In this interview, Khaled Mashud offered some solutions to improve our domestic cricket structure. Not only he talked about it but he showed us how to do it...look at the Rajshahi division now!!! I hope other cricketers will follow his foot-step inshallah. Also, I think if BCB can implement some of his ideas, we'll have a bright future inshallah.
**I've posted his interview in multiple threads 'cause I like it a lot and I hope his message reaches to everyone!!!
@ Murad, I opened this thread per your suggestion!
---------------------------------------------------------------------------------------------------
বিদায়বেলায়...
খালেদ মাসুদ
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন আগেই। এবার ছাড়লেন প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটও। ক্যারিয়ার ও বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট নিয়ে খালেদ মাসুদের মুখোমুখি উৎপল শুভ্র
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর তো প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট খেলে যাওয়ার অনুপ্রেরণা খুঁজে পাওয়া কঠিন। আপনি যে এর পরও খেলে গেলেন, কারণটা কী?
খালেদ মাসুদ: প্রথম কথা, একটা রাগ ছিল। জাতীয় দল থেকে যখন বাদ পড়লাম, তখন আমার ফিটনেসে কোনো ঘাটতি ছিল না। একটা সময় বুঝলাম, জাতীয় দলের দরজাটা বন্ধ হয়ে গেছে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট থেকে তাই রিটায়ার করলাম। ফার্স্ট ক্লাস ক্যারিয়ারটা চালিয়ে গেলাম কেন? আমি মনে করি, যে জিনিসটা করতে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাওয়া যায়, সেটি করা উচিত। রাজশাহী টিমে খেলাটা আমি খুবই এনজয় করতাম। আমি বলব, রাজশাহী টিম একটা বাগানের মতো। একজন মালী একটা বাগান তৈরি করলে যেমন আনন্দ পায়, রাজশাহী টিমটাও আমার কাছে সে রকম। সে কারণেই খেলে গেছি।
তা হলে ছাড়ার সিদ্ধান্তটাও কি খুব কঠিন ছিল?
খালেদ মাসুদ: খুব কঠিন ছিল, বলব না। এবারের টুর্নামেন্টে কিন্তু আমি প্রথম ম্যাচটা খেলেছি আর ফাইনালটা। আমি ইচ্ছা করেই খেলিনি। কারণ, রাজশাহী বিভাগে ভালো খেলোয়াড়ের সংখ্যা অনেক। আমি খেললে তাদের একজনকে বাইরে বসে থাকতে হয়। সিলেট বা বরিশাল বিভাগে অনেক তরুণ খেলোয়াড় আছে, যারা এক-দেড় বছরের মধ্যেই ফার্স্ট ক্লাস ক্যারিয়ার করে নিয়েছে। সেখানে রাজশাহী বিভাগে ২০-২৫ জন খেলোয়াড় আছে, যারা অন্য দলের অনেক খেলোয়াড়ের চেয়ে ভালো হয়েও দলে আসতে পারছে না। এবারই দেখেন না, ফাইনালের আগের রাউন্ডেই মিজান নামের একটা ছেলে ১৭৫ করল, অথচ জুনায়েদ-অমিরা চলে এসেছে বলে ও ফাইনালে খেলতে পারল না। আমি খেললেও এমন একজন বাইরে বসে থাকে। তাই ভাবলাম, আমার আর ভবিষ্যৎ কী? আমি সরে গিয়ে বরং নতুন একজনকে সুযোগ করে দিই।
বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ (১১৪) খেলেছেন আপনি। এ দেশের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট-ইতিহাসের সাক্ষীও। অভিজ্ঞতাটা কীভাবে বর্ণনা করবেন?
খালেদ মাসুদ: আসলে এই পর্যায়ে ক্রিকেট খেলব, এটা কখনো চিন্তাই করিনি। কখনো কখনো পরিশ্রম আর ধৈর্য মানুষকে একটা জায়গায় নিয়ে যায়। ছোটবেলায় খেলা দেখতাম, বুলবুল ভাইয়েরা রাজশাহীতে খেলতে যেতেন। একটা সময় তাঁদের সান্নিধ্য পেলাম, একসঙ্গে খেললাম। খুব বেশি দূরের কথা কখনো চিন্তা করিনি। খেলে গেছি, আর ভেবেছি, আজকের দিনটা আমাকে ভালো খেলতেই হবে। কাল যেন আরও ভালো খেলতে পারি। এভাবেই কখন যে ১১৪টা ম্যাচ হয়ে গেছে, আমি নিজেই জানি না। আমি কখনোই পরিসংখ্যান-টরিসংখ্যান নিয়ে মাথা ঘামাইনি। কেউ হয়তো ইন্টারনেটে দেখে বলল, ‘তোর এত রান, এত অ্যাভারেজ’—তখন হয়তো জানলাম। আমার মন্ত্র ছিল, আজকের দিনটাতে ভালো করার জন্য যা করার করতে হবে।
প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে শততম ম্যাচটাও কি খেয়াল করেননি?
খালেদ মাসুদ: না। ১১৪টা ম্যাচ খেলেছি, এটাও জানতাম না।
বাংলাদেশে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটের বর্তমান অবস্থা কী?
খালেদ মাসুদ: বাস্তব চিত্র তুলে ধরলে সেটি নেগেটিভ কথা হয়ে যাবে। কদিন আগে আমি এসিসির কোচিং কোর্সে গিয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটের একটা সাফল্যের গল্প বললাম। সেটি রাজশাহী ডিভিশন টিম। বললাম, আমাদের দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে দুই ধরনের ‘পি’ ছিল। এক ‘পি’ মানে পিকনিক—এ ধরনের খেলোয়াড়েরা আসত, টিএ-ডিএ নিয়ে খেলে চলে যেত। অন্য ‘পি’ মানে প্রেস্টিজ। ওদের মনে হতো, কেন হারলাম? প্রতিপক্ষ কেন আমাদের নিয়ে হাসাহাসি করবে? ওরাই লড়াই করে রাজশাহীকে আজকের জায়গায় নিয়ে এসেছে। তো আমাদের ফার্স্ব ক্লাস ক্রিকেটটা এখনো সেই প্রথম ‘পি’ মানে পিকনিকই হয়ে আছে। এর অনেক কারণ। একটা তো রাজনীতি। আমাকে বলেন, সরকার চেঞ্জ হলে ক্রিকেটের লোকগুলোও সব কেন চেঞ্জ হয়ে যাবে? যারা কাজের লোক, তাদের তো সব সময়ই থাকা উচিত। আমাদের ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে খুব সুন্দর আনুষ্ঠানিকতা হচ্ছে। কিন্তু খেলার মান বাড়ছে না।
কাগজে-কলমে তো বাংলাদেশের প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট-কাঠামো অস্ট্রেলিয়ার মতো। ছয়টি বিভাগীয় দল, কিন্তু মিলটা বোধ হয় ওখানেই শেষ...
খালেদ মাসুদ: আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। আমাদের দেশের ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটের যে কাঠামো, সেটি হলো তিন মাসের একটা প্যাকেজ টুর্নামেন্ট। এরপর থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ। আর কোনো খবর নেই। আমি প্লেয়ারদের দোষ দেব না। আপনি চারাগাছ লাগিয়ে যেমন পরিচর্যা করবেন, তেমন গাছই তো হবে। আমাদের ছয় বিভাগে ছয়টা মাঠ আছে। কিন্তু কোনো ফ্যাসিলিটিজ নেই। ছয়টা স্টেডিয়ামেই যদি জিম থাকত, প্লেয়াররা সারা বছর প্র্যাকটিসের মধ্যে থাকত, তাহলেই কিন্তু চেহারাটা বদলে যেত। এখন যেটা হচ্ছে, প্লেয়াররা তিন মাস ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট খেলছে আর তিন মাস ক্লাব ক্রিকেট, বাকি সময়টা বসে থাকছে। এই সময়ে গ্রাফটা নেমে যাচ্ছে, পরের বছর আবার খেলার সময় আগের জায়গায় আসছে, কিন্তু ইমপ্রুভ করছে না। অথচ বাকি ছয় মাসও যদি ন্যাশনাল টিমের মতো সুযোগ-সুবিধা থাকত, তা হলে খেলোয়াড়দের মান যেমন বাড়ত, তেমনই ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটটাও অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ূর্ণ হতো।
টেস্ট খেলুড়ে একটা দেশের ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট টুর্নামেন্টের কাজ হলো, ক্রিকেটারদের টেস্ট পর্যায়ের জন্য প্রস্তুত করে তোলা। বাংলাদেশের জাতীয় লিগ কি সেটি করতে পারছে?
খালেদ মাসুদ: একদমই না। সিম্পল একটা উদাহরণ দিই। এই যে জাতীয় লিগের ফাইনালে পাঁচ দিনের ম্যাচ খেললাম, এতে আমি যত না টায়ার্ড হয়েছি, আমার চেয়ে অনেক ইয়াং প্লেয়ার আরও বেশি টায়ার্ড হয়ে গেছে। সে হয়তো শারীরিকভাবে ফিট, কিন্তু টানা পাঁচ দিন খেলার মতো মানসিকভাবে ফিট নয়। ওদের দোষ দিয়ে তো লাভ নেই। ওরা তো পাঁচ দিনের ক্রিকেট খেলার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ারই সুযোগ পায়নি। আজ যদি ছয়টা বিভাগে এমন একটা জায়গা থাকত, যেখানে ভালো ফিজিও-ট্রেনারের তত্ত্বাবধানে ওরা নিজেদের তৈরি করতে পারত, তা হলে ফার্স্ট ক্লাস টুর্নামেন্টের চেহারাই বদলে যেত। জাতীয় দলও লাভবান হতো। রাজশাহীর ঘটনাই দেখেন না। রাজশাহী কিন্তু এখন আর ৫-৬ নম্বর হয় না। হয় এক হয়, নয় দুই। কারণটা কী? কারণ, ওখানে মাঠে ক্রিকেটটা আছে। সারা বছর প্র্যাকটিস হয়, একটা জিম আছে, টুর্নামেন্ট হয়। ক্রিকেট বোর্ডের কোনো সাহায্য ছাড়া এই একটু কাজ করাতেই এই উন্নতি। একবার ভাবেন, ছয়টা বিভাগেই যদি আমরা এমন করতে পারতাম, তা হলে কম্পিটিশনটা কত হাই হতো!
রাজশাহীতে বলতে গেলে আপনার নেতৃত্বে ক্রিকেটাররাই এই বিপ্লবটা করেছেন। কিন্তু এটি তো ক্রিকেটারদের কাজ নয়। এটি হওয়া উচিত আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার মাধ্যমে। অথচ আমরা সেই কবে থেকে এটি হবে-হচ্ছেই শুনে যাচ্ছি...।
খালেদ মাসুদ: আঞ্চলিক সংস্থা করতেই হবে। সবকিছু সেন্ট্রালি করার চেষ্টা করলে হবে না। আঞ্চলিক পর্যায়ে কর্মকর্তাদেরও জবাবদিহি থাকবে। ধরুন, রাজশাহী বিভাগীয় ক্রিকেট সংস্থা হলে তাদের আলাদা নির্বাচক কমিটি থাকবে। রাজশাহীর মূল দল ছাড়াও রাজশাহী ‘এ’ টিম, একাডেমি টিম, আন্ডার নাইনটিন টিম থাকবে। বিভাগের মধ্যেই বিভিন্ন পর্যায়ে খেলা হবে। সেখান থেকে সেরা দলগুলো আসবে জাতীয় পর্যায়ে। ক্রিকেট বোর্ড সাহায্য করবে, তবে আঞ্চলিক সংস্থাকে নিজ উদ্যোগে স্পনসর জোগাড় করতে হবে।
আপনার কথা শুনে তো জেমি সিডন্সের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার পর জেমি বলেছেন, বাংলাদেশে সবাই জানে কী করতে হবে, কিন্তু কেউই তা করে না...
খালেদ মাসুদ: আসলেই তাই। আরেকটা জিনিস, বোর্ডে বা আঞ্চলিক সংস্থায় এত অনারারি সদস্যের কোনো প্রয়োজন নেই। পেশাদারদের দায়িত্ব দিতে হবে। ভুল করলে তার জবাবদিহি থাকবে। নীতিগত সব সিদ্ধান্ত বোর্ডের অনারারি সদস্যরা নেবেন, তবে ঘরোয়া ক্রিকেটসহ সব খেলা চালানোর দায়িত্ব থাকবে পেশাদারদের ওপর।
বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে যেকোনো সভা-সেমিনারেই ‘এসব করতে হবে’ বলে শোনা যায়। কিন্তু টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর প্রায় ১১ বছর পেরিয়ে গেলেও হচ্ছে না কেন?
খালেদ মাসুদ: এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন। অনেক ভালো মানুষ আছে। অনেকের সদিচ্ছা আছে। আমার মনে হয়, আমাদের বোর্ডের গঠনতন্ত্রেও পরিবর্তন দরকার। এখন কী হচ্ছে, স্পোর্টসের সঙ্গে কোনো দিন সম্পর্ক ছিল না, এমন লোকও টাকা দিয়ে ক্লাবের কাউন্সিলরশিপ কিনে নিচ্ছে। তারাই ক্রিকেট বোর্ডে ঢুকে যাচ্ছে। গঠনতন্ত্রে এটা বন্ধ করার একটা উপায় থাকতে হবে। আরেকটা ব্যাপার, বোর্ডে বা আঞ্চলিক সংস্থায় ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটারদের জন্য একটা কোটা থাকতে হবে।
জাতীয় লিগ নিয়ে আরেকটা প্রশ্ন, হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতি তুলে দেওয়ায় মানুষের তো নিজের বিভাগীয় দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততাই তৈরি হচ্ছে না, তাই না?
খালেদ মাসুদ: এই যে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ের পরিবর্তে নিউট্রাল ভেন্যুতে খেলা হচ্ছে, আমি এটার ঘোর বিপক্ষে। খেলাটা তো হয় মানুষের জন্য, মানে দর্শকদের জন্য। এখন বগুড়ায় যখন ঢাকা-খুলনা খেলা হচ্ছে, কোনো দলই কোনো সাপোর্ট পাচ্ছে না। এই কিছুদিন আগে রাজশাহীতে গিয়ে দেখলাম সিলেট-খুলনা ম্যাচ হচ্ছে। অলক কাপালি, রাজিন সালেহ, তাপস বৈশ্যরা খেলছে; অথচ মাঠে কয়েকটা কাক ছাড়া কোনো দর্শক নেই। ওখানে যদি রাজশাহী দল খেলত, তা হলে কমপক্ষে কয়েক শ দর্শক হতো।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে তো এখন বলতে গেলে ‘রাজশাহী যুগ’-ই। এর বড় একটা কৃতিত্ব তো আপনার...
খালেদ মাসুদ: বিশ্বাস করবেন কিনা, ফাইনালে রাজশাহীর যে দলটা খেলল, এর বাইরেও আমাদের আরও ২০ জন ভালো ইয়াং প্লেয়ার আছে। সোহরাওয়ার্দী শুভর মতো প্লেয়ার ফাইনালে ড্রপড হয়েছে। নাসিরের মতো প্লেয়ার ড্রপড। সাব্বির রহমান ড্রপড। সানজামুল-সাজিদুল বাইরে বসে থাকল। অন্য বিভাগেও কিছু প্লেয়ার আছে। সব মিলিয়ে রাজশাহী বিভাগের ২০-২৫ জন ব্যাকআপ প্লেয়ার আছে। আমরা একটু নাড়াচাড়া করেছি, তাতেই এমন ফল পেয়েছি। এটা কি আমরা চট্টগ্রাম-সিলেট-ঢাকায় করতে পারি না? করলে দেখতেন জাতীয় লিগের চেহারাই বদলে যেত।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পর ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটও ছেড়ে দিলেন। ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
খালেদ মাসুদ: প্রিমিয়ার লিগে খেলব। খেলার মতো আনন্দ আর কিছুতেই পাই না। একবারে সব ছেড়ে দিলে খুব খারাপ লাগবে। তাই আস্তে আস্তে ছাড়ছি।
Source