facebook Twitter RSS Feed YouTube StumbleUpon

Home | Forum | Chat | Tours | Articles | Pictures | News | Tools | History | Tourism | Search

 
 



Recent articles by author
"Bangladesh is on the right track to become a competitive team in near future". An interview with Jamie Siddons (2010)
Tri-nation ODI series 2010 preview : Testing time for Bangladesh (2010)
Ashraful needs to go (2009)
Bangladesh face familiar challenge against Sri Lanka (2008)
Siddons plans a Tiger uprising (2008)

 
Send Feedback | Email Article | Print Article | Font: | Size:

BanglaCricket Article

বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল ক্রিকেটার মোহাম্মদ রফিক বাংলাদেশের পক্ষে টেষ্ট এবং ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ উইকেটধারী বোলার। রফিক তার ছন্দময় স্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স বোলিং এর সাহায্যে ১২৫টি ওয়ানডেতে ১২৫টি উইকেট শিকার করেছেন এবং ক্যারিয়ারে ২০টি টেষ্ট মিস করার পরও তিনি ৩৩টি টেষ্টে ১০০টি উইকেট লাভ করেছেন। রফিক দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে সদ্য শেষ হওয়া টেষ্ট সিরিজে ৬ উইকেট গ্রহন করে সেই এলিট ক্লাবের সদস্য হয়েছেন যার সদস্যরা টেস্ট ও ওয়ানডে, ক্রিকেটের এই দুই ভার্সনেই কমপক্ষে ১০০টি উইকেট শিকার করেছেন এবং ১০০০ রান সংগ্রহ করেছেন। ২য় টেষ্টের প্রাক্কালে বাংলাক্রিকেটের এডিটর খন্দকার মিরাজুর রহমানের নেয়া এই সাক্ষাৎকারে রফিক খোলাখুলিভাবে কথা বলেছেন অবসর, ভবিষ্যত পরিকল্পনা, বাংলাদেশ ক্রিকেটের বর্তমান অবস্থা এবং টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পর্যুদস্ত অবস্থা নিয়ে।

"বাংলাদেশের পক্ষে খেলতে পারাটা আমার জীবনের সেরা অর্জন" — মোহাম্মদ রফিক।

Published: 4th March, 2008


Discuss

বাং লাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল ক্রিকেটার মোহাম্মদ রফিক বাংলাদেশের পক্ষে টেষ্ট এবং ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ উইকেটধারী বোলার। রফিক তার ছন্দময় স্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স বোলিং এর সাহায্যে ১২৫টি ওয়ানডেতে ১২৫টি উইকেট শিকার করেছেন। ক্যারিয়ারে ২০টি টেষ্ট মিস করার পরও তিনি ৩৩টি টেষ্টে ১০০টি উইকেট লাভ করেছেন। রফিক দক্ষিণ আফ্রিকার সাথে সদ্য শেষ হওয়া টেষ্ট সিরিজে ৬ উইকেট গ্রহন করে সেই এলিট ক্লাবের সদস্য হয়েছেন যার সদস্যরা টেস্ট ও ওয়ানডে, ক্রিকেটের এই দুই ভার্সনেই কমপক্ষে ১০০টি উইকেট শিকার করেছেন এবং ১০০০ রান সংগ্রহ করেছেন।

বোলিং এর পাশাপাশি রফিক তার আক্রমনাত্মক ব্যাটিং দিয়েও বাংলাদেশ ক্রিকেটকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করেছেন। ১৯৯৭ সালে ভারতের হায়দ্রাবাদে ওপেনার হিসেবে নেমে ৭৭ রানের ইনিংসের কল্যাণে বাংলাদেশ প্রথমবারের মত ওডিআই জেতে কেনিয়ার বিপক্ষে। তার ব্যাটিং অর্জনের মধ্যে আরও আছে ২০০৪ সালে গ্রস-আইলে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করা ঝকঝকে একটি টেষ্ট শতক।

১৯৮৫ সালে বাঁ-হাতি পেসার হিসাবে রফিক তার ক্যারিয়ার শুরু করেন ২য় বিভাগের দল বাংলাদেশ স্পোর্টিং এর পক্ষে। তরুণ রফিক তার কার্যকর সীম বোলিং এ নজর কাড়তে সক্ষম হন এবং তার পরের বছরেই যোগ দেন প্রথম বিভাগের দল অমরজ্যোতিতে। এরপর সেখান থেকে ১৯৮৮ সালে প্রিমিয়ারের দল বিমানে যোগ দেন একজন বাম হাতি পেসার হিসাবেই। এই বিমানে খেলার সময়েই রফিকের ক্যারিয়ারে পুনর্জন্ম হয়। বাঁ-হাতি পেসার থেকে হয়ে ওঠেন বাঁ-হাতি অর্থোডক্স স্পিন বোলার। রফিকের এই পরিবর্তনে সবচাইতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন বিমানে তার টীমমেট পাকিস্তানী ওয়াসিম হায়দার।

Mohammad Rafique
টেস্টে ১০০তম উইকেট শিকার করার পর মোহমাম্মদ রফিক, চট্টগ্রাম ১মার্চ ২০০৮.
একজন বাঁ-হাতি স্পিনার হিসাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রফিকের সাফল্য অনুপ্রাণিত করেছে নতুন প্রজন্মের তরুণ ক্রিকেটারদের আর তার পথ ধরেই বর্তমানে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অন্যতম প্রধান শক্তি স্লো লেফট আর্ম অর্থোডক্স স্পিনাররা।

২য় টেষ্টের প্রাক্কালে বাংলাক্রিকেটের এডিটর খন্দকার মিরাজুর রহমানের নেয়া এই সাক্ষাৎকারে রফিক খোলাখুলিভাবে কথা বলেছেন অবসর, ভবিষ্যত পরিকল্পনা, বাংলাদেশ ক্রিকেটের বর্তমান অবস্থা এবং টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পর্যুদস্ত অবস্থা নিয়ে।

বাংলাক্রিকেট : প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ জানাই বাংলাদেশ ক্রিকেটে আপনার অমূল্য অবদানের জন্য। ফর্মে থাকা অবস্থায় মাঠে থেকে ক্রিকেটকে বিদায় জানাবার এই সিদ্ধান্তে নিশ্চয়ই আপনি সন্তষ্ট।

মোহাম্মদ রফিক : বাংলাদেশের পক্ষে খেলতে পারাটাই আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। দেশের জন্য আমি সবসময়ই সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। আমি খুশী যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কিছুটা হলেও সাফল্য লাভ করেছি। তবে ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি মোটেও খুশী নই। আমি মনে করি ক্রিকেটার হিসাবে বাংলাদেশকে এখনো কিছু দেবার ক্ষমতা আমার আছে। আমি কমপক্ষে আরো এক বছর ক্রিকেট খেলতে চেয়েছিলাম। কেননা আগামী একবছরে বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি টেষ্ট খেলবে। আমি আরো এক বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মত যথেষ্ট ফিট আছি।

বাংলাক্রিকেট : আরো এক বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আপনি তাহলে অবসর নিচ্ছেন কেন?

মোহাম্মদ রফিক : আমি অবসর নিচ্ছি একটি প্রতিবাদ হিসাবে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাথে জড়িত কিছু লোকের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হলো আমার এই অবসর। ২০০০ সালে প্রথম টেস্ট খেলি। এরপর থেকে আমি তিন বছর একটানা টেস্ট দলের বাইরে ছিলাম। যাদের কারণে আমি তখন দলে জায়গা পাইনি, তারাই এখন আবার ক্রিকেট বোর্ডে ঢুকেছে। ওরা আসার পরেই কিন্তু আমি নিউজিল্যান্ড ট্যুরে বাদ পড়েছি। এইসব লোকের দ্বারা আবারো অপমানিত হবার চেয়ে সম্মানের সাথে সরে যাওয়াটাকেই আমি শ্রেয়তর মনে করেছি।

গত বছর হঠাৎ করেই আমাকে ওয়ানডে দল থেকে বাদ দেয়া হলো, অথচ ২০০৭-এ আমার ওয়ানডে পারফর্মেন্স যথেষ্ট ভালো ছিলো। আমি ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডেতে ৪টি উইকেট পেয়েছি, কিন্তু তা' সত্ত্বেও তারা ঘোষণা দিলেন আমি নাকি আর ওয়ানডের উপযুক্ত নই। বাদ দেবার আগে তারা আমাকে ন্যূনতম জানানোরও প্রয়োজন মনে করেনি। অন্যায়ভাবে আমার ওডিআই ক্যারিয়ার শেষ করার পর তারা যখন আমাকে নিউজিল্যান্ড সফরে বাদ দিলো তখনই আমি সিদ্ধান্ত নেই যে সরে যাবার সময় হয়েছে। যখন রাজনীতি আর ব্যক্তিগত পছন্দ অপছন্দ ক্রিকেটের চেয়ে উপরে উঠে যায় তখন বিদায় জানানোটাই আমার কাছে সম্মানজনক মনে হয়েছে। আমি ১০০ উইকেট থেকে মাত্র ২ উইকেট দূরে আছি। আমি দৃঢ় বিশ্বাস যে খুব সহজেই আমার মোট উইকেটের সংখ্যা ১৫০ বা তার চেয়েও বেশী হতে পারতো যদি ফর্মের তুঙ্গে থাকা অবস্থায় আমাকে ৩বছর টেস্ট দল থেকে বাইরে রাখা না হতো। অবশ্য আমার মতে ওনারা আমার সাথে নয়, বরং আমাকে দলের বাইরে রেখে দেশের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। একই কাজ যেন ভবিষ্যতে পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্যই প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে আমার এ সিদ্ধান্ত।

আমি মনে করি যারা সরাসরি খেলা অথবা বোর্ডের সাথে যুক্ত আছেন, দেশের কল্যানে তাদের ক্ষুদ্র রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত স্বার্থের উর্ধ্বে থাকা উচিত। দুঃখজনক হলেও সত্য যে এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বাস্তবতা সম্পূর্ণ বিপরীত।

বাংলাক্রিকেট : অবসরের পরে আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?

মোহাম্মদ রফিক : আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও আমি আরো ৩/৪ বছর ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে চাই। আমি ক্রিকেটার হিসাবে আমার অর্জন ও অভিজ্ঞতাকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের কাজে লাগাতে চাই। এর আগেও আমি বলেছি যে আমি কিউরেটর হতে চাই। আমরা এখনো আমাদের চাহিদা অনুযায়ী উইকেট প্রস্তুত করতে ব্যর্থ হওয়ায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে "হোম অ্যাডভান্টেজ" নিতে পারছিনা। আমি ক্রিকেট থেকে পাওয়া আমার সকল শিক্ষাকে আমাদের বোলিং এর উপযোগী উইকেট বানানোর কাজে লাগাতে চাই। আর সেটি করতে পারলেই দেশের মাটিতে আমরা টেস্ট জিততে শুরু করবো। আমি মনে করি যে খেলার মধ্যে থেকে বিভিন্ন উইকেট সম্পর্কে শিক্ষা লাভ করা একজন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার যেকোন পুঁথিগত জ্ঞানের অধিকারী মানুষের চাইতে অনেক ভালো কিউরেটর হতে পারবে।

এ ছাড়াও আমি দেশের বিভিন্ন স্থানে তরুণ ক্রিকেটারদের জন্য স্পিন বোলিং এর উপর ক্যাম্প চালাতে আগ্রহী। আমি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য কাজ করতে চাই, তবে আমি নিশ্চিত নই যে বোর্ড থেকে আমাকে সেই কাজ করার সুযোগ দেওয়া হবে কিনা।

বাংলাক্রিকেট : আপনি বাংলাদেশে বাঁ-হাতি অর্থোডক্স স্পিনের পথ প্রদর্শক। আপনাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক ভালো বাঁ-হাতি স্পিনার বেরিয়ে আসছে। তাদের উদ্দেশ্যে অবসরের আগে আপনার বক্তব্য কি হবে?

মোহাম্মদ রফিক : এটা আসলেই একটি চমৎকার ব্যাপার যে আমি অবসরে গেলেও আমাদের বেশ কয়েকজন ভালমানের বাঁ-হাতি স্পিন বোলার আছেন। আব্দুর রাজ্জাক, সাকিব আল হাসান ও এনামুল হক জুনিয়রতো এরই মধ্যে বাংলাদেশের হয়ে খেলছে। এ ছাড়াও বেশ কিছু উঠতি বোলার আছেন যারা সামনের দিনগুলিতে জাতীয় দলে খেলার দাবীদার।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট একটি কঠিন জায়গা এবং এখানে কঠিন পরিশ্রম ছাড়া সাফল্য লাভের কোন সম্ভাবনা নেই। আমার মতে কঠিন পরিশ্রম ছাড়া "কিপ ইট সিম্পল" হচ্ছে একজন স্পিন বোলারের সাফল্যের মূল রহস্য। বোলিং এ বৈচিত্র্য দরকার আছে, মাঝে মাঝে ব্যতিক্রমী ডেলিভারি স্পিন বোলারের গোপন অস্ত্র। কিন্ত খেয়াল রাখতে হবে যে বৈচিত্র্যের জন্য যেন এ্যাকুরেসি নষ্ট না হয়ে যায়। একজন স্পিনার হিসাবে আমি সব সময় একটি নির্দিষ্ট লাইন ও লেংথে বল করে ব্যাটসম্যানকে হতাশ করার চেষ্টা করেছি। আর ব্যাটসম্যান হতাশ হলে সে ভুল করবেই।

Mohammad Rafique
অষ্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফতুল্লা টেস্টে ৫ উইকেট শিকারের পর মোহাম্মদ রফিক, ১১ এপ্রিল ২০০৬
বর্তমান বাঁ-হাতি স্পিনারদের মধ্যে রাজ্জাক এর ভবিষ্যৎ উজ্জল এবং আমি মনে করি সাকিব আল হাসান একজন ভালো মানের আন্তর্জাতিক অলরাউন্ডার হয়ে উঠবে। এদের বাইরে মোশাররফ হোসেন রুবেল নামে নতুন একটি ছেলে আমার নজর কেড়েছে। মোশাররফ জাতীয় লীগে আমার টিমমেট ছিলো। ওর বোলিং-এর ডিসিপ্লিন এবং বৈচিত্র্য দুটোই আছে এবং আমি ওর মাঝে নিজের ছায়া দেখতে পেয়েছি। আমি মনে করি মোশাররফ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ স্পিন সম্রাট হবার ক্ষমতা রাখে।

বাংলাক্রিকেট : আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছেন। এই দীর্ঘ ক্যারিয়ারে নিশ্চয়ই মনে রাখার মত অনেক স্মৃতি আছে !!

মোহাম্মদ রফিক : ক্রিকেটের সাথে আমার সম্পর্কটা খুব আবেগের। খুব সাধারণ একটি পরিবার থেকে আসা এই রফিককে ক্রিকেট অনেক কিছু দিয়েছে। আজ বিশ্বের নানা দেশের মানুষ কেরানীগঞ্জের এই মানুষটাকে চেনে কেবলমাত্র ক্রিকেটের কারনেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার অনেক স্মৃতি আছে যেগুলো অবসরের পরও আমার সবসময় মনে পড়বে। আমাকে যদি ৫টি সেরা স্মৃতি বেছে নিতে বলা হয় তাহলে সবার প্রথমে থাকবে ১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত আইসিসি ট্রফি জয়ের স্মৃতিটি, কেননা এই জয়ের উপরেই দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। এরপরেই থাকবে ২০০০ সালে অভিষেক টেস্ট খেলার স্মৃতি, ১৯৯৭ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ৭৭ রান করে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ জয়, ২০০৪ সালে গ্রস আইলে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সেঞ্চুরি এবং সবশেষে ২০০৭ এর বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারতের বিপক্ষে জয়লাভ।

এছাড়াও বোলার হিসাবে পাকিস্তানের বিপক্ষে মুলতান টেষ্ট এবং অষ্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফতুল্লা টেস্টের কথা বিশেষভাবে স্মরণ থাকবে। এই দুটি টেস্টেই আমরা দুটি প্রতিষ্ঠিত টেস্ট দলের বিপক্ষে জয়ের খুব কাছাকাছি পৌছে গেছিলাম, যদিও শেষ পর্যন্ত টেষ্ট ক্রিকেটের দুই কিংবদন্তীর (মুলতানে ইনজামাম উল হক এবং ফতুল্লায় রিকি পন্টিং) কাছে হার মানতে বাধ্য হই। মুলতান টেস্ট নিয়ে আমার কিছু আক্ষেপ আছে। আমাদের কয়েকটি জেনুইন আবেদন আম্পায়াররা প্রত্যাখ্যান করেছেন। এর যে কোন একটি আউট দিলে পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা প্রথম টেস্ট জয় পেতাম।

বাংলাক্রিকেট : আপনি বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের দলে ছিলেন আর অবসর নিচ্ছেন বাংলাদেশের ৫৩তম টেস্টে। এই দীর্ঘ সময়েও বাংলাদেশ কেন টেস্ট দল হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে ব্যর্থ হলো? এখনও দুটি ভাল পারফর্ম্যান্সের মধ্যে সময়ের বিশাল ব্যবধান থাকে কেন?

মোহাম্মদ রফিক : আমার মনে হয় ক্রিকেটের উন্নতির জন্য যা যা করা দরকার ছিল তা আমরা ঠিকমতো করতে পারিনি। আমাদের উন্নতির জন্য নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে শীর্ষ টেস্ট দলগুলির সাথে নিয়মিত খেলা দরকার আর সেই সাথে ঘরোয়া ক্রিকেটের অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং ক্রিকেটারদের সুযোগ সুবিধা বাড়ানো প্রয়োজন। একটা বাদ দিয়ে আরেকটাতে কোন ফল হবেনা।

এটা আসলেই লজ্জার ব্যাপার যে ৭ বছর পরেও এখনো আমরা ঘরোয়া ক্রিকেটের মান উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো গড়ে তুলতে পারিনি। আমরা যখন ভাল খেলছিলাম তখন ১৩ মাসের টেস্ট বিরতি আমাদের ক্ষতি করেছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমাদের আর একটি সমস্যা হলো আম্পায়ারিং। অনেক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমরা ভুল আম্পায়ারিং এর শিকার হয়েছি যেটি আমাদের তরুণ ক্রিকেটোরদের আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠতে সাহায্য করেনি। একটি বা দুটি জয় পেলে পুরো ব্যাপারটিই পাল্টে যেতে পারতো।

এছাড়া আমাদের ক্রিকেট নীতিতেও সমস্যা আছে। আমাদের টিম ম্যানেজমেন্ট কখনোই চূড়ান্ত একাদশ নির্বাচনে পূর্ণ স্বাধীনতা পায় না। একাদশ নির্বাচনে কোচ এবং অধিনায়কের ভূমিকাই সবচেয়ে বেশি থাকা উচিত। টেলিফোন করে দেশের বাইরে বিভিন্ন ট্যুরে একাদশ ঠিক করে দেয়ার প্রবণতা বন্ধ করতে হবে। এটা কোচ এবং অধিনায়ককে তাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা দিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে বাধা দেয়।

যারা কোন স্বার্থ ছাড়াই ক্রিকেটকে ভালবাসে এরকম লোকদের ক্রিকেট বোর্ডে থাকা উচিত। ক্রিকেট বোর্ড পেশাদার না হলে আমাদের টেস্ট অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত হতে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সময় লাগবে।

বাংলাক্রিকেট :সবাই ঘরোয়া ক্রিকেটের অবকাঠামো উন্নয়নের কথা বলে। কিন্তু সেই অনুযায়ী অগ্রগতি নেই। আপনার কি কোন নির্দিষ্ট প্রস্তাব আছে?

মোহাম্মদ রফিক : আমার প্রস্তাব খুব সহজ এবং সাধারণ। আমাদের দুটো জিনিস দরকার, কোচ এবং পর্যাপ্ত পরিমানে ইনডোর। বিদেশের কোচিং একাডেমী থেকে ট্রেনিং নিয়ে আসা পর্যাপ্ত পরিমান কোচ আর প্রতিটি বিভাগীয় শহরে কয়েকটি করে ইনডোর নির্মাণ করা দরকার। আমরা বৃষ্টি মৌসুমে প্রায় ৬ মাস খেলতে পারি না। এই সময়ে খেলোয়াড়রা ইনডোরে প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে পারবে। ভালো খেলোয়াড় হতে হালে ফিটনেস ধরে রাখার জন্য ১২ মাসই অনুশীলনের প্রয়োজন আছে।

Mohammad Rafique
গ্রস আইলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে রফিকের সেঞ্চুরী, ২৯ মে ২০০৪
আর বেশী করে প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কোচ দরকার আমাদের উঠতি ক্রিকেটারদের সঠিকভাবে ক্রিকেটের বেসিক শিখাবার জন্য। এখন শীর্ষ পর্যায়ে খেলছে এমন অনেক খেলোয়াড়েরও বেসিকে সমস্যা আছে কারণ তারা খেলা শুরুর দিকে একজন ভালো প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কোচের কাছে যাবার সুযোগ পাননি। আমাদের জনসংখ্যা অনেক বড় এবং ক্রিকেটের জনপ্রিয়তাও আছে। এই অবস্থায় আমি মনে করি এই দুটি ব্যাপার ঠিক করা গেলে সময়ের সাথে সাথে বাদবাকি ব্যাপারগুলোও ঠিক হয়ে যাবে।

বাংলাক্রিকেট : আপনি অবসরে যাচ্ছেন, খালেদ মাসুদ এর মাঝেই অবসরের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, হাবিবুল বাশারও ক্যারিয়ারের শেষপ্রান্তে। আপনারা তিনজন দীর্ঘদিন বাংলাদেশকে সার্ভিস দিয়েছেন। আপনি কি মনে করেন আপনারা তিনজন প্রায় একসাথে চলে যাবার ফলে দলে কোন শূন্যতা তৈরী হবে?

মোহাম্মদ রফিক : আমি মনে করিনা যে কোন শূন্যতা তৈরী হবে। কেউই অপরিহার্য নয় এবং একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে সবাইকেই অবসরে যেতে হবে। আমাদের দলে অনেক প্রতিশ্রুতিশীল তরুণ আছে। এইসব তরুণদেরই বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আশরাফুল একজন পজিটিভ অধিনায়ক যদিও রান না পাবার কারণে কিছুটা চাপের মধ্যে আছে। আর যতটুকু দেখেছি তাতে সিডন্সকেও একজন ভালো কোচ মনে হয়েছে। আমি বাংলাদেশের সামনে উজ্জল ভবিষ্যত দেখি।

বাংলাক্রিকেট :আপনি বাংলাদেশ ক্রিকেটের একজন প্রবাদপুরুষ। বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা আপনাকে দীর্ঘ সময় মনে রাখবে। সবার শেষে এই আপনার ভক্তদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।

মোহাম্মদ রফিক : বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তরা আমাকে অনেক ভালবাসা ও শ্রদ্ধা দিয়েছেন। আমি জানি না তার কতটুকু আমি পরিশোধ করতে পেরেছি। আমি বাংলাদেশের ক্রিকেটের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রাখতে চাই। আমি স্বপ্ন দেখি যে আমাদের সবার চেষ্টায় বাংলাদেশ অদূর ভবিষ্যতে শীর্ষ ৫টি টেস্ট দলের একটিতে পরিণত হয়েছে।

বাংলাক্রিকেট : আপনার সময়ের জন্য অনেক ধন্যবাদ এবং বাংলাক্রিকেটের পক্ষ থেকে আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা।

মোহাম্মদ রফিক : আপনাকেও ধন্যবাদ।

 

About the author(s): Khondaker Mirazur Rahman spends as much time on BanglaCricket as on his Post-Doctoral research on Gene Targeted Drug Design. Like a true scientist his articles are all well researched. He goes by the nick "Miraz" on our forums and is also a BanglaCricket editor.

 

This page has been viewed 19690 times.

 
 

About Us | Contact Us | Privacy Policy | Partner Sites | Useful Links | Banners |

© BanglaCricket