সেই সুপার-৮ এখন জলজ্যান্ত বাস্তবতা -এ আবেগের কোন তুলনা হয়না! আবার এই স্বপ্নপুরনের একটা মানসিক দুর্বল দিকও আছে। সেটা হল আবেগের ঘোর... আর সেই ঘোরের স্রোতে ভেসে ছন্দ হারানোর ভয়!

যদিও আপনারা সবাই ক্রীকেট নিয়ে অনেক ভাবেন, তবুও ব্যাপারটা আমার দৃষ্টিকোন থেকে একটু ব্যাখ্যা করি। আয়ারল্যান্ডকে বাদ দিলে, এই মহাজজ্ঞের বাকি ৬ টা বড় দলের সবাই বিশ্বকাপের অনেক আগে থেকেই কিভাবে সেমি-ফাইনালে উঠা যায়, সেই মানসিক, শারিরীক আর গানিতিক (বিশ্লেষণ ইত্যাদি) প্রস্তুতি নিয়ে আসছে। এই সুপার-৮ পর্বে তারা সেইসব প্রতিপক্ষ-ভিত্তিক বিশ্লেষণকে প্রয়োগ করার আপ্রাণ চেষ্টা করবে। ওদিকে আয়ারল্যান্ডের জন্য পুরো ব্যাপারটা এতই আকস্মিক যে, তারা এখন বেশ মজাই পাওয়া শুরু করেছে! হারাবার কিছুই নেই তাদের। মনের সুখে সামনের ছয়টা ম্যাচ খেলে ড্যাং ড্যাং করে নাচতে নাচতে ফিরবে আইরিশরা আর যার যার কর্মস্থলে গিয়ে পরের কয়েক মাস শুধু সহকর্মীদের মুগ্ধ চোখের সামনে ঘুরে বেড়াবে ফুরফুরে মেজাজে!

কিন্তু বাংলাদেশের জন্য সমীকরণটা এত মজার না। বলাই বাহুল্য যে, বাংলাদেশের বিশ্বকাপ জয়, এমনকি সেমিফাইনেলে ওঠাও কিছুটা আকাশ-কুসুম কল্পনা। কিন্তু বাংলাদেশের সাফল্যের ধারাবাহিকতা এখন আর শুধু বিনোদনের খোরাক না, এটা এখন কিছুটা সময়ের দাবীও বটে। টেস্ট পরিবারের সদস্য বাংলাদেশকে থাকতে হবে মিডিয়ার চুলচেরা বিশ্লেষণের টেবিলেই। খুব উচ্চস্বরে কথাটা না বললেও, এটা পরিষ্কার যে, বাংলাদেশকে তারা আয়ারলান্ডের মত ‘Overachieving’ দল হিসেবে দেখে না। আয়ারল্যান্ড এই পর্বে অন্য কোন দলকে হারাতে পারলে সেটা যেমন হবে বড় চমক, বাংলাদেশ এই পর্বে আইরিশদের ছাড়া অন্য কাওকে হারাতে না পারলে সেটা তেমনি হবে ক্রীকেট বিশ্বে কিছুটা আসন্তোষের কারন। টাইগার-ভক্তেরাও হয়তো এটাই ভাবেন “সেমিফাইনালের স্বপ্ন দেখি না... কিন্তু আরো জয় চাই!”

বাংলাদেশের সুপার-৮ সাফল্যের উত্তাল আবেগের ইতি টানার সময় এসে গেছে। কঠিন ৬ টি খেলা বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু বাশার আর তার বাহিনী কি স্বপ্নের ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরে শুরু করতে পেরেছে সুপার-৮ এর সুক্ষ গানিতিক হিসাব-নিকাশ? প্রেস-কন্‌ফারেন্সের কথাবার্তায় মনে হয় বাশারকে এখনো প্রথম পর্বের বর্ণনা আর ব্যাখ্যা দিতেই হিমসিম খেতে হচ্ছে। দুএকটা কথা ছাড়া খুব সুনির্দিষ্ট টার্গেট নিয়ে কোন কথা তার কাছে এখনও পাওয়া যায়নি।

খুব দোষ দেয়া যায়না অবশ্য তাকে। পুরো অভিজ্ঞতাটাই বাংলাদেশের জন্য আনকোরা নতুন। তবে, দল-গুলির মধ্যে কাদেরকে সর্বশক্তি দিয়ে চেপে ধরতে হবে, আর কাদের বিরুদ্ধে ডিফেন্সিভ স্ট্রাটেজি নিয়ে নিজেকে রক্ষা করে যতদুর সম্ভব দেখার মত খেলা উপহার দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে, তা নিয়ে ভাবার সময় হাতে খুবই কম। “হাউ মেনি রাইস মীন্‌স হউ মেনি পেডী” ব্যাপারটা ওয়েস্ট-ইন্ডিজ আর ইংল্যান্ডকে সুন্দরভাবে বুঝানোর মত জেদ যেমন তৈরী হওয়া এখনই দরকার, তেমনি সউথ-আফ্রিকা বা অস্ট্রেলীয়ার মত দানবীয় দলের সাথে “রাইস-পেডী” খেলতে গিয়ে ইজ্জতের দফারফা হওয়ার কোন মানে নেই।

সুপার-৮ এর প্রথম ৩ শক্ত ম্যাচে ফলাফল যাই হোক না কেন, শাহরীয়ার-আফতাব-বাশার কে ব্যর্থ দেখতে চাইনা। হেইডেন-ক্যালীস-স্টাইরিসের মার খেয়ে বোলারদের লাইন-লেন্থ হারানো দেখতে চাইনা! ফিল্ডীং-এ হতাশায় কাঁধ ঝুলানো চেহারা দেখতে চাইনা -বিদ্যুৎ গতির তরতাজা আমেজ দেখতে চাই!! প্রথম তিন ম্যাচে শ্রীলঙ্কা বিপক্ষের ম্যাচের ছায়া দেখতে চাইনা-এটাই আপাততঃ আমার চাওয়া । এই ৩ খেলায় টাইগারেরা ফাইটিং মানসিকতা দেখাতে পারলে পরের দুর্বলতর ৩ দলের জন্য সেটা হবে সুস্পষ্ট চ্যালেঞ্জ!

আশা করি সুপার-এইটে উঠার উত্তাল আবেগকে সংবরন করে বাশারেরা অতি দ্রুত এই অতি-সিরিয়াস ম্যাচগুলির ছন্দের সাথে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারবে।
__________________
Well...you only get one chance to make your first impression somewhere...!
Reply With Quote