View Single Post
  #57  
Old October 4, 2012, 07:26 AM
cricheart's Avatar
cricheart cricheart is offline
Test Cricketer
 
Join Date: March 2, 2012
Location: Haowa Bhaban
Favorite Player: Any smart *** spot fixers
Posts: 1,591

Utpal Shuvro of PA from Colombo Spicy reading.
Quote:
রাজা-বাদশাহদের আমলে সব রাজপ্রাসাদে গোপন একটা সুড়ঙ্গপথ থাকতই। বিপদে-আপদে পালিয়ে যাওয়ার রাস্তা। বখতিয়ার খিলজি মাত্র ১৭ জন অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে রাজপ্রাসাদ আক্রমণ করার পর মধ্যাহ্নভোজনরত লক্ষ্মণ সেনের গোপন সুড়ঙ্গপথে পালিয়ে যাওয়ার ইতিহাস কে না জানে!
কলম্বোর তাজ সমুদ্র হোটেলেও এমন কিছুর ব্যবস্থা আছে বলে এত দিন কেউ জানত না। জানল পরশু মধ্যরাতে, যখন হোটেলের লবিতে ভিড় করা ভারতীয় সাংবাদিককুল ঘণ্টা খানেক অপেক্ষার পর সবিস্ময়ে আবিষ্কার করল, ভারতীয় ক্রিকেটাররা যে যাঁর রুমে উঠে গেছেন!
ভারতের টিম বাস হোটেলের সামনে আসেনি। মূল প্রবেশদ্বার দিয়েও ঢোকেনি কেউ। মুখোমুখি দুই-দুই চারটি লিফটের দিকেও সবার শ্যেণ দৃষ্টি ছিল। তা হলে? এই ‘তা হলে’ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় ধাঁধা।
যে ধাঁধার উত্তর হোটেলের লোকজন আর নিরাপত্তাকর্মীরা নিশ্চয়ই জানেন। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টানা তৃতীয় আসরে ভারত যে ধাঁধার জন্ম দিয়ে গেল, সেটির উত্তর দেবে কে!
কেন, মহেন্দ্র সিং ধোনি! না, তাঁর কাছেও উত্তর নেই। পরশু দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১ রানে জিতেও টুর্নামেন্টের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে ‘পরাজিত’ ভারতীয় অধিনায়ক ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং—তিনটি বিভাগ কখনোই একসঙ্গে ‘ক্লিক’ করেনি বলে আক্ষেপ করলেন। করেনি যে, এটা তো সবাই জানে। অধিনায়কের কাছে স্বাভাবিকভাবেই সবাই কারণটা শুনতে চাইবে। এখানেই ‘কবি নীরব’।
অনেক দিন ধরেই টি-টোয়েন্টির ধারক-বাহক-প্রচারক সবই ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। আইপিএলের কারণে ভারত এখন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আঁতুড়ঘর। অন্য দেশের ক্রিকেটাররা আইপিএলে খেলে টি-টোয়েন্টি শেখে। অথচ নিয়তির নির্মম পরিহাসই বলতে হবে, ভারতের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে একমাত্র সাফল্য আইপিএল শুরুর আগে। আইপিএল শুরুর পর আর সেমিফাইনালেই পা পড়েনি। এই বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সকে যে তার পরও ‘সন্তোষজনক’ বলছেন ধোনি, তার কারণ অনুমান করাই যায়। এবার তো তা-ও সুপার এইটের দুটি ম্যাচ জিতে নেট রানরেটের চক্করে বাদ পড়ল ভারত। গত দুটি বিশ্বকাপের সুপার এইটে তো জয়েরই দেখা মেলেনি!
আগের দুবারের মতো এবারও ধোনির বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে আইপিএল প্রসঙ্গটা উঠল। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সঙ্গে আইপিএলের তুলনা হয় না—এ কথাটা আগেও বলেছেন। আবারও বললেন। সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন ‘আইপিএল একটা ঘরোয়া টুর্নামেন্ট।’ তা তো ঠিকই। তবে সেই ‘ঘরোয়া’ টুর্নামেন্টের জন্য বিসিসিআই মাঝেমধ্যেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যালেন্ডারে ‘উইন্ডো’র দাবি তোলে কেন, এ প্রশ্নটা ধোনিকে কেউ করলেন না।
ধোনি ঢালাওভাবে ‘ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং’ বললেন বটে। কিন্তু মজাটা হলো, ভারতীয় দলের দুর্বলতম দিক বলে বিবেচিত বোলিং বরং অনেক ভালো ছিল এই টুর্নামেন্টে। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের শুরুতে বৃষ্টি এসে আসলেই ঝামেলায় ফেলে দিয়েছিল ভারতীয় স্পিনারদের। ওই একটা ইনিংস বাদ দিলে বাকি চারটি ম্যাচেই তো প্রতিপক্ষকে অলআউট করেছেন ভারতীয় বোলাররা, টি-টোয়েন্টিতে যা অনেক বড় ব্যাপার।
ভারতকে ডুবিয়েছে আসলে ব্যাটিং। চিরকালই ব্যাটিংটা ভারতের মূল শক্তি। এই বিশ্বকাপেও ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের আগে প্রতিপক্ষ অধিনায়কের মুখে একটা কথা ‘কমন’ ছিল, ‘ওদের ব্যাটিং লাইনআপটা দুর্দান্ত।’ অথচ সেই ‘দুর্দান্ত ব্যাটিং লাইনআপ’ থেকে বলতে গেলে বড় কোনো স্কোরই আসেইনি।
গত দুটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও তা-ই হয়েছিল, সেটির কারণটাও ছিল স্পষ্ট। শর্ট বলে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের নাচানাচি রীতিমতো কৌতুকের জন্ম দিয়েছিল ওই দুটি বিশ্বকাপে। তা লর্ডস বা ব্রিজটাউনের গতিময় উইকেটে না হয় চিরন্তন ওই দুর্বলতা কাল হয়েছিল। কিন্তু এই শ্রীলঙ্কায় প্রায় ‘হোম কন্ডিশনে’ কেন এমন ব্যর্থ ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা?
ধোনির ব্যাখ্যাটা এমন অদ্ভুত শোনাল! প্রথম বিশ্বকাপে ভারত নাকি ভালো করেছে ডারবানের উইকেটে বল সুইং করেছে বলে। ফ্ল্যাট উইকেটের চেয়ে তাঁর দলের জন্য সুইঙ্গিং বা টার্নিং উইকেটই বেশি ভালো। তা হলে ভারতের বোলাররা বেশি কার্যকর হয়। ও মা, ভারত তো ডুবল ব্যাটিং-ব্যর্থতায়। সেটি কি ফ্ল্যাট উইকেট বলে? ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের কি তা হলে ফ্ল্যাট উইকেটের চেয়ে বল সুইং করছে বা টার্ন করছে, এমন উইকেটই বেশি পছন্দ! কবে না ধোনি আবদার করে বসেন, ভারতের ব্যাটিংয়ের সময় এক রকম উইকেট চাই, বোলিংয়ের সময় আরেক রকম!
করলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। ক্রিকেট-বিশ্বে ভারতের ‘আবদার’ তো এখন ‘নির্দেশ’-এর মতোই! এখানেই দেখুন না, ক্রিকেট-বাণিজ্যের লক্ষ্মী ভারতের জন্য কী জামাই আদরই না ছিল! স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা যেখানে হাম্বানটোটা-ক্যান্ডিতে খেলে বেড়াল, ভারতের সব ম্যাচই কলম্বোয়। একমাত্র দল, যাদের সব ম্যাচই ‘প্রাইম টাইম’ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। সুপার এইটে শেষ ম্যাচ খেলার সুবিধাটাও নাকি আদায় করে নেওয়া। তার পরও যদি ভারত না পারে, আইসিসির আর কী-ই বা করার থাকে!

http://www.prothom-alo.com/detail/da...04/news/295039
Reply With Quote