View Single Post
  #51  
Old June 14, 2012, 03:07 AM
crikss's Avatar
crikss crikss is offline
Cricket Legend
 
Join Date: May 15, 2007
Posts: 2,471

ঢাকা: ক্রিকেটের বাইরেও শাহরিয়ার নাফীসের একটা সুন্দর জীবন আছে। পরিবার পরিজন নিয়ে সুখের সংসার। জ্ঞানচর্চার জন্য বই এবং খবরের কাগজ পড়ার পাশাপাশি টেলিভিশনে ডুকুমেন্টরি দেখেন নিয়ম করে। জাতীয় দলের এই ক্রিকেটারের সঙ্গে ক্রিকেট এবং ক্রিকেটের বাইরের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন বাংলানিউজের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট সেকান্দার আলী।

প্রশ্ন: শৈশবের স্মৃতিগুলো মনে পড়ে?

শাহরিয়ার: খুব মনে পড়ে। আব্বার চাকরির জন্য বান্দরবান এবং যশোর ক্যান্টমেন্টে থাকতাম। ১৯৯৫ সাল থেকে ঢাকায় পাকাপাকি থাকতে শুরু করি। পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা করতে আমাদের কোন বাধা ছিলো না। বরং পরিবার থেকে উৎসাহ দেওয়া হতো। ঢাকায় আসার পর ওয়াহিদ স্যারের কোচিংয়ে ভর্তি হই। সপ্তাহে তিনদিন আবাহনী মাঠে কোচিংয়ে যেতাম। রোববার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার এই তিনদিন খুব ভালো থাকতাম। কৈশরের ‘এক্সাইটিং পার্ট’ ছিলো ক্রিকেট কোচিংয়ে যাওয়া। ১৯৯৬ সালে সেন্টজোসেফ এবং মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাই। আব্বা যেহেতু সেনা কর্মকর্তা তিনি চাচ্ছিলেন আমি মির্জাপুর ক্যাডেটে ভর্তি হই। আসলে আব্বা খুব করে চাইতেন আমি আর্মিতে যোগ দেই। কিন্তু আমার ইচ্ছে ছিলো খেলাধুলা করবো। সেন্টজোসেফে ভর্তি হতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আম্মা আমাকে সাহায্য করেন। এতে আব্বা খুব মন খারাপ করেছিলেন। কিন্তু আম্মা আমাকে খুব সাহায্য করেছেন ক্রিকেটার হতে।

প্রশ্ন: পরিবারে খুব কড়াকড়ি ছিলো বুঝি?

শাহরিয়ার: পরিবারে নিয়মতান্ত্রিক জীবন ছিলো, পড়াশোনার পাশাপাশি খেলার ব্যাপারে বাধা ছিলো না। পড়াশোনা, খেলাধুলা নিয়ে বেশি ব্যস্ত থাকতাম। ওই শাসন ছিলো বলে আমরা বড় হতে পেরিছি। আমাদের দেশে পরিবারের গুরুত্ব অনেক বেশি। আমি আমার পরিবারের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি আমার ছেলেকেও একটা নিয়মের ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে চেষ্টা করছি।

প্রশ্ন: ক্রিকেটার হয়ে উঠতে আপনার জীবনে সবচেয়ে বেশি অবদান কার?

শাহরিয়ার: পর্যায়ক্রমে দেখেন, একদম শুরুতে আম্মা কোচিংয়ে নিয়ে যেতেন। আমাকে সেন্টজোসেফে ভর্তি হতে এবং ক্রিকেট খেলতে আম্মা সাহায্য করেছেন। তখন আম্মার সিদ্ধান্ত খুব ভালো ছিলো। ওয়াহিদ স্যারের অবদান তো আছেই। একটা সময়ে রিচার্ড ম্যাকিন্সের অবদান ছিলো। তিনি আমাকে হাইপারফরমেন্সে নিয়েছেন। অনেক কিছু শিখেছি তার কাছ থেকে। আবার তিনি আসছেন বিসিবি একাডেমির প্রধান কোচ হয়ে। আমার জন্য খুব ভালো হবে।

প্রশ্ন: ক্রিকেট ক্যারিয়ারে একটা কঠিন সময় পার করে এসেছেন আপনি। ওই সময় খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলেন কি?

শাহরিয়ার: ২০০৭ সালের বিশ্বকাপ আমার জীবনের কঠিন পার্ট ছিলো। আরও বিস্তারিত ভাবে বললে ২০০৭, ০৮ ও ০৯ সাল আমার জন্য ভয়ঙ্কর খারাপ ছিলো। আসলে ভালো অবস্থার মধ্যদিয়ে গেলে মানুষ নিজেকে বুঝতে পারে না। খারাপ পরিস্থিতি এলে জীবন সম্পর্কে ধারণা বদলে যায়। মানুষের মধ্যে অনেক পরিবর্তন আসে। জাতীয় দলে ঢোকার পর প্রথম দেড় বছর খুব ভালো সময় গেছে। পরে বাস্তবতা বুঝতে শিখেছি।

প্রশ্ন: এখন বয়সে পরিণত হয়েছেন, চেষ্টা করলে হয়তো ৭-৮ বছর জাতীয় দলে খেলতে পারবেন, সে ভাবে কি নিজেকে প্রস্তুত করছেন?

শাহরিয়ার: ১০-১২ বছর থেকে ক্রিকেট খেলি। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছি সাত বছর। এখন বয়স ২৭ বছর। পরবর্তী ছয়-সাত বছর সেরা ক্রিকেট খেলার সময়। যে দুর্বলতাগুলো আছে তা কাটিয়ে উঠতে পারলে জাতীয় দলের হয়ে ভালো খেলতে পারবো। সাকিব যেমন পারফর্ম করে, তাকে কোনো চিন্তা করতে হয় না। আমিও সাকিবের মতো ধারাবাহিক পারফরমেন্স করতে পারবো যদি মনোযোগ দিয়ে খেলতে পারি। শারীরিক ফিটনেস আগের চেয়ে বেড়েছে। আশা করি আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ভালো ভাবে ফিরতে পারবো।

প্রশ্ন: ভাবির সঙ্গে কখন পরিচয়?

শাহরিয়ার: ২০০১ সালে এসএসসি পাশ করার পর কলেজে ভর্তি হই। ওর বড় বোনও কমার্সে পড়তেন। তখন পরিচয় হয়। মাঝে দেখাসাক্ষাৎ হয়নি। ২০০৫ সালে আমাদের দু’জনের একজন কমনফ্রেন্ড আছে তার মাধ্যমে আবার আলাপ হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরে সোয়া একবছর সম্পর্কের পর আমরা বিয়ে করি। আসলে বিয়ে করার জন্যই হৃদয় ঘটিত সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলাম। এই জন্য দ্রুত বিয়ে হয়।

প্রশ্ন: তারকা ক্রিকেটারের অনেক মেয়ে ফ্যান থাকে। বিয়ের আগে আপনারও নিশ্চয়ই অনেক ফ্যান ছিলো?

শাহরিয়ার: আমি ওই বিষয়গুলো সবসময় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করেছি। ওভাবে কোনো কিছু আমাকে স্পর্শ করতে পারেনি। তাছাড়া একটা সম্পর্ক থাকায় কোনো সুযোগও ছিলো না।

প্রশ্ন: আপনার সবচেয়ে কাছের মানুষ কে?

শাহরিয়ার: আমার ছেলে শাহওয়ার আলী নাফীস। সে আমার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। তাকে নিয়ে আমার অবসর কাটে।

প্রশ্ন: অবসরে কি করতে ভালোবাসেন?

শাহরিয়ার: টিভি দেখি, পত্রিকা পড়ি। বিশেষ করে সময় পেলে ডকুমেন্টরি দেখি। বিভিন্ন বিষয়ে জানার প্রবল আগ্রহ আছে আমার। সে জন্য টিভিতে ডকুমেন্টরি দেখতে ভালো লাগে। দেশের পত্রিকা পড়ার পাশাপাশি বিদেশি খবরের কাগজ দেখি অনলাইনে। ভালো ভালো সিনেমাও দেখি।

প্রশ্ন: খ্যাতি না অর্থ কোনটা আপনার কাছে বড়?

শাহরিয়ার: একাউন্টিংয়ে একটা জিনিস শিখেছি, টাকা হচ্ছে বাইপ্রোডাক্ট। কাজ ভালো হলে টাকা আসবে। জীবনের জন্য টাকা খুব জরুরী। কিন্তু কাজ ঠিক ভাবে করলে টাকার পেছনে ছোটার প্রয়োজন হয় না। কাজই টাকা নিয়ে আসবে। অতএব কাজটা ভালো মতো করা জরুরী।

প্রশ্ন: খেলা ছেড়ে দেওয়ার পর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

শাহরিয়ার: আমি এই বিষয়ে বিভ্রান্ত। খেলা বাদে আমি কিছু চিন্তা করতে পারি না। খেলার সঙ্গে থাকার ইচ্ছে। বলতে পারেন সরাসরি থাকার ইচ্ছে। সেক্ষেত্রে কোচিংয়ে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার গড়তে পারি।

প্রশ্ন: একজন মানুষ হিসেবে আপনি কতটা সুখী?

প্রশ্ন: সত্যিই আমি হ্যাপি (সুখী)। পরিবার পরিজন নিয়ে ভালো আছি। খেলা আমার পেশা। এক সময়ে পিছিয়ে পড়েছিলাম, সেখান থেকে ফিরে এসেছি। একটা পর্যায়েও আছি। আশা করি শিগগিরই আবার ওপরের দিকে ফিরতে পারবো। সব মিলিয়ে আমি সুখী।

http://www.banglanews24.com/detailsn...13062012118940
__________________

Last edited by Zunaid; August 6, 2012 at 04:23 AM.. Reason: Added Bangla tag for readability
Reply With Quote