ম্যাক্সওয়েলের মুখে সাকিব-মোস্তাফিজ
২৪ আগস্ট ২০১৭, ০১:২৪
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রথম দিনেই আমি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে গেলাম। শুরু হিসেবে যেটা মোটেও ভালো ছিল না
বাংলাদেশে গরম। এখানে আসার আগে তাই অস্ট্রেলিয়ার গ্রীষ্মপ্রধান শহর ডারউইনে ক্যাম্প করে এসেছে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু তাতেই কি আর সব হয়ে যায়! ঢাকায় এসে প্রথম দিনই হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ২৮ বছর বয়সী অলরাউন্ডার কাল নিজেই সংবাদ সম্মেলনে জানালেন তথ্যটা। এমনিতেই দীর্ঘায়িত বর্ষায় বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলতে এসে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টির কবলে পড়তে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়াকে। এই বৃষ্টির সঙ্গে কি তাহলে প্রচণ্ড গরমটাও স্টিভেন স্মিথদের মাথাব্যথার আরেকটা কারণ হয়ে যেতে পারে?
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার দলে তাঁর জায়গা নিয়ে প্রশ্ন নেই। কিন্তু উইকেটে লম্বা সময় কাটানো হয় না বলেই টেস্ট দলে কখনো নিয়মিত হতে পারেননি। পাঁচ বছরের বড় ক্যারিয়ারে টেস্ট খেলেছেন মাত্র ৫টি, যার দুটি আবার সর্বশেষ ভারত সফরে। বাংলাদেশ সিরিজে তাঁর পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর করছে আসন্ন অ্যাশেজ দলে থাকা না-থাকা। দুই টেস্টের এই সিরিজটা যাঁর জন্য এত গুরুত্বপূর্ণ ঢাকায় এসে প্রথম দিন তাঁর অভিজ্ঞতাটা কিন্তু ভালো হয়নি।
কাল মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনে ম্যাক্সওয়েল জানালেন সেই অভিজ্ঞতার কথাই, ‘প্রথম দিনেই আমি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে গেলাম। শুরু হিসেবে যেটা মোটেও ভালো ছিল না। বাইরে একটু দৌড়াদৌড়ি করেছিলাম, তারপর ভেতরে গিয়ে ফিটনেস টেস্ট সারলাম। তারপর আবার বাইরে আসতেই খারাপ লাগতে শুরু করল। শরীর একটু অবশ হয়ে গেল। তবে বরফ-স্নান ও প্রচুর তরল খাওয়ার পর ঠিক হয়ে গেছে।’
ক্যারিয়ারের প্রথম তিনটি টেস্ট খেলার পর প্রায় তিন বছর বিরতি দিয়ে সুযোগ পেয়েছিলেন ভারত সফরে। রাঁচি ও ধর্মশালায় দুটি টেস্ট খেলেছেন, রাঁচিতে পেয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিটাও। ওই পারফরম্যান্সেরই পুরস্কার বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজের দলে থাকা। ম্যাক্সওয়েল নিজেও ভারতে পাওয়া সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চান এই সিরিজে, ‘আমার মনে হয় না, ভারতে যেভাবে খেলেছি তার চেয়ে এখানে খুব বেশি বদলাতে হবে। আমার লক্ষ্য রক্ষণ সামলে খেলা, লম্বা সময় ব্যাট করা। এটাও নিশ্চিত করা যাতে আমার দল লম্বা সময় ব্যাট করতে পারে এবং রানও বড় হয়।’
২০০৬ সালে দুই দল টেস্টে মুখোমুখি হয়েছিল সর্বশেষ। এ কারণেই অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের বর্তমান দলের কারোরই একে অন্যের বিপক্ষে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা নেই। তবে সীমিত ওভারের ক্রিকেটেও বাংলাদেশের বিপক্ষে খুব বেশি খেলা হয়নি ম্যাক্সওয়েলের। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মাত্র তিনবার বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলার সুযোগ হয়েছে ম্যাক্সওয়েলের। ২০১৪ ও ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দুটি ম্যাচ খেলেছেন। সর্বশেষ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে বোলিং করলেও ব্যাটিং করা হয়নি।
এর বাইরে আইপিএলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে খেলেছেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের সাকিব ও সানরাইজার্স হায়দরাবাদের মোস্তাফিজের বিপক্ষে। এই দেখার অভিজ্ঞতা থেকেই দুজনকে যথেষ্ট সমীহও করেন ম্যাক্সওয়েল। সাকিবকে নিয়ে একটা মুগ্ধতা আছে তাঁর, ‘সাকিব অনেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। অনেক দিন ধরেই বিশ্বের এক নম্বর অলরাউন্ডার। অসাধারণ ক্রিকেটার সে।’
নিজেও অলরাউন্ডার, তবে সাকিবের সঙ্গে ঠিক নিজের তুলনা করতে রাজি নন ম্যাক্সওয়েল, ‘আমি মূলত ব্যাটসম্যান, আর সে সম্ভবত নিখাদ অলরাউন্ডার। আমার আগে চেষ্টা থাকবে রান করা, তারপর দলের প্রয়োজনে অফ স্পিন দিয়ে সাহায্য করা।’
মোস্তাফিজের বোলিংও অজানা নয় ম্যাক্সওয়েলের কাছে, ‘মোস্তাফিজুর ব্যতিক্রমী বোলার। আইপিএলে নজরকাড়া প্রথম মৌসুমে ওর বোলিং খেলেছি আমরা। তবে মনে হচ্ছে, টেস্টে বোলিং শুরু করার পর থেকে ওর পেস কিছুটা কমে গেছে। অবশ্য এখনো সে অসাধারণ বোলার, সামর্থ্য আছে সুইং করানোর, অবিশ্বাস্য স্লোয়ার দেওয়ার। প্রথাগত বাঁহাতি পেসার সে নয়। ওর কবজি বেশ নমনীয়, যে কারণে শেষ মুহূর্তে ফ্লিক করতে পারে। যে কারণে ওর বাউন্সার আর স্লোয়ার দেখতে একই মনে হয়। এটা বোঝা খুব কঠিন।’
http://www.prothom-alo.com/sports/ar...A6%BF%E0%A6%9C