View Single Post
  #15  
Old May 17, 2011, 03:56 PM
idrinkh2O's Avatar
idrinkh2O idrinkh2O is offline
Test Cricketer
 
Join Date: April 9, 2011
Favorite Player: Performing Tigers
Posts: 1,879

এসএসসি ’১১: অদম্য মেধাবী
নিজের রোজগারে পড়েছে ওরা

বিশাল বাংলা ডেস্ক | তারিখ: ১৮-০৫-২০১১



নূর মোহাম্মদ,ফাবিয়া রাইয়ান, মোস্তাফিজুর রহমান ও আলী হোসেন

জন্ম দরিদ্র পরিবারে। তাই সকালবেলা নাশতা খেয়ে বই নিয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়নি বললেই চলে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবারকে সহায়তা করতে শ্রমিকের কাজ করতে হয়েছে। ফাঁকে পড়ালেখা চালাতে হয়েছে, তাও নিজের রোজগারে। তার পরও থেমে থাকেনি ওরা। মেধা ও অধ্যবসায় তাদের অনন্য করে তুলেছে। এবার এসএসসি পরীক্ষায় পেয়েছে জিপিএ-৫। স্বপ্ন এখন আলোকিত ভবিষ্যতের।
দাদন নিয়ে ফরম পূরণ করেছিল নূর মোহাম্মদ
কখনো দিনমজুর বাবার সঙ্গে মাঠে কাজ, কখনো টিউশনি করে সংসারে সহযোগিতা করতে হয়েছে। কিন্তু পথচলা থেমে থাকেনি নূর মোহাম্মদের। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার লক্ষ্মীপাশা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখা থেকে সে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের দাশেরডাঙ্গা গ্রামের আকবর মোল্যা ও মা জরিনা বেগমের চার সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় ও তিন ভাইয়ের মধ্যে বড়। পাটকাঠির বেড়াঘেরা ছোট্ট একটি ঘরে তাদের বসবাস।
নূর মোহাম্মদ জানায়, দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সুদে টাকা নিয়ে পরীক্ষার ফরম পূরণ করতে হয়েছিল তাকে। সেই টাকা এখনো পরিশোধ করা হয়ে ওঠেনি। ভবিষ্যতে প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন দেখলেও কলেজে লেখাপড়া করানোর সামর্থ্য নেই তাঁর বাবার। লক্ষ্মীপাশা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. মুরাদ উদেদৗলা বলেন, ‘নূর মোহাম্মদ অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করেছে। কিন্তু অর্থের অভাবে তার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।’
নানার পেনশনের টাকায় পড়ালেখা করেছে ফারিয়া
‘আমি একজন নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষক হতে চাই। একজন শিক্ষকই শিক্ষার্থীর সুপ্ত আগুন জ্বালিয়ে তাকে নতুন সম্ভাবনার পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন।’ কথাগুলো ফরিদপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পাওয়া ফারিয়া রাইয়ানের। মা আম্মারা বেগম বলেন, ১৩ বছর আগে যৌতুকের কারণে ফারিয়ার বাবার সঙ্গে তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ‘পরে মেয়েকে নিয়ে চলে আসি ফরিদপুর শহরের লাহেড়ীপাড়ায় বাবার বাড়িতে। বাবার পেনশনের সামান্য টাকায় চলে ফারিয়ার পড়াশোনা।’ নানার মৃত্যুর পর মামা আব্দুল মুমিন ফারিয়ার পড়াশোনার দায়িত্ব নেন।
ফারিয়া বলে, ‘অভাবের মধ্যেই আমি বেড়ে উঠেছি। অষ্টম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছি। এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছি। ঢাকায় গিয়ে ভালো কলেজে পড়ার ইচ্ছে থাকলেও তা হবে না। তাই ফরিদপুরের সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজেই ভর্তি হতে হবে।’ ফারিয়ার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বেলা রানী সরকার জানান, ফারিয়া প্রকৃত অর্থে একজন মেধাবী ছাত্রী। ওর ভেতরের শক্তিতেই ও এগিয়ে যাচ্ছে।
নিয়মিত ক্লাসও করতে পারত না মোস্তাফিজ
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার কিশামত মালতীবাড়ী গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান এবারের দাখিল পরীক্ষায় ধরণীবাড়ী লতিফ রাজিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা থেকে জিপিএ-৫ পেয়েও চোখেমুখে অন্ধকার দেখছে। হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় এত দিন পড়ার খরচ জোগাতে মাঝেমধ্যেই মাঠে দিনমজুরের কাজ করত। রাতে পাড়া-প্রতিবেশীর কাছ থেকে কেরোসিন ধার নিয়ে পড়াশোনা করত। বাবা-মায়ের ইচ্ছা, মোস্তাফিজ প্রকৌশলী হবে। কিন্তু সে স্বপ্ন পূরণে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক অসামর্থ্য। গ্রাম পুলিশ বাবা আব্দুল মালেকের আয় বলতে মাসিক বেতনের ৮০০ টাকা। এ দিয়ে সংসারের খরচই চলে না। মাদ্রাসার শিক্ষক হামিদুর রহমান ও অধ্যক্ষ আব্দুল হালিম বলেন, ‘ছেলেটি হতদরিদ্র হওয়ায় আমরাই ফরম পূরণসহ যাবতীয় খরচ বহন করেছি। উচ্চশিক্ষার প্রতি তার অনেক আগ্রহ।’
কাজের ফাঁকে পড়াশোনা করেছে আলী হোসেন
সংসারে দুই বেলা অন্নের নিশ্চয়তা যেখানে নেই, সেখানে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া আলী হোসেনের কাছে ছিল স্বপ্নের মতোই। সেই স্বপ্ন সফল করতে অন্যের পানের বরজে নিয়মিত শ্রম বিক্রি করেছে। কাজের ফাঁকে পড়াশোনা করেই আলী হোসেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার মুন্সীগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে সব বিষয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে। আলমডাঙ্গার কেদারনগর গ্রামের আলাউদ্দিন ও সুফিয়া বেগমের তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় আলী হোসেনের পড়াশোনা ষষ্ঠ শ্রেণীর পর থেমে গিয়েছিল। এরপর সে চলে যায় মামার বাড়ি একই উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামে। মামারাও তেমন স্বচ্ছল ছিলেন না। তাই দিনের বেলা মাঠে কাজ ও রাতে মামাতো ভাইদের বই নিয়ে পড়াশোনা শুরু করে। ভাগ্নের আগ্রহ দেখে মামা মনিরুল ইসলাম তাকে মুন্সীগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন। এসএসসি পরীক্ষার কয়েক মাস আগে মামা মারা যান। এরপর সে পুরোদমে পানের বরজে শ্রমিক হিসেবে কাজ ও উপার্জনের টাকা দিয়ে পরীক্ষার ফরম পূরণ করে। কয়েকজন শিক্ষক নিখরচায় তাকে প্রাইভেট পড়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন। আলী হোসেন এখন আলোকিত মানুষ হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। অর্থাভাব তার এই স্বপ্ন কি পূরণ হতে দেবে?
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন মারুফ সামদানী, লোহাগড়া (নড়াইল); পান্না বালা, ফরিদপুর; মঞ্জুরুল হান্নান, উলিপুর (কুড়িগ্রাম) এবং শাহ আলম, চুয়াডাঙ্গা]
(Source: http://www.prothom-alo.com/detail/da...18/news/155125)
__________________
-- Alwayz with !!! Champions are made from something they have deep inside them - a desire, a dream, and a vision!
-- Bangladesh are the Runners-up in the 2012 ASIA Cup!
Reply With Quote